বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

 ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন,বসবাড়ি ও ফসলী জমি হুমকির মুখে

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা সহ আশে পাশের বিভিন্নস্থানে কোন এক সময় অবাধে বালু উত্তোলনে মহোৎসব চলছিল।
ওই সময় আইন প্রয়োগ সংস্থা বালু উত্তোলন বন্ধে ব্যাপক অভিযান চালিয়ে বালু ব্যবসায়ী অনেকের বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহূত স্যালো মেশিন পাইপ সহ বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী জব্দ করেন। এতে বেশ কিছুদিন বালু উত্তোলন বন্ধ থাকে।
চলমান করোনা সংক্রমন রোধে সরকার ঘোষিত লক ডাউনের সুযোগে সম্প্রতি আবারো বালু ব্যবসায়ীরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার চোখে ফাঁকি দিয়ে বালু উত্তোলনে  ক্রমান্বয়ে  সক্রিয় উঠছেন।
ইতোমধ্যে নিভূত পল্লী অঞ্চলে কেউ চুপিসারে আবার কেউবা প্রকাশ্যে সুযোগ বুঝে আগের মত অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন শুরু করেছেন।
সোমবার ( ৩ মে) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা- ২০১০ প্রণীত আইন অমান্য করে উপজেলার  নলডাঙ্গা ইউনিয়নের নলডাঙ্গা নামাপাড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা হাছেন আলীর জনবসতিপূর্ন এলাকায় অবস্থিত পুকুর থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে দেদারচ্ছে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।
এতে পুকুরের আশপাশের বসতবাড়ি, গাছপালা ও কৃষি জমি ভাঙ্গনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ওই গ্রামের একটি স্বার্থন্বেষী প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় পীরগজ্ঞ উপজেলার একাব্বরপুর গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে লিটু মিয়া প্রায় মাসাধিকাল ধরে ওই পুকুরটি থেকে দিবারাত্রি নির্বিঘ্নে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে প্রায় ৩/৪ শত ফিট সংযোগ পাইপ দিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বেশ দাপটে বালু উত্তোলন করে মানুষের বসতভিটা ভরাট করছেন।
তবে পুকুর মালিকের ছেলে সিদ্দিক হোসেন আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বালু ব্যবসা নয়, পুকুর খননের জন্য ড্রেজার মেশিনটি বসানো হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই গ্রামের অনেকেই বলেন,আমরা নিরীহ মানুষ।সবই বুঝি। কিন্তু আমরা নিরূপায়।
পুকুরটি যেভাবে গভীর করে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে এতে কোন এক সময় পুকুরের আশেপাশের বাড়ি ঘর, গাছপালা ও ফসলী জমি ভাঙ্গনের মুখে পড়ে মারাত্নক ক্ষতি সাধন হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
তারপরেও আমরা কিছু বলতে পারিনা। কেউ কিছু বলতে গেলেই তাকে নানা রকম ভয়ভীতি ও হুমকি ধামকি দেয়া হয়।
ওই ওযার্ডের ইউপি সদস্য ইয়াছিন আলী বালু উত্তোলনের সত্যতা স্বীকার করে বলেন,গ্রামের মহৎ মাতত্বরদের সাথে আলোচনা করে পাশে একটি কবর স্থানের যাতায়াতের রাস্তায় মাটি ভরাটের জন্য ড্রেজার দিয়ে পুকুর থেকে বালু করা হচ্ছে বলে আমাকে বলা হয়েছে। এছাড়া  আমি আর কিছু জানি না।
সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য লিপি বেগম বলেন, আমি বিষয়টি জানি। কিন্তু আমার এখানে কি করার আছে। আমি নিষেধ করলেও বালু উত্তোলন কারীরা আমার কথা শুনবেনা। তাই আমি এ ব্যাপারে কাউকে কিছু বলিনি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নলডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ খবর নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইয়াছিন আলী কে বলা হয়েছে। তারপরেও এ ব্যাপারে সুনিদিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে বিষয়টি প্রশাসন কে জানানো হবে।
এদিকে বিদ্যমান এ পরিস্থিতিতে ঘনবসতিপূর্ন এলাকাটিতে এভাবে প্রকাশ্যে বালু উত্তোলন করা হলেও স্থানীয় সচেতন প্রভাবশালী মহলের রহস্যজনক মৌন ভুমিকা নিয়ে এ এলাকার সাধারন মানুষকে অনেকটা ভাবিয়ে তুলছে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এ ব্যাপারে কোন কার্যকরী ব্যবস্থা না নেওয়ায় বালু ব্যবসায়ী বহাল তবিয়তে বালু উত্তোলন করায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ভুমিকা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
জনপ্রিয়

 ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন,বসবাড়ি ও ফসলী জমি হুমকির মুখে

প্রকাশের সময়: ০৬:৫১:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ মে ২০২১
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা সহ আশে পাশের বিভিন্নস্থানে কোন এক সময় অবাধে বালু উত্তোলনে মহোৎসব চলছিল।
ওই সময় আইন প্রয়োগ সংস্থা বালু উত্তোলন বন্ধে ব্যাপক অভিযান চালিয়ে বালু ব্যবসায়ী অনেকের বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহূত স্যালো মেশিন পাইপ সহ বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী জব্দ করেন। এতে বেশ কিছুদিন বালু উত্তোলন বন্ধ থাকে।
চলমান করোনা সংক্রমন রোধে সরকার ঘোষিত লক ডাউনের সুযোগে সম্প্রতি আবারো বালু ব্যবসায়ীরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার চোখে ফাঁকি দিয়ে বালু উত্তোলনে  ক্রমান্বয়ে  সক্রিয় উঠছেন।
ইতোমধ্যে নিভূত পল্লী অঞ্চলে কেউ চুপিসারে আবার কেউবা প্রকাশ্যে সুযোগ বুঝে আগের মত অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন শুরু করেছেন।
সোমবার ( ৩ মে) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা- ২০১০ প্রণীত আইন অমান্য করে উপজেলার  নলডাঙ্গা ইউনিয়নের নলডাঙ্গা নামাপাড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা হাছেন আলীর জনবসতিপূর্ন এলাকায় অবস্থিত পুকুর থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে দেদারচ্ছে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।
এতে পুকুরের আশপাশের বসতবাড়ি, গাছপালা ও কৃষি জমি ভাঙ্গনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ওই গ্রামের একটি স্বার্থন্বেষী প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় পীরগজ্ঞ উপজেলার একাব্বরপুর গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে লিটু মিয়া প্রায় মাসাধিকাল ধরে ওই পুকুরটি থেকে দিবারাত্রি নির্বিঘ্নে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে প্রায় ৩/৪ শত ফিট সংযোগ পাইপ দিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বেশ দাপটে বালু উত্তোলন করে মানুষের বসতভিটা ভরাট করছেন।
তবে পুকুর মালিকের ছেলে সিদ্দিক হোসেন আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বালু ব্যবসা নয়, পুকুর খননের জন্য ড্রেজার মেশিনটি বসানো হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই গ্রামের অনেকেই বলেন,আমরা নিরীহ মানুষ।সবই বুঝি। কিন্তু আমরা নিরূপায়।
পুকুরটি যেভাবে গভীর করে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে এতে কোন এক সময় পুকুরের আশেপাশের বাড়ি ঘর, গাছপালা ও ফসলী জমি ভাঙ্গনের মুখে পড়ে মারাত্নক ক্ষতি সাধন হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
তারপরেও আমরা কিছু বলতে পারিনা। কেউ কিছু বলতে গেলেই তাকে নানা রকম ভয়ভীতি ও হুমকি ধামকি দেয়া হয়।
ওই ওযার্ডের ইউপি সদস্য ইয়াছিন আলী বালু উত্তোলনের সত্যতা স্বীকার করে বলেন,গ্রামের মহৎ মাতত্বরদের সাথে আলোচনা করে পাশে একটি কবর স্থানের যাতায়াতের রাস্তায় মাটি ভরাটের জন্য ড্রেজার দিয়ে পুকুর থেকে বালু করা হচ্ছে বলে আমাকে বলা হয়েছে। এছাড়া  আমি আর কিছু জানি না।
সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য লিপি বেগম বলেন, আমি বিষয়টি জানি। কিন্তু আমার এখানে কি করার আছে। আমি নিষেধ করলেও বালু উত্তোলন কারীরা আমার কথা শুনবেনা। তাই আমি এ ব্যাপারে কাউকে কিছু বলিনি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নলডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ খবর নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইয়াছিন আলী কে বলা হয়েছে। তারপরেও এ ব্যাপারে সুনিদিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে বিষয়টি প্রশাসন কে জানানো হবে।
এদিকে বিদ্যমান এ পরিস্থিতিতে ঘনবসতিপূর্ন এলাকাটিতে এভাবে প্রকাশ্যে বালু উত্তোলন করা হলেও স্থানীয় সচেতন প্রভাবশালী মহলের রহস্যজনক মৌন ভুমিকা নিয়ে এ এলাকার সাধারন মানুষকে অনেকটা ভাবিয়ে তুলছে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এ ব্যাপারে কোন কার্যকরী ব্যবস্থা না নেওয়ায় বালু ব্যবসায়ী বহাল তবিয়তে বালু উত্তোলন করায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ভুমিকা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।