সাদা পাথরের মাঝে প্রবাহমান শীতল স্বচ্ছ জলরাশি। নদীর নীচ থেকে উপরে তাকালে দুই তীরকে দেখে মনে হবে যেন পাহাড়ের মধ্যে বহমান একটি ছোট নদী। প্রকৃতির এমন নয়নাভিরাম দৃশ্যের সম্প্রতি দেখা মিলেছে গাইবান্ধা শহর থেকে দুই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত খোলাহাটি ইউনিয়নের ভেড়ামারা ব্রীজের নিচে ঘাঘট নদীতে । ভেড়ামারা রেলওয়ে ব্রীজের পাশেই গত কয়েক মাস আগে একটা পাকা সেতু নির্মাণ করা হয়। এখানে পাশাপাশি অবস্থিত দুটি সেতুকে ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষা করতে প্রকৌশলীরা এখানে ছোট- বড় আকারের পাথর নদীতে ফেলে রাখে । বর্তমানে নদীর পানি অনেকটা শুকিয়ে যাওয়ায় পাথরগুলো দৃশ্যমান হয়ে সিলেটের জাফলংয়ের মতো একটি আবহ তৈরি হয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই কয়েকশত দর্শনার্থী প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে ছুটে আসছে। সে সাথে এদিকে বৈশাখের তীব্র তাপদাহে নদীর শান্ত , শীতল জলের ছোঁয়া নিতে মিনি জাফলং খ্যাত ভেড়ামারা ব্রীজের নিচে নেমে স্নান উৎসব মেতে উঠেছে তরুণ তরুণী থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সী নারী পুরুষ।
ভেড়ামারা ব্রিজের নিচে ঘাঘট নদীর স্বচ্ছ শীতল জ্বলে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র সিলেট এর জাফলং এর সমুদ্র সৈকতের সাদা পাথর দৃশ্যমান হওয়ায় এখানে এক অপরুপ পরিবেশ গড়ে ওঠা সহ পর্যটক স্থান রুপ পেয়েছে গাইবান্ধার ভ্রমনপিপাসুদের কাছে। এই স্থান নিয়ে কৌতুহলের শেষ নাই ভ্রমনপিপাসু সহ বিভিন্ন শিশু, তরুন বয়সী সহ বিভিন্ন বয়সী মানুষের। কেউ এই স্থানটিকে নাম দিয়েছেন গরীবের জাফলং, কেউ রোমান্টিক জাফলং, কেউ বা মিনি জাফলং। এই দৃশ্যটি বের হওয়ায় আনন্দিত তরুন থেকে শুরু করে গাইবান্ধার বিভিন্ন বয়সী মানুষ। একদিকে তীব্র গরমে মানুষের হাসফাস অবস্থা। এই অবস্থা থেকে মানুষিক প্রশান্তির খোজে গোসল করা সহ জলকেলির পাশাপাশি সেলফি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে শিশু, তরুন থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সী মানুষ। অন্যদিকে গরীব এর জাফলং মানুষের নজড় কেড়ে নিয়েছে।
“গরীব এর জাফলং -এ গোসল করতে আসা সদ্য এইচএসসি পাশ শিক্ষার্থী আবু খায়ের” বলেন- আমরা সিলেটের জাফলং -এ যেতে পারছিনা। এই স্থান টি গরীবের জাফলং নামে পরিচিত। তাই আমরা বন্ধু সহ এখানে সিলেটের জাফলং এ গোসল এর মাধ্যমে আনন্দ উপভোগ করতে এসেছি। এখানে সকাল থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যার আগ মুহুর্ত পর্যন্ত গোসল ও মানুষের উপস্থিতি দেখা যায়।
এইচ এসসি পরীক্ষার্থী গাইবান্ধা খানকাহশরীফ বাসিন্দা সোহাগ জানায়- অতিষ্ঠ গরম পড়েছে। গরম থেকে বাচতে শরীরকে ঠান্ডা করতে এখানে গোসল করতে এসেছি। তাছাড়া এই দৃশ্যটা সিলেটের জাফলং এর মত। আমাদের অনেকের সিলেটে যাওয়া সম্ভব হয় না। সিলেটে যাওয়ার সাধ্য থাকলেও বাসা থেকে অভিভাবক যেতে দেয় না। একটা সুন্দর মনোরম পরিবেশ। এটা গরীবের জাফলং ও রোমান্টিক জাফলং।
“এ বিষয়ে ৯ নং খোলাহাটি ইউপি চেয়ারম্যান মাসুম হক্কানী’র সাথে মোবাইলে কথা হলে তিনি জানান- ভেড়ামারা ব্রীজ এর নিচে মিনি জাফলং সৃষ্টি হওয়ায় এটা একটি বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছে। এখানে প্রতিদিনই মানুষ মোবাইল ও ল্যাপটপ নিয়ে গোসল করতে ও ঘুরতে আসে। তাদের জানমালের নিরাপত্তার জন্য আমি আনসার সদস্য ও মেম্বারদের নির্দেশনা দিয়েছি। তারা প্রতিদিন নজড়দারি রাখে।
© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | জাগো২৪.নেট