বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মাথা গোঁজার ঠাঁই চায় বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার

তোফায়েল হোসেন জাকির: বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল জব্বার মিয়া। ২৯ বছরে আগে মারা গেছেন। এরপর তার স্ত্রী জোবেদা বেগম সন্তানদের নিয়ে বাস করছেন ভাঙা টিনের ঘরে। ঝুঁকিপূর্ণ এই ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করছে পরিবারটি। দেশ স্বাধীনের ৫২ বছরেও মেলেনি এই বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারে সরকারি ঘর।

গাইবান্ধা সদর উপজেলা রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের ভগবানপুর গ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আবদুল জব্বার মিয়ার বাড়ি।

জানা যায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল জব্বার মিয়া ১৯৯৪ সালে মারা যাওয়ার পর ছেলে শাহজাহান  মিয়ার উপার্জিত অর্থ এবং সরকারি মাসিক ভাতা হিসাবে পাওয়া টাকা দিয়ে অতিকষ্টে ৬ সদস্যের সংসার চলছে।

বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী মোছা. জোবেদা বেগম  জানান, তার এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে।  তার ছেলে  শাহজাহান কখনও  রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন আবার কখনো ঢাকায় রিকশা চালান। দুই মেয়ের বিয়ে হয়েছে। বড় মেয়ে নাজমা আক্তারের স্বামী খায়রুল ইসলাম  ভ্যান  চালায়। ছোট মেয়ে নাছিমা আক্তারের স্বামী লিটন মিয়া কাঠ মিস্ত্রি কাজ করেন। দুজনেরেই অভাবের সংসার। তাই তাদেরও দেখতে হয় এই  অভাবের সংসার থেকে ।

তিনি আরও বলেন, আমার স্বামী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত ঘর পাওয়ার জন্য ২০২০ সালে একটি আবেদন করেছিলাম। ৩ বছর অতিবাহিত হলেও এখনো ঘর পাইনি। এই বাড়িতেই জোড়াতালি দেয়া ভাঙা টিনের জরাজীর্ণ একটি ঘরে অতিকষ্টে দিন পার করছি। ঝড়বৃষ্টি আসলেই শুরু হয় আতঙ্ক। আর বৃষ্টি আসলেই সব জায়গায় পানি পড়ে। তাই বৃষ্টি-বাদলের সময় পাশের বাড়িতে আশ্রয় নিতে হয়। একজন অসহায় বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সদস্য হিসেবে একটি ঘর পেতে প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করছি।

রামচন্দ্রপুর  ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি  জাহিদুল ইসলাম সরদার বলেন, এই অস্বচ্ছল-গরীব মুক্তিযোদ্ধা  পরিবারের সরকারি ঘর বরাদ্দ থাকলে আমি  এই পরিবারের জন্য  উর্ধতন কতৃপক্ষের জোর দাবি জানাই যাতে করে মাথা গোঁজার ঠাঁই পায় ।

রামচন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ৪নং ওয়ার্ড সদস্য সাথী বলেন, তাদের ঘরের অবস্থা বেহাল। শুধুমাত্র বাড়ি-ভিটা আছে, জমি-জমা নাই । তাদেরকে সরকারের পক্ষ থেকে একটি ঘর নির্মাণ করে দিলে পরিবারটির বাসস্থানের কষ্ট লাঘব হতো।

সদর মুক্তিযোদ্ধা প্রতিনিধি আলী আকবর বলেন, পরবর্তী ঘরের বরাদ্দ আসলে তাদের জন্য  সুপারিশ করবো।

গাইবান্ধা সদর উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা নাসির উদ্দীন সাহ্ বলেন, পরবর্তী সময়ে  ঘর বরাদ্দ আসলে তা গুরুত্ব দিয়ে দেখা  হবে।

গাইবান্ধা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শরীফুল আলম বলেন, জোবেদা খাতুন ঘর পাওয়ার কথা  থাকলেও পায়নি। এবার  আবেদন করুক। দেখা হবে  ওই পরিবারটির জন্য।

 

