এক সময়ে গাইবান্ধা জেলার নিভৃত গ্রামাঞ্চলে নজর কাড়তো মাটির ঘর। সেই সময়ে অনেক পরিবার মাটির ঘরে বসবাসে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন।কিন্তু কালের আবর্তে এখন ইটের দালানের কাছে হার মানছে মাটির ঘরগুলো।
জানা যায়, এসি ঘর খ্যাত এলাকা হচ্ছে গাইবান্ধার ধাপেরহাট ইউনিয়ন। এ এলাকার প্রত্যেক পরিবারের মানুষরা শান্তিতে বাস করতেন মাটির ঘরে। কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ায় এই ঘরের পরিবর্তে এখন শোভা পাচ্ছে ইটের দালান ঘর। যার ফলে ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে বসেছে শীতাতপ খ্যাত এই মাটির ঘরগুলো।
ধাপেরহাট ইউনিয়নের খাদেম আলী মাস্টাসহ কয়েকজন প্রবীণ ব্যক্তি জানায়, অতীতে মাটির ঘর গরিবের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘর বলা হত। ঝড়-বৃষ্টি থেকে বাঁচার পাশাপাশি প্রচুর গরম ও খুবই শীতে আদর্শ বাস উপযোগী মাটির তৈরি এসব ঘর। এঁটেল বা আঠালো মাটি কাদায় পরিণত করে দুই-তিন ফুট চওড়া দেয়াল তৈরি করা হত। ১০-১৫ ফুট উঁচু দেয়ালে কাঠ বা বাঁশের সিলিং তৈরি করে তার ওপর খড়-কুটা অথবা ঢেউটিনের ছাউনি দেয়া হত। আর এই মাটির ঘর অনেক সময় দোতলা পর্যন্ত করা হয়। গৃহিণীরা মাটির দেয়ালে বিভিন্ন রকমের আলপনা একে ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতেন। তবে প্রবল বর্ষণ ও ভূমিকম্পে মাটির ঘরের ক্ষতি হয় বেশি। এমন ঝুঁকি থেকে রেহাই পেতে এবং আধুনিকতার ছোঁয়ায় ইদানিং মাটির ঘরের পরিবর্তে ইটের ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে এই এলাকায়।

খামারপাড়া গ্রামের আলেয়া বেওয়া জানান, প্রায় ৩০ বছর আগে বানানো মাটির ঘর এখনো তার বাড়িতে রয়েছে। আর এই ঘরে বসবাসে অনেক শান্তি পায়। গরীব মানুষ হওয়ায় ইটের ঘর দেওয়ার সামর্থ নেই তার। তাই বাকী জীবন এই মাটির ঘরে থাকতে হবে তাকে।
হাসানপাড়া গ্রামের কপিল উদ্দিন সরকার জাগো২৪.নেট বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বর্ষা মৌসুমে মাটির ঘরের ক্ষতি হয় বলে ইট-সিমেন্টের ঘর নির্মাণে এখন উৎসাহী হচ্ছে মানুষ।
ধাপেরহাট ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য আইয়ুব আলী জাগো২৪.নেট জানান, মাটির ঘর বসবাসের জন্য আরামদায়ক। কিন্তু যুগের পরিবর্তনে অধিকাংশই মানুষই এখন মাটির ঘর ভেঙ্গে ইটের দালান ঘর নির্মাণ করছে।
তোফায়েল হোসেন জাকির 


















