দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় গ্রামের ঘরে ঘরে কাঁশফুল আর পাটের দড়ি বা রশি দিয়ে বিভিন্ন হস্তশিল্প পণ্য তৈরি করে নারীরা তাদের অবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়েছেন। বাড়িতে বসেই অবসরে বাড়তি আয় করে বিভিন্ন বয়সী অনেক নারী তাদের সংসারে এনেছেন স্বচ্ছলতা। তবে মহামারী প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের এই সময়ে অবসরে অনেক পুরুষও এই কাজ করছেন বলে তারা জানায়। প্রতিটি নারী দিনে কমপক্ষে ৩০০-৫০০ টাকা আয় করতে পারেন।
অভাব অনটনের সংসারে খরচে স্বামীকে সহযোগীতা, ছেলেমেয়েদের খরচ চালানোসহ সংসারের অভাব দুর করেছেন এই সব নারী। নারীরা সংসারের কাজের পাশাপাশি এসব কাজ করে সংসারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে এনেছেন।
খানসামা উপজেলার আলোকঝাড়ি ইউপির পূর্ব বাসুলী গ্রাম। এই পূর্ব বাসুলী গ্রামের কবিরশাহ্পাড়া, মেম্বারপাড়া, ঘোনপাড়া, মাঝিয়ালি, নাপিতপাড়ার বাড়িতে বাড়িতে এই হস্তশিল্পের বিকাশ ঘটেছে। দাম ভাল পাওয়ায় নারীরাও খুশি। ২-৩ বছর ধরে এই সব গ্রামের নারীরা দোন (ঝুঁড়ি), ঝাকা, ফুল, ডলফিনসহ বিভিন্ন হস্তশিল্প তৈরি করে। বিভিন্ন পণ্য তৈরিতে বিভিন্ন আয়। প্রতিটি নারী মাসে কমপক্ষে ১২-১৫ হাজার টাকা আয় করতে পারেন। এই গ্রামের শতাধিক পরিবারের নারী এই কাজে জড়িত রয়েছেন।
পূর্ব বাসুলী গ্রামের রুবিনা বেগম জানান, এই কাজটি এলাকার নারীদের অনেক উপকার করেছে। সংসারের স্বচ্ছলতা আনতে পেরেছেন। নীলফামারী, রংপুরসহ বিভিন্ন প্রান্ত থেকে একেকজন এজেন্ট এখানে আমাদের কাছে কাঁশফুল আর পাটের দড়ি বা রশি দিয়ে যান। পরে কাঁশফুল আর পাটের মিশ্রণে নির্দ্ধারিত হস্তশিল্পটি তৈরির পর তারা মজুরি দিয়ে নিয়ে যান। এভাবেই এলাকার বিভিন্ন পাড়ায় শতাধিক বাড়িতে চলে এই কাজ।
স্থানীয় স্কুল শিক্ষক আলমগীর হোসেন জাগো২৪.নেট-কে জানান, এলাকার অস্বচ্ছল পরিবারের নারীরা এই কাজে বেশি যুক্ত এবং তাদের অবস্থার পরিবর্তনও ঘটিয়েছে। অনেক নারী বলেন, বিদেশে গিয়ে কাজ না করে বাড়িতে বসেই সে পরিমাণ টাকা আয় করা সম্ভব। আর এই কাজে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে তাদের এই কাজের আরও প্রসার হবে, নিরাপদ হবে।
মো. রফিকুল ইসলাম, করেসপন্ডেন্ট, জাগো২৪.নেট, চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) 


















