বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাদুল্লাপুরে কৃষি জমির টপ সয়েল গিলে খাচ্ছে মাটি কারবারিরা

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের বহুল আলোচিত অবৈধ মাটি ব্যবসায়ী ইছা প্রধান ও ছালেক মিয়া বিভিন্ন স্থানে এস্কাভেটর (ভেকু) মেশিন বসিয়ে নির্বিকারে তুলছে কৃষি জমির মাটি। এসব টপ সয়েল ট্রাক্টর ও ড্রাম ট্রাক দিয়ে বহন করে অন্যত্র বিক্রি করছে। কতিপয় ব্যক্তিদের সঙ্গে গোপন চুক্তিতে অবৈধ এই ব্যবসায় হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। আর ফসল উৎপাদন শক্তি হারাচ্ছে কৃষকদের।

সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বনগ্রাম ইউনিয়নের শেরপুর গ্রামের বিশাল একটি কৃষি মাঠে (পাতার) ভেকু মেশিন স্থাপন করে কৃষি জমির টপ সয়েল কাটার মহোৎসব মেতে ওঠেছে ইছা প্রধান ও ছালেক মিয়া। বানিজ্যিকভাবে ট্রাক্টর (কাঁকড়া) ও ড্রাম ট্রাক দিয়ে মাটি সরবরাহ করায় যেমন ক্ষতি হচ্ছে কৃষকের, তেমনি নষ্ট হচ্ছে কাঁচা-পাকা রাস্তা ও ধুলাবালিতে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, ওই ইউনিয়নের বদলাগাড়ী গ্রামের বুদা প্রধানের ছেলে ইছা প্রধান ও একই গ্রামের কছির সরকারের ছেলে ছালেক মিয়া দীঘদিন ধরে কৃষি জমি থেকে মাটি তুলে অন্যত্র বিক্রি করছে। প্রশাসনের তদারকির অভাবে দিন-রাত সমান তালে চলছে কৃষি জমির টপ সয়েল কাটার মহোৎসব। এ সংক্রান্ত আইনি বিধিনিষেধ থাকলেও কেউই তা মানছে না। ফলে প্রতিদিন একরের পর একর কৃষি জমির টপ সয়েল চলে যাচ্ছে অন্যত্র। এতে করে যেমন জমি উর্বরাশক্তি হারাচ্ছে তেমনি ফসল উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে। জমির ১ থেকে ২ ফুট গভীর করে ফসলি জমির মাটি কাটা হচ্ছে। যেখানে মাটির উপরিভাগের ৮ থেকে ১০ ইঞ্চি অংশকে টপ সয়েল বলা হয়। এই অংশে মাটির মূল উর্বরাশক্তি থাকে। আর সেই শক্তি তুলে নিয়ে বানিজ্য করছে ওইসব মাটি ব্যবসায়ীরা। শুধু ইছা প্রধান ও ছালেক মিয়াই না, আরও অনেক অসাধু ব্যক্তি এই মাটির ব্যবসায় ফুসে ওঠেছেন। তারা এমন কাণ্ডে লিপ্ত থাকলেও প্রশাসন নিরবতা পালন করছে বলে ভূক্তভোগিরা জানিয়েছে।

বনগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ফজলুল কাইয়ুম হুদা জাগো২৪.নেট-কে জানান, ওইস্থানে বানিজ্যিকভাবে মাটি কাটার বিষয়টি লোকমুখে শুনেছি। ব্যাপারটি দেখা হবে।

সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম আজমিরুজ্জামান বলেন, শেরপুরে মাটি তোলার বিষয়টি জানা নেই। খতিয়ে দেখে এসিল্যান্ড স্যারের মাধ্যমে মোবাইল কোর্ট করার চেষ্টা করা হবে।

সাদুল্লাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসাদুজ্জামান জাগো২৪.নেট-কে জানান, ফসলি কৃষি মাঠ থেকে বালু তোলা দণ্ডনীয় অপরাধ। ঘটনার সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জনপ্রিয়