জনপ্রিয়

মাথা গোঁজার ঠাঁই চায় বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার

প্রকাশের সময়: ০২:৪৯:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ মার্চ ২০২৩

তোফায়েল হোসেন জাকির: বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল জব্বার মিয়া। ২৯ বছরে আগে মারা গেছেন। এরপর তার স্ত্রী জোবেদা বেগম সন্তানদের নিয়ে বাস করছেন ভাঙা টিনের ঘরে। ঝুঁকিপূর্ণ এই ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করছে পরিবারটি। দেশ স্বাধীনের ৫২ বছরেও মেলেনি এই বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারে সরকারি ঘর।

গাইবান্ধা সদর উপজেলা রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের ভগবানপুর গ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আবদুল জব্বার মিয়ার বাড়ি।

জানা যায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল জব্বার মিয়া ১৯৯৪ সালে মারা যাওয়ার পর ছেলে শাহজাহান  মিয়ার উপার্জিত অর্থ এবং সরকারি মাসিক ভাতা হিসাবে পাওয়া টাকা দিয়ে অতিকষ্টে ৬ সদস্যের সংসার চলছে।

বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী মোছা. জোবেদা বেগম  জানান, তার এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে।  তার ছেলে  শাহজাহান কখনও  রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন আবার কখনো ঢাকায় রিকশা চালান। দুই মেয়ের বিয়ে হয়েছে। বড় মেয়ে নাজমা আক্তারের স্বামী খায়রুল ইসলাম  ভ্যান  চালায়। ছোট মেয়ে নাছিমা আক্তারের স্বামী লিটন মিয়া কাঠ মিস্ত্রি কাজ করেন। দুজনেরেই অভাবের সংসার। তাই তাদেরও দেখতে হয় এই  অভাবের সংসার থেকে ।

তিনি আরও বলেন, আমার স্বামী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত ঘর পাওয়ার জন্য ২০২০ সালে একটি আবেদন করেছিলাম। ৩ বছর অতিবাহিত হলেও এখনো ঘর পাইনি। এই বাড়িতেই জোড়াতালি দেয়া ভাঙা টিনের জরাজীর্ণ একটি ঘরে অতিকষ্টে দিন পার করছি। ঝড়বৃষ্টি আসলেই শুরু হয় আতঙ্ক। আর বৃষ্টি আসলেই সব জায়গায় পানি পড়ে। তাই বৃষ্টি-বাদলের সময় পাশের বাড়িতে আশ্রয় নিতে হয়। একজন অসহায় বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সদস্য হিসেবে একটি ঘর পেতে প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করছি।

রামচন্দ্রপুর  ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি  জাহিদুল ইসলাম সরদার বলেন, এই অস্বচ্ছল-গরীব মুক্তিযোদ্ধা  পরিবারের সরকারি ঘর বরাদ্দ থাকলে আমি  এই পরিবারের জন্য  উর্ধতন কতৃপক্ষের জোর দাবি জানাই যাতে করে মাথা গোঁজার ঠাঁই পায় ।

রামচন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ৪নং ওয়ার্ড সদস্য সাথী বলেন, তাদের ঘরের অবস্থা বেহাল। শুধুমাত্র বাড়ি-ভিটা আছে, জমি-জমা নাই । তাদেরকে সরকারের পক্ষ থেকে একটি ঘর নির্মাণ করে দিলে পরিবারটির বাসস্থানের কষ্ট লাঘব হতো।

সদর মুক্তিযোদ্ধা প্রতিনিধি আলী আকবর বলেন, পরবর্তী ঘরের বরাদ্দ আসলে তাদের জন্য  সুপারিশ করবো।

গাইবান্ধা সদর উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা নাসির উদ্দীন সাহ্ বলেন, পরবর্তী সময়ে  ঘর বরাদ্দ আসলে তা গুরুত্ব দিয়ে দেখা  হবে।

গাইবান্ধা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শরীফুল আলম বলেন, জোবেদা খাতুন ঘর পাওয়ার কথা  থাকলেও পায়নি। এবার  আবেদন করুক। দেখা হবে  ওই পরিবারটির জন্য।