তোফায়েল হোসেন জাকিরঃ পথ হেঁটে দেশ ভ্রমণের আলোচিত ব্যক্তি গাইবান্ধার ছাদেক আলী সরদার (৬৬)। আর সফর সঙ্গী হয়েছে তারই ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান (৩৬)। এই বাবা-ছেলে দীর্ঘদিন ধরে গাইবান্ধা জেলা শহর থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় দীর্ঘ পথ হেঁটেই ঘুরছেন ।
গতকাল মঙ্গলাবর (২২ ফেব্রুয়ারি) সকালে গাইবান্ধা শহরের ছাদেক চত্বর থেকে পথ হেঁটে বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা উপজেলায় পৌঁছাছেন ওই বাবা ও ছেলে। এতে হাঁটার দূরত্ব রয়েছে ১৫০ কিলোমিটার।
দেশের ইতিহাসে অনেকের দীর্ঘ পথ হাঁটার রেকর্ড থাকলেও, সেই রেকর্ড ভঙ্গ করে এই প্রথম তারা ১৫০ কিলোমিটার হাঁটছেন বলে ওই বাবা-ছেলের দাবি। এ নিয়ে বাবা-ছেলে ১ হাজার ১২৪ কিলোমিটার পথ হেঁটে ভ্রমণের তথ্য জানালেন তারা।
এই ভ্রমণ পিপাসুদের বাড়ি গাইবান্ধা শহরের মধ্য গোবিন্দপুরে। ছাদেক আলী সরদার গত ২০০৬ সালে সেনা বাহিনীর অনারারী ক্যাপ্টেন পদে অবসর নিয়েছেন। ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান একজন সফল উদ্যোক্তা। তাদের শরীর চর্চার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থান হেঁটেই ঘুরে দেখার স্বপ্ন দীর্ঘদিনের। এরই মধ্যে শুরু করেছে তাদের স্বপ্নযাত্রা। ইতোমধ্যে তারা পর্যাক্রমে দেশের বিভিন্ন জেলায় ১ হাজার ১২৪ কিলোমিটার পথ হেঁটে পাড়ি দিলেন।
এর আগে গত ১৪ ডিসেম্বর সকালