বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কালের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে তুষভান্ডার জমিদার বাড়ী

দেশের সীমান্তবর্তী উত্তরাঞ্চলের জেলা লালমনিরহাট। এ জেলায় রয়েছে বহু ঐতিহাসিক নিদর্শন। এসব নিদর্শনের মধ্যে একটি হলো কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার জমিদার বাড়ী।সেটি আজও কালের স্বাক্ষী হয়ে নীরবে দাঁড়িয়ে রয়েছে- যা মানুষের নজর  কেড়েছে।

জানা গেছে, তুষভান্ডার জমিদার বংশের গোড়াপত্তন ঘটে ১৩২৩ খ্রিঃ। এই বংশের পূর্বপুরুষ মুরারীদেব ঘোষাল ভট্টাচার্য্য চব্বিশ পরগনা জেলার অধিবাসী। মুরারীদেব ‘রসিক রায় বিগ্রহ’ নিয়ে কোচ মহারাজা প্রাণ নারায়নের রাজত্বকালে কোচবিহারে আগমন করেন এবং মহারাণী কর্তৃক একটি ‘উপঞ্চৌকি তালুক’ প্রাপ্ত হয়ে উত্তর ঘনেশ্যাম গ্রামে বসতি স্থাপন করেন এবং রসিক রায় বিগ্রহের পুজা শুরু করেন।

 উপঞ্চৌকি হল সেই সময়ে রঙ্গপুর অঞ্চলে প্রচলিত একটি প্রথা যা’দ্বারা মহারাজাগণ হিন্দু এবং মুসলিম উভয় ধর্মীয় কার্যাদী পালনের জন্য প্রজাদেরকে একটি করে তালুক (ভূখন্ড) দান করতেন। এভাবেই মুরারীদেব এ অঞ্চলের ছোটখাতা, বামুনিয়া ও শেখ সুন্দর মৌজা লাভ করেন। প্রতিষ্ঠা লাভ করে তুষভান্ডার জমিদারী।

মুরারীদেব ব্রাহ্মণেদের কোচবিহার রাজার দান গ্রহনে আপত্তি জানিয়ে খাজনা গ্রহণের জন্য মহারাণীকে অনুরোধ জানান। মহারানীও ব্রাহ্মণদের কাছ থেকে খাজনা নেওয়ার পরিবর্তে ‘তুষ’(ধানের কুড়া) গ্রহণে সম্মতি জানান।

এই তুষ দিয়ে কোচবিহার মহারাণী রাজবাড়ীতে যজ্ঞাদি ক্রিয়া সম্পাদন করতেন। মুরারীদেব কর্তৃক কোচ রাজাকে তুষ প্রদানের জন্য এগুলো সংরক্ষণ করা হত বর্তমান জমিদার বাড়ির পূর্ব দিকে। যা পরবর্তীতে তুষের স্তুপে পরিনত হয়।

খাজনা প্রদানের জন্য সংরক্ষিত এই তুষের স্তুপ থেকেই এলাকাটির নাম তুষভান্ডার হয়েছে বলে ইতিহাস থেকে জানা যায়।

বর্তমানে এই জমিদার বাড়ী দেখার জন্য বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দর্শনার্থীরা আসে। তাই মানুষের নজর কেড়েছে ঐতিহ্যবাহী জমিদার বাড়িটি। যা কালের স্বাক্ষী হয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে।

জনপ্রিয়

কালের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে তুষভান্ডার জমিদার বাড়ী

প্রকাশের সময়: ০৮:২৩:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ জুলাই ২০২৩

দেশের সীমান্তবর্তী উত্তরাঞ্চলের জেলা লালমনিরহাট। এ জেলায় রয়েছে বহু ঐতিহাসিক নিদর্শন। এসব নিদর্শনের মধ্যে একটি হলো কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার জমিদার বাড়ী।সেটি আজও কালের স্বাক্ষী হয়ে নীরবে দাঁড়িয়ে রয়েছে- যা মানুষের নজর  কেড়েছে।

জানা গেছে, তুষভান্ডার জমিদার বংশের গোড়াপত্তন ঘটে ১৩২৩ খ্রিঃ। এই বংশের পূর্বপুরুষ মুরারীদেব ঘোষাল ভট্টাচার্য্য চব্বিশ পরগনা জেলার অধিবাসী। মুরারীদেব ‘রসিক রায় বিগ্রহ’ নিয়ে কোচ মহারাজা প্রাণ নারায়নের রাজত্বকালে কোচবিহারে আগমন করেন এবং মহারাণী কর্তৃক একটি ‘উপঞ্চৌকি তালুক’ প্রাপ্ত হয়ে উত্তর ঘনেশ্যাম গ্রামে বসতি স্থাপন করেন এবং রসিক রায় বিগ্রহের পুজা শুরু করেন।

 উপঞ্চৌকি হল সেই সময়ে রঙ্গপুর অঞ্চলে প্রচলিত একটি প্রথা যা’দ্বারা মহারাজাগণ হিন্দু এবং মুসলিম উভয় ধর্মীয় কার্যাদী পালনের জন্য প্রজাদেরকে একটি করে তালুক (ভূখন্ড) দান করতেন। এভাবেই মুরারীদেব এ অঞ্চলের ছোটখাতা, বামুনিয়া ও শেখ সুন্দর মৌজা লাভ করেন। প্রতিষ্ঠা লাভ করে তুষভান্ডার জমিদারী।

মুরারীদেব ব্রাহ্মণেদের কোচবিহার রাজার দান গ্রহনে আপত্তি জানিয়ে খাজনা গ্রহণের জন্য মহারাণীকে অনুরোধ জানান। মহারানীও ব্রাহ্মণদের কাছ থেকে খাজনা নেওয়ার পরিবর্তে ‘তুষ’(ধানের কুড়া) গ্রহণে সম্মতি জানান।

এই তুষ দিয়ে কোচবিহার মহারাণী রাজবাড়ীতে যজ্ঞাদি ক্রিয়া সম্পাদন করতেন। মুরারীদেব কর্তৃক কোচ রাজাকে তুষ প্রদানের জন্য এগুলো সংরক্ষণ করা হত বর্তমান জমিদার বাড়ির পূর্ব দিকে। যা পরবর্তীতে তুষের স্তুপে পরিনত হয়।

খাজনা প্রদানের জন্য সংরক্ষিত এই তুষের স্তুপ থেকেই এলাকাটির নাম তুষভান্ডার হয়েছে বলে ইতিহাস থেকে জানা যায়।

বর্তমানে এই জমিদার বাড়ী দেখার জন্য বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দর্শনার্থীরা আসে। তাই মানুষের নজর কেড়েছে ঐতিহ্যবাহী জমিদার বাড়িটি। যা কালের স্বাক্ষী হয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে।