গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় গরুচোর সন্দেহে আব্দুস সালাম (৫০) নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় দুলালী বেগম (৪৩) নামে এক নারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের তিস্তার চরে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আব্দুস সালাম ওই ইউনিয়নের রামডাকুয়া গ্রামের ওমেদ আলীর ছেলে।
গ্রেফতারকৃত দুলালী বেগম বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের আব্দুল গণি মিয়ার স্ত্রী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার গভীর রাতে আব্দুল গণি মিয়ার গোয়ালঘরে প্রবেশ করেন সালাম। এ সময় বিষয়টি টের পেয়ে দুলালী বেগম স্বামী ও আশপাশের লোকজনকে খবর দেন। পরে স্থানীয়রা সালামকে রশি দিয়ে বেঁধে বেধড়ক মারধর করেন। একপর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে পড়লে তাকে পুকুরপাড়ে রেখে দেওয়া হয়। ভোরের দিকে আবার তাকে পাশের একটি গোয়ালঘরে নিয়ে গিয়ে পুনরায় নির্যাতন চালানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
অভিযুক্ত আব্দুল গণি মিয়া বলেন, কয়েকদিন আগে শ্যালো মেশিন চুরি গেছে। রাতে গোয়ালে সালামকে দেখি, তাই প্রতিবেশীদের খবর দিই। পরে তারা এসে মারধর করে।
গ্রেফতার হওয়া দুলালী বেগম বলেন, এক সপ্তাহ আগে মেশিন হারিয়েছে। রাতে শব্দ শুনে দেখি গোয়ালের বাঁধন খুলছে। পরে লোকজন এসে মারধর করে।
নিহতের স্বজনরা জানান, আব্দুস সালাম দীর্ঘদিন মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন এবং মানুষের সাহায্যেই জীবন চলত। তার বিরুদ্ধে আগে কখনো চুরির অভিযোগ ওঠেনি। তারা দাবি করেন, পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের তিনটি ছোট ছেলে রয়েছে—বাবাকে হারিয়ে তারা এখন চরম অসহায় অবস্থায় পড়েছে।
এদিকে, ঘটনার খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) বিদ্রোহ কুমার কুণ্ডু, সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হাকিম আজাদ এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, খবর পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় দুলালী বেগম নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডে আর কারা জড়িত ছিল তা শনাক্তে তদন্ত চলছে।
গাইবান্ধা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) বিদ্রোহ কুমার কুণ্ডু বলেন, তদন্তের ভিত্তিতে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, জাগো২৪.নেট 





















