গাইবান্ধার বুক চিরে বয়ে গেছে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘটসহ আরও বেশ কয়েকটি নদ-নদী। সম্প্রতি এসব নদ-নদীগুলোর পানি কমে যাওয়ায় নৌ ঘাটগুলো এখন বালুচরে পরিণত হয়েছে। ফলে বিস্তৃর্ণ চরাঞ্চলের মানুষরা ধুধু বালুচরে হেঁটে এবং কোমর পানি পাড়ি দিয়ে ছুটছেন গন্তব্যস্থলে। যেন দুর্ভোগের অন্ত নেই চরাঞ্চলের মানুষদের।
শনিবার (২০ ফেব্রয়ারি) সকালে সরেজমিনে গাইবান্ধার বালাশীঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বালুচরে হেঁটে ও কোমর পানিতে নেমে হাজারো মানুষের চলাচলের চিত্র। এখানের নৌঘাটের অস্তিত্ব এখন বিপন্ন। নৌ যোগাযোগ বন্ধ থাকায় মাইলের পর মাইল হেঁটে ও কোমর পানিতে নেমে নদ-নদী পারাপার হচ্ছেন মানুষেরা।
জানা যায়, উত্তর জনপদের নদীবেষ্টিত জেলা গাইবান্ধা। এ জেলা ঘেসে বয়ে গেছে ৫টি নদী। এসব নদীর বুকে জেগে উঠেছে দেড় শতাধিক ছোট-বড় চর। এসব চরে বসবাস করছে প্রায় ৪ লক্ষাধিক মানুষ। তারা বিশেষ প্রয়োজনে কিংবা নিত্যপণ্য কিনতে ছুটে চলে গাইবান্ধা জেলা শহরসহ বিভিন্ন স্থানে। বর্ষা মৌসুমে তাদের একমাত্র বাহন নৌকা। তবে নৌযানে পারাপারে অস্বস্তি নেই তাদের। কিন্তু খরা মৌসুমে বেড়ে যায় তাদের দুর্ভোগ। এসময় কাজের তাগিদে নদীর ওপারে তাদের ছুটতে হয় পায়ে হেঁটে। আবার মাঝে মাঝে নামতে হয় কোমর পানিতে।
কারণ, এসময়টা নদীর পানি কমে গিয়ে ভেসে উঠে বালুচর। এতে একই নদীতে একাধিক শাখা-প্রশাখা নদীতে উপনিত হয়। যার ফলে খাটিয়ামারী, এরেন্ডাবাড়ী, জিগাবাড়ী ও মোল্লার চরসহ অন্যান্য চরে বসবাসকারী মানুষেরা নদীর ওপারে যেতে বালুচরে হেঁটে আবার মাঝে মাঝে কোমর পানিতে নেমে পাড়ি দিচ্ছে গন্তব্যস্থলে। শুধু চরাঞ্চলের মানুষই নয়, ফুলছড়ি, বাশালী ও কামারজানি ঘাট দিয়ে জামালপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার মানুষ এ রুটে চলাচলা করে থাকে। আর নদ-নদীর নাব্যতা সংকটের কারণে ওইসব মানুষদের চলাচলে ভোগান্তি চরমে উঠেছে।
এরেন্ডাবাড়ী চরের বাসিন্দা আব্দুল ওহাব আলী জাগো২৪.নেট-কে বলেন, বর্ষা মৌসুমে আমাদের চলাচলের কোন সমস্যা হয় না। নৌকা যোগে যেতে পারি গন্তব্যস্থলে। কিন্তু শুকনো মৌসুমে নদীর পানি কমে যাওয়ায় নৌযান প্রায় বন্ধ হয়ে পড়ে। ফলে পায়ে হেঁটে চলতে হয়। এতে অনেকটা সময় ব্যয় ও ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোকলেছুর রহমান জাগো২৪.নেট-কে বলেন, নৌ যোগাযোগ সচল রাখতে নদী ড্রেজিং করা দরকার। তবে এ বিষয়ে সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে।
তোফায়েল হোসেন জাকির, জাগো২৪.নেট 



