সাদুল্লাপুরে কৃষি জমির টপ সয়েল গিলে খাচ্ছে মাটি কারবারিরা

প্রকাশের সময়: ০৩:০১:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের বহুল আলোচিত অবৈধ মাটি ব্যবসায়ী ইছা প্রধান ও ছালেক মিয়া বিভিন্ন স্থানে এস্কাভেটর (ভেকু) মেশিন বসিয়ে নির্বিকারে তুলছে কৃষি জমির মাটি। এসব টপ সয়েল ট্রাক্টর ও ড্রাম ট্রাক দিয়ে বহন করে অন্যত্র বিক্রি করছে। কতিপয় ব্যক্তিদের সঙ্গে গোপন চুক্তিতে অবৈধ এই ব্যবসায় হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। আর ফসল উৎপাদন শক্তি হারাচ্ছে কৃষকদের।

সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বনগ্রাম ইউনিয়নের শেরপুর গ্রামের বিশাল একটি কৃষি মাঠে (পাতার) ভেকু মেশিন স্থাপন করে কৃষি জমির টপ সয়েল কাটার মহোৎসব মেতে ওঠেছে ইছা প্রধান ও ছালেক মিয়া। বানিজ্যিকভাবে ট্রাক্টর (কাঁকড়া) ও ড্রাম ট্রাক দিয়ে মাটি সরবরাহ করায় যেমন ক্ষতি হচ্ছে কৃষকের, তেমনি নষ্ট হচ্ছে কাঁচা-পাকা রাস্তা ও ধুলাবালিতে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, ওই ইউনিয়নের বদলাগাড়ী গ্রামের বুদা প্রধানের ছেলে ইছা প্রধান ও একই গ্রামের কছির সরকারের ছেলে ছালেক মিয়া দীঘদিন ধরে কৃষি জমি থেকে মাটি তুলে অন্যত্র বিক্রি করছে। প্রশাসনের তদারকির অভাবে দিন-রাত সমান তালে চলছে কৃষি জমির টপ সয়েল কাটার মহোৎসব। এ সংক্রান্ত আইনি বিধিনিষেধ থাকলেও কেউই তা মানছে না। ফলে প্রতিদিন একরের পর একর কৃষি জমির টপ সয়েল চলে যাচ্ছে অন্যত্র। এতে করে যেমন জমি উর্বরাশক্তি হারাচ্ছে তেমনি ফসল উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে। জমির ১ থেকে ২ ফুট গভীর করে ফসলি জমির মাটি কাটা হচ্ছে। যেখানে মাটির উপরিভাগের ৮ থেকে ১০ ইঞ্চি অংশকে টপ সয়েল বলা হয়। এই অংশে মাটির মূল উর্বরাশক্তি থাকে। আর সেই শক্তি তুলে নিয়ে বানিজ্য করছে ওইসব মাটি ব্যবসায়ীরা। শুধু ইছা প্রধান ও ছালেক মিয়াই না, আরও অনেক অসাধু ব্যক্তি এই মাটির ব্যবসায় ফুসে ওঠেছেন। তারা এমন কাণ্ডে লিপ্ত থাকলেও প্রশাসন নিরবতা পালন করছে বলে ভূক্তভোগিরা জানিয়েছে।

বনগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ফজলুল কাইয়ুম হুদা জাগো২৪.নেট-কে জানান, ওইস্থানে বানিজ্যিকভাবে মাটি কাটার বিষয়টি লোকমুখে শুনেছি। ব্যাপারটি দেখা হবে।

সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম আজমিরুজ্জামান বলেন, শেরপুরে মাটি তোলার বিষয়টি জানা নেই। খতিয়ে দেখে এসিল্যান্ড স্যারের মাধ্যমে মোবাইল কোর্ট করার চেষ্টা করা হবে।

সাদুল্লাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসাদুজ্জামান জাগো২৪.নেট-কে জানান, ফসলি কৃষি মাঠ থেকে বালু তোলা দণ্ডনীয় অপরাধ। ঘটনার সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।