রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাদুল্লাপুরে মাদকের থাবা, উৎকণ্ঠায় অভিভাবক

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মাদক কেনা-বেচা ও সেবনের আনাগোনা লক্ষ্য করা গেছে। গাঁজা-ইয়াবা, ফেনসিডিল ও দেশি-বিদেশি মদসহ আরও নানা ধরণের মাদকের দৌরাত্ম্য দিনদিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এই মাদকে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন বয়সের মানুষ আসক্ত হয়ে অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ছে। এর ফলে সন্তানদের নিয়ে অভিভাবকরা চরম উৎকণ্ঠায় ভুগছেন।

সাদুল্লাপুর থানা সুত্রে জানা যায়, গত আগস্ট মাসে ১৯ কেজি গাঁজা, ২৪৪ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও নেশাজাত ইনজেকশন ১ হাজার ৪০০ পিস (এ্যাম্পল) জব্দ করেছে। এতে মাদক মামলা হয়েছে ১০টি। এ সংক্রান্ত বেশ কয়েকজন আটক হয়।

সম্প্রতি তথ্যানুসন্ধানে দেখা গেছে- উপজেলার নলডাঙ্গার কাচারী বাজার, রেলস্টেশন, কালীবাড়ী রোড, কলেজপাড়া, ঢুলিপাড়ায় অবাধে মাদক কেনা-বেচা ও সেবন চলছে। এছাড়া কামারপাড়ার জহুর বাবুর বাড়ির আশপাশ, মিরপুর, ধাপেরহাট, আমবাগান, রসুলপুর, জুনিদপুর (পাকার মাথা), মহিষবান্দী, কান্তনগর, ইদিলপুর, জানিপুর, ঢোলভাঙ্গা, গাছুর বাজারসহ খোদ উপজেলার হাট-বাজার এলাকার বিভিন্ন স্পটে এখন মাদকের স্বর্গ রাজ্যে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে মিরপুর, ধাপেরহাট ও নলডাঙ্গায় ছেয়ে গেছে মাদক। মাদকসেবী ও বখাটে যুব সমাজরা তাদের ভাষায় মদ্দের মোড়, ব্যাসেলর পয়েন্টসহ বিভিন্ন সংকেত নাম ব্যবহার করে মাদক কারবারি ও সেবন করে আসছে। ফলে দিনের বেলায় চেনা মানুষগুলো রাতের আধারে মাদক স্বর্গ রাজ্য অচেনা হয়ে যাচ্ছে। মাঝে মধ্যে পুলিশের অভিযান থাকায় মাদক বিক্রেতারা এখন কৌশল পাল্টিয়ে গ্রাম-গঞ্জে,পাড়া-মহল্লা আর শহরের অলিতে গলিতে ফেরি করে মাদক বিক্রি করছে। তাই মাদকের অপর নাম মৃত্যুতে পরিণত হয়ে গেছে।

বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এলাকা চুরি-ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভয়াবহ এ মরণ নেশার কারণে তরুণ ও যুব সমাজ বিপথগামী হয়ে পড়ছে। শুধু তরুণেরা নয়, এখন কিশোররাও মাদকাসক্ত হচ্ছে। মাদকের বিষাক্ত ছোবলে অকালে প্রাণ ঝরে পড়ার আশঙ্কা করছে সচেতন মানুষ। আর অভিভাবকরা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠিত কখন যেনো ওই নেশার জালে আটকা পড়ে তাদের প্রিয় সন্তান।

স্থানীয় সচেতন ব্যক্তিরা বলেন, বিভিন্ন সভা-সমাবেশে মাদকের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখলেও তা বাস্তবে কোন কাজে আসছে না। এখন কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তিসহ হাইস্কুল থেকে শুরু করে কলেজ শিক্ষার্থীরাও মাদকের নেশায় টইটুম্বুর। অনেক অভিভাবক তাদের মেধাবী ছেলেদের নেশাগ্রস্থ হওয়ার কথা জানেন না। তবে এই মাদক ঠেকাতে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, থানা পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অভিযান পরিচালনা করছে বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব আলম রানা বলেন, পুলিশ সুপার মহোদয়ের সার্বিক নির্দেশনায় মাদক বিরোধী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এলাকার আইনশৃঙ্খলার সার্বিক পরিস্থিতি ভালো।

