উপমহাদেশের কিংবদন্তিতুল্য সংগীতশিল্পী লতা মঙ্গেশকর আর নেই। টানা প্রায় চার সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর রোববার (০৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।
শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় গতকাল শনিবার সকালে এ সংগীতশিল্পীকে ভেন্টিলেটর সাপোর্টে নেওয়া হয়। তখন চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, কিছুটা সাড়া দিচ্ছেন লতা। তার বিভিন্ন থেরাপি চলছে। কিন্তু সেখান থেকে আর ফেরা হয়নি এ কোকিলকণ্ঠীর।
লতার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই শোকের ছায়া নেমেছে বিশ^জুড়ে, এমনকি বাংলাদেশের বিভিন্ন মহলে। বিনোদনজগৎ তো বটেই, লতার মৃত্যুতে নিজেদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শোক প্রকাশ করছেন নানা জগতের মানুষ।
লতা মঙ্গেশকারের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দু:খ প্রকাশ করেছেন নজরুল বিশ^বিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর। এক শোক বার্তায় তিনি বলেন, ‘উপমহাদেশ তথা সারা বিশে^র লাখো কোটি মানুষকে লতা মঙ্গেশকার তার সুরেলা কণ্ঠের যাদুতে কয়েকদশক ধরে বিমোহিত করে রেখেছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে উপমহাদেশের সঙ্গীতাঙ্গন একগুণী শিল্পীকে হারালো। তিনি শুধু কণ্ঠের রাণিই ছিলেন না, ছিলেন সংস্কৃতিকে সার্বিকভাবে ধারন ও লালন করে উদার জীবনবোধের প্রতীক। বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামে তিনি সঙ্গীতের মাধ্যমে যে সমর্থন দিয়েছিলেন তা ইতিহাস হয়ে রয়েছে। তাঁর শুন্যতা কখনো পূরণ হবার নয়। আমি তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।
১৯২৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর লতার জন্ম এক মারাঠি পরিবারে। মাত্র ১৩ বছর বয়সে বাবাকে হারান। তার আগে অবশ্য বাবার হাত ধরেই অভিনয় এবং গান শিখতে শুরু করে দিয়েছিলেন। ১৩-১৪ বছর বয়সেই প্রথমবার সিনেমায় গান গাওয়া। মরাঠি ছবিতে। মুম্বাই যাওয়ার পর ১৯৪৮ সালে প্রথম হিন্দি ছবিতে গান করেন তিনি। লতা মঙ্গেশকর প্রায় ৩৬টি ভাষায় প্রায় সাড়ে সাত হাজার গান করেছেন। এর মধ্যে আছে বাংলাও। ‘প্রেম একবার এসেছিল নীরবে’, ‘আষাঢ় শ্রাবণ মানে না তো মন’, ‘ও মোর ময়না গো’, ‘ও পলাশ ও শিমুল’, ‘আকাশপ্রদীপ জ্বেলে’সহ আরও অনেক বিখ্যাত বাংলা গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। ২০০১ সালে লতা মঙ্গেশকর ভারতের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ভারতরত্ম অর্জন করেন। ১৯৮৯ সালে তিনি দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার লাভ করেন।
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, জাগো২৪.নেট 























