সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাপ-ই তাদের জীবিকা

হাসি, শেফালী ও মেরিনা। এছাড়া আরও অনেকে। সবার শরীরে জড়িয়ে রয়েছে সাপ। হাট-বাজার ও শহরে এই সাপ নিয়ে তাদের চলছে নানা কসরত। এমন কসরত দেখিয়ে মানুষের কাছ থেকে উপার্জন করছে নগদ টাকা ও ধান-চাল। এ দিয়ে জীবন-জীবিকা তাদের।

রোববার ( ২২ মে) দুপুরে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলা শহরে দেখা মেলে বেদে সম্প্রদায়ের ওইসব নারীদের। তারা সুদূর যশোর থেকে ছুটে এসেছেন এখানে। এ শহরের বিভিন্ন স্থানে দাঁড়িয়ে নিজের শরীরের উপর সাপের খেলা দেখাচ্ছিলেন। এসময় উৎসুক জনতা খেলা দেখে ৫-১০ টাকা করে দিচ্ছিলেন সর্পরাজ এই নারীদেরকে।

জানা যায়, যশোরের বারোবাজার এলাকার বেদে সম্প্রদায়ের প্রায় ৫০ টি পরিবার এসেছে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার মাদারগঞ্জে। এখানে অস্থায়ী খুপরি ঘর স্থাপন করা হয়েছে। এসব ঘরে বসবাস তাদের। এই পরিবারের স্বামী-স্ত্রী-সন্তানেরা সকাল হলে বেরিয়ে পড়ে প্রত্যান্ত অঞ্চলে। পেশা হিসেবে সবার কাধে রয়েছে তাবিজ ও সাপ। এ নিয়ে ছুটে চলা হাট-বাজার-শহরসহ গ্রামান্তরে। এসব জায়গা দেখানো হয় সাপের খেলা। এরই মধ্যে বিক্রি করছে তাবিজ। অনেকে প্রয়োজনে ওইসব তাবিজ কিনে নিচ্ছে। কেউবা সাপ খেলা দেখে টাকা দিচ্ছে। এভাবে বেদেরা আয়-রোজগার করে চলেছে। তা দিয়ে চলেছে তাদের জীবনযাপন। একটু সুখের জন্য সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে। যাযাবরের মতো ঘুরে বেড়ায় এখানে-ওখানে। যেন জীবনের সাথে যুদ্ধ করে প্রতিটা দিন কাটায় তারা।

হাসি বেগম নামের এক বেদে জাগো২৪.নেট-কে জানান, স্থায়ী ঠিকানা যশোর জেলায় হলেও নেই তাদের ঘরবাড়ি। জীবিকার তাগিদে ভ্রাম্যমানভাবে ঘুরতে হয় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। মুল পেশা তার সাপ খেলা দেখানো। এই খেলা দেখে মানুষ খুশি করে যেটুকু দেয় তা দিয়ে চলে সংসার।

শেফালী বেগম নামের আরেক বেদে বলেন, সাপ খেলায় আমার জীবন। এ থেকে প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা আয় হয়। এই উপার্জনের টাকায় কোনমেত জীবিকা নির্বাহ করা হয়ে থাকে।

খোরশেদ আলম নামের স্থানীয় এক শিক্ষক জাগো২৪.নেট-কে জানান, বেদেদের জীবন-জীবিকা কত যে নির্মম তা চোখের সামনে ভেসে ওঠে। তাদের দুঃখ-কষ্টের সীমা নেই। এদের জন্য সামাজিক মর্যাদা বাড়ানো দরকার।

জনপ্রিয়

সাপ-ই তাদের জীবিকা

প্রকাশের সময়: ০১:৩৩:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ মে ২০২২

হাসি, শেফালী ও মেরিনা। এছাড়া আরও অনেকে। সবার শরীরে জড়িয়ে রয়েছে সাপ। হাট-বাজার ও শহরে এই সাপ নিয়ে তাদের চলছে নানা কসরত। এমন কসরত দেখিয়ে মানুষের কাছ থেকে উপার্জন করছে নগদ টাকা ও ধান-চাল। এ দিয়ে জীবন-জীবিকা তাদের।

রোববার ( ২২ মে) দুপুরে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলা শহরে দেখা মেলে বেদে সম্প্রদায়ের ওইসব নারীদের। তারা সুদূর যশোর থেকে ছুটে এসেছেন এখানে। এ শহরের বিভিন্ন স্থানে দাঁড়িয়ে নিজের শরীরের উপর সাপের খেলা দেখাচ্ছিলেন। এসময় উৎসুক জনতা খেলা দেখে ৫-১০ টাকা করে দিচ্ছিলেন সর্পরাজ এই নারীদেরকে।

জানা যায়, যশোরের বারোবাজার এলাকার বেদে সম্প্রদায়ের প্রায় ৫০ টি পরিবার এসেছে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার মাদারগঞ্জে। এখানে অস্থায়ী খুপরি ঘর স্থাপন করা হয়েছে। এসব ঘরে বসবাস তাদের। এই পরিবারের স্বামী-স্ত্রী-সন্তানেরা সকাল হলে বেরিয়ে পড়ে প্রত্যান্ত অঞ্চলে। পেশা হিসেবে সবার কাধে রয়েছে তাবিজ ও সাপ। এ নিয়ে ছুটে চলা হাট-বাজার-শহরসহ গ্রামান্তরে। এসব জায়গা দেখানো হয় সাপের খেলা। এরই মধ্যে বিক্রি করছে তাবিজ। অনেকে প্রয়োজনে ওইসব তাবিজ কিনে নিচ্ছে। কেউবা সাপ খেলা দেখে টাকা দিচ্ছে। এভাবে বেদেরা আয়-রোজগার করে চলেছে। তা দিয়ে চলেছে তাদের জীবনযাপন। একটু সুখের জন্য সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে। যাযাবরের মতো ঘুরে বেড়ায় এখানে-ওখানে। যেন জীবনের সাথে যুদ্ধ করে প্রতিটা দিন কাটায় তারা।

হাসি বেগম নামের এক বেদে জাগো২৪.নেট-কে জানান, স্থায়ী ঠিকানা যশোর জেলায় হলেও নেই তাদের ঘরবাড়ি। জীবিকার তাগিদে ভ্রাম্যমানভাবে ঘুরতে হয় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। মুল পেশা তার সাপ খেলা দেখানো। এই খেলা দেখে মানুষ খুশি করে যেটুকু দেয় তা দিয়ে চলে সংসার।

শেফালী বেগম নামের আরেক বেদে বলেন, সাপ খেলায় আমার জীবন। এ থেকে প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা আয় হয়। এই উপার্জনের টাকায় কোনমেত জীবিকা নির্বাহ করা হয়ে থাকে।

খোরশেদ আলম নামের স্থানীয় এক শিক্ষক জাগো২৪.নেট-কে জানান, বেদেদের জীবন-জীবিকা কত যে নির্মম তা চোখের সামনে ভেসে ওঠে। তাদের দুঃখ-কষ্টের সীমা নেই। এদের জন্য সামাজিক মর্যাদা বাড়ানো দরকার।