জনপ্রিয়

সাদুল্লাপুরে মাদকের থাবা, উৎকণ্ঠায় অভিভাবক

প্রকাশের সময়: ০৬:৪৮:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মাদক কেনা-বেচা ও সেবনের আনাগোনা লক্ষ্য করা গেছে। গাঁজা-ইয়াবা, ফেনসিডিল ও দেশি-বিদেশি মদসহ আরও নানা ধরণের মাদকের দৌরাত্ম্য দিনদিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এই মাদকে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন বয়সের মানুষ আসক্ত হয়ে অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ছে। এর ফলে সন্তানদের নিয়ে অভিভাবকরা চরম উৎকণ্ঠায় ভুগছেন।

সাদুল্লাপুর থানা সুত্রে জানা যায়, গত আগস্ট মাসে ১৯ কেজি গাঁজা, ২৪৪ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও নেশাজাত ইনজেকশন ১ হাজার ৪০০ পিস (এ্যাম্পল) জব্দ করেছে। এতে মাদক মামলা হয়েছে ১০টি। এ সংক্রান্ত বেশ কয়েকজন আটক হয়।

সম্প্রতি তথ্যানুসন্ধানে দেখা গেছে- উপজেলার নলডাঙ্গার কাচারী বাজার, রেলস্টেশন, কালীবাড়ী রোড, কলেজপাড়া, ঢুলিপাড়ায় অবাধে মাদক কেনা-বেচা ও সেবন চলছে। এছাড়া কামারপাড়ার জহুর বাবুর বাড়ির আশপাশ, মিরপুর, ধাপেরহাট, আমবাগান, রসুলপুর, জুনিদপুর (পাকার মাথা), মহিষবান্দী, কান্তনগর, ইদিলপুর, জানিপুর, ঢোলভাঙ্গা, গাছুর বাজারসহ খোদ উপজেলার হাট-বাজার এলাকার বিভিন্ন স্পটে এখন মাদকের স্বর্গ রাজ্যে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে মিরপুর, ধাপেরহাট ও নলডাঙ্গায় ছেয়ে গেছে মাদক। মাদকসেবী ও বখাটে যুব সমাজরা তাদের ভাষায় মদ্দের মোড়, ব্যাসেলর পয়েন্টসহ বিভিন্ন সংকেত নাম ব্যবহার করে মাদক কারবারি ও সেবন করে আসছে। ফলে দিনের বেলায় চেনা মানুষগুলো রাতের আধারে মাদক স্বর্গ রাজ্য অচেনা হয়ে যাচ্ছে। মাঝে মধ্যে পুলিশের অভিযান থাকায় মাদক বিক্রেতারা এখন কৌশল পাল্টিয়ে গ্রাম-গঞ্জে,পাড়া-মহল্লা আর শহরের অলিতে গলিতে ফেরি করে মাদক বিক্রি করছে। তাই মাদকের অপর নাম মৃত্যুতে পরিণত হয়ে গেছে।

বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এলাকা চুরি-ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভয়াবহ এ মরণ নেশার কারণে তরুণ ও যুব সমাজ বিপথগামী হয়ে পড়ছে। শুধু তরুণেরা নয়, এখন কিশোররাও মাদকাসক্ত হচ্ছে। মাদকের বিষাক্ত ছোবলে অকালে প্রাণ ঝরে পড়ার আশঙ্কা করছে সচেতন মানুষ। আর অভিভাবকরা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠিত কখন যেনো ওই নেশার জালে আটকা পড়ে তাদের প্রিয় সন্তান।

স্থানীয় সচেতন ব্যক্তিরা বলেন, বিভিন্ন সভা-সমাবেশে মাদকের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখলেও তা বাস্তবে কোন কাজে আসছে না। এখন কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তিসহ হাইস্কুল থেকে শুরু করে কলেজ শিক্ষার্থীরাও মাদকের নেশায় টইটুম্বুর। অনেক অভিভাবক তাদের মেধাবী ছেলেদের নেশাগ্রস্থ হওয়ার কথা জানেন না। তবে এই মাদক ঠেকাতে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, থানা পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অভিযান পরিচালনা করছে বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব আলম রানা বলেন, পুলিশ সুপার মহোদয়ের সার্বিক নির্দেশনায় মাদক বিরোধী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এলাকার আইনশৃঙ্খলার সার্বিক পরিস্থিতি ভালো।