গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার নিভৃত পল্লী গ্রামের যুবক রাশেদ প্রধান। নিজ বাড়ির পাশের মাঠে গড়ে তুলেছেন বিশাকৃতিক নার্সারি। ‘আশা নার্সারি’ নামের এই নার্সারিতে বিভিন্ন ওষুধি, ফুল, ফলদ, বনজ চারা উৎপাদন করা হয়। আর এসব চারা বিক্রি করেই রাশেদ এখন স্বাবলম্বী হয়েছেন।
বৃক্ষপ্রেমি এই রাশেদ প্রধানের বাড়ি সাদুল্লাপুর উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের মিরপুর গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মালেক প্রধানের ছেলে। নার্সারি ব্যবসায় তার নেশা-পেশা।
জানা যায়, অতিদরিদ্র পরিবারের ছেলে রাশেদ প্রধান। বিয়েও করেছেন বটে। নানা অভাব অনটনের সংসার ছিলো তার। যেন নুন আনতে পান্থা ফুরায় অবস্থা। এক সময় অন্যের নার্সারিতে শ্রম বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। এখান থেকে নার্সারি ব্যবসার অভিজ্ঞতা। এরই একপর্যায়ে ৫ বছর আগে নিজের মাত্র ২০ শতক জমিতে নানা জাতের চারা উৎপাদন শুরু করে। এসব চারা বিক্রি করে অনেকটা লাভের মুখ দেখেন তিনি। এই লাভের টাকা দিয়ে পরিবারের চাহিদা পুরণসহ ধীরে ধীরে বাড়াতে থাকে নার্সারির পরিধি। বর্তমানে অন্যের জমি বন্ধক নিয়ে প্রায় ৫ বিঘা জমিতে গড়ের তুলেছেন নার্সারি।

রাশেদ প্রধানের নার্সারিতে রয়েছে, গোলাপ, চন্দ্রমল্লিকা, রজনীগন্ধা, কমলা, মাল্টা, সবেদা, আঙ্গুর, ক্যাপটাস, আম, জাম, লেবু, ড্রাগন, তুলসী, এলোভেরা, পানকুশি প্রভৃতি। এখান থেকে উৎপাদন করা হচ্ছে লক্ষাধিক চারা। প্রতিমাসে প্রায় ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা মূল্যে চারা বিক্রি করা হয়ে থাকে। বীজ-সার-শ্রমিক ইত্যাদি খরচ বাদে প্রায় ২৫ থেকে ৩৫ হাজার টাকা লাভ করেন রাশেদ প্রধান। অল্প পূঁজিতে বন্ধক নেওয়া এই জমিতে নার্সারি ব্যবসায় সফল হয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি সফল নার্সারী ব্যবসায়ী হিসেবে নিজের পরিচিতি বাড়িয়েছেন। এরই পাশাপাশি স্থানীয় বেশ কিছু যুবকের কর্মসংস্থানও হয়েছে এ নার্সারিতে। রাশেদ প্রধান নতুন নতুন জাতের চারা উৎপাদন করে এলাকায় বেশ সুনাম অর্জন করেছে। একজন প্রতিষ্ঠিত নার্সারী মালিক হয়েও এখনো তিনি নিজ হাতে চারার পরিচর্যা করেন। যেন প্রতি গাছের সাথে তার সু-সর্ম্পক গড়ে উঠেছে।
আশা নার্সারি এর কর্মচারি হাসেন আলী জানান, নার্সারিটি পরিচার্যাসহ চারা বাজারজাত করণে দায়িত্ব পালন করা হচ্ছে। কমিশন ভিত্তিক এ কাজটি করে আয়-উপার্জন করা হচ্ছে।
নার্সারির মালিক রাশেদ প্রধান বলেন, স্ত্রী শ্যামলী বেগমের সহযোগিতায় এ ব্যবসা করা হচ্ছে। মানুষ বিভিন্ন এলাকা থেকে চারা কিনতে আসেন নার্সারিতে। এছাড়া ভ্যানে করে হাট-বাজারে বিক্রি করে বেশ লাভবান হচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, কৃষি বিভাগের লোকজন কোনদিন নার্সারিটির খোঁজ রাখেনি। তারা যদি পরামর্শ দিতেন, তাহলে আরও অধিক লাভ করা যেতো।
সাদুল্লাপুর উপজেলা কৃষি অফিসার খাজানুর রহমান জানান, নার্সারি ব্যবসা অত্যান্ত লাভজনক। কেউ পরিকল্পনা মাফিক নার্সারি করলে অনায়াসে তিনি স্বাবলম্বী হবেন। রাশেদ প্রধানকে আরও লাভবান করতে সগযোগিতা করা হবে।
তোফায়েল হোসেন জাকির, জাগো২৪.নেট 



















