কৃষি নির্ভশীল গাইবান্ধার মাঠজুড়ে আবাদ করা হয়েছে রোপা আমনের। ইতোমধ্যে সবুজের এই খেতে বাম্পার ফলনের আশা করছিলেন কৃষকরা। এরই মধ্যে ধান গাছগুলো থোর হতে না হতেই উপদ্রুপ বেড়েছে ঈঁদুরের। কেটে সাবাড় করছে ধানগাছ। হঠাৎ এমন আক্রমণের ফলে নষ্ট হচ্ছে এই খেত। এ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়ছেন চাষিরা।
সম্প্রতি সরেজমিনে গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন মাঠপর্যায়ে ঘুরে দেখা গেছে- কালো ঈদুরের হানায় নষ্ট হওয়া ধানখেতের দৃশ্য। দেখে মনে হয়- কেউ যেনো কাঁচি দিয়ে কেটে নিয়ে গেছে এই খেত।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, জীবন জীবিকার জন্য গাইবান্ধার অধিকাংশ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভশীল। এ জেলার শতকরা প্রায় ৭০ ভাগ পরিবার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষি ফসল ঘরে তুলে তাদের মৌলিক চাহিদা পুরণে চেষ্টা করেন। এসবের মধ্যে সবচেয়ে লাভজনক ফসল হচ্ছে রোপা আমন ধান। এরই ধারাবাহিকতায় খরা আর বন্যাসহ নানা প্রতিকুল পেরিয়ে এবার সাতটি উপজেলায় প্রায় ১ লাখ ৩৩ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করা হয়েছে। অধিকাংশ কৃষক বাড়তি খরচে সেচ দিয়ে রোপণ করেছেন এই ধানচারা। এরই মধ্যে এই খেত থোড় হওয়া শরু হয়। এতে করে কৃষকরা আশা করছিলেন অধিক ফলন ঘরে তোলার। কিন্তু বিধিবাম! বেশ কিছু মাঠে পোকামাকড়ের আক্রমণসহ পাতা ব্লাস্ট বা খোল পঁচা রোগ দেখা দেয়। এ থেকে রেহাই পেতে না পেতেই দেখা দিয়েছে ঈদুরের উৎপাত। ধানগাছ কেটে সাবাড় করছে রাক্ষসে এই ঈদুরের দল। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ধানখেত নষ্ট হওয়া মাথায় হাত পড়েছে প্রান্তিক কৃষকের।
জাকিরুল ইসলাম নামের এক কৃষক জানান, চলতি রোপা আমন মৌসুমে দুই বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করেছেন। এ থেকে ভালো ফলন ঘরে তোলার স্বপ্ন বুনছিলেন। কিন্তু ঈদুরের আক্রমণে সেই স্বপ্ন ভঙ্গ হতে চলেছে তার। এ সমস্যা সমাধানে কৃষি বিভাগে পরামর্শ নিচ্চেন এই কৃষক।
ঈদুরের কবল থেকে রক্ষায় বিভিন্ন ধরণের কীটনাশক প্রয়োগ করেও কাজ হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে বাঁশের ডোঙ্গা ফাঁদ দিয়ে ঈদুর নিধনের চেষ্টা করছেন বলে জানালেন কৃষক আশাদুল ইসলাম।
কৃষি সম্প্রাসারণ বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রুহুল আমিন মন্ডল বলেন, খুব বেশি পরিমাণ খেতে ঈদুরের আক্রমণ নেই। কিছু কিছু খেতে সামান্য আক্রমণ করেছে। এসব ইদুর নিধনে বিষটোপসহ বিভিন্ন বিষয়ে কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।
গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতের উপপরিচালক খোরশেদ আলম বলেন, রোপা আমন খেতে ঈদুর তাড়ানোর জন্য কীটনাশক প্রয়োগসহ বিভিন্ন পদ্ধতি নিয়ে সহকর্মীরা মাঠপর্যায়ে কাজ করছে। আশা করি খুব দ্রুত এর সমাধা হবে।
© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | জাগো২৪.নেট