তোফায়েল হোসেন জাকির : গাইবান্ধার অধিকাংশ মানুষ কৃষি ফসলে নির্ভশীল। বিশেষ করে বোরো আবাদে হাসি ফুটে তাদের মনে। কিন্তু সেই মনে নেই তৃপ্তি। নতুন ধান ঘরে তোলা পুর্ব মুহূর্তেই নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি । একদিকে বৃষ্টি-বাদলে পানিতে নুয়ে পড়ছে পাকা ধান। অন্যদিকে শ্রমিক সকটসহ পাচ্ছে না ন্যায্য দাম। সবমিলে মলিন হতে চলেছে কৃষকের মুখ।
শুক্রবার (১৩ মে) গাইবান্ধার বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে কৃষকের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ। এদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অবিরাম বর্ষণে পানির ওপর নুয়ে পড়া ধানের দৃশ্যে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষক। এসব ধান কেটে ঘরে তুলবেন সেখানেও মিলছে না শ্রমিক।
জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে গাইবান্ধার সাতটি উপজেলায় ১ লাখ ২৭ হাজার, ৭৮০ হেক্টর জমিতে ধান আবাদ করা হয়েছে। সম্প্রতি শুরু হয়েছে এই ধান কাটা-মাড়াই। রোপনের শুরু থেকে আবহাওয়া অনুকুল থাকায় ভালো ফলন হয়েছে। এর মধ্যে আবহাওয়ার বিরূপ আচারণে ক্ষেতে থাকা পাকা ধান নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে কৃষকরা। শুক্রবার সকাল থেকে অবিরাম বৃষ্টিতে সহস্রাধিক হেক্টর পাকা ধান হেলে পড়েছে পানির ওপরে। জলাবদ্ধ এইসব জমির ধান কেটে দ্রুত ঘরে তুলতে হিমসিম খাচ্ছে কৃষকরা। তাদের চাহিতা মতে পাচ্ছে না শ্রমিক। পেলেও আবার গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত মজুরি। প্রত্যেককে দিতে হচ্ছে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা। এই পারিশ্রমিকের টাকা যোগাতে অনেকে ক্ষেতে থাকা ধানের অগ্রিম টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে করে তারা পাচ্ছে না ন্যায্য দাম। বিদ্যামান পরিস্থিতিতে ক্ষতির আশঙ্কায় নির্ঘুম রাত কাটছে কৃষিপ্রাণ মানুষেরা।
কৃষক আনোয়ারুল ইসলাম জানান, চলতি বোরো মৌসুমে এক হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ করেছেন। ফলনও হয়েছে বাম্পার। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগে পানির ওপর হেলে পড়েছে পাকা ধান। এসব ধান কেটে আনার শ্রমিকও পাচ্ছেন না তিনি।
আরেক কৃষক রফিকুল ইসলাম মন্টু বলেন, শ্রমিক দিয়ে ধান কাটা-মাড়াইয়ে অতিরিক্ত মজুরি দিতে হয়। প্রত্যেকটি এলাকায় কম্বাইন হারভেস্টর মেশিন ব্যবহার থাকলে কম খরচে এবং অল্প সময়ের মধ্যে ধান ঘরে তোলা সম্ভব।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ রেজা-ই মাহমুদ জাগো২৪.নেট-কে বলেন, কৃষকদের ভালো ফলন ও লাভবান করতে প্রণোদনা দেওয়াসহ মাঠপর্যায়ে সর্বাত্নকভাবে সহযোগিতা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে জলাবদ্ধ জমি থেকে পানি বের করে দেওয়ার পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।
গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক বেলাল উদ্দিন জাগো২৪.নেট-কে জানান, চলতি বোরো মৌসুমে গাইবান্ধায় ৭ লাখ ৭ হাজার ১৭৬ মেট্রিকটন ধান উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ থেকে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৪৫১ মেট্রিকটন চাল উৎপাদন ধরা হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে পারলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হতে পারে।

তোফায়েল হোসেন জাকির, জাগো২৪.নেট: 

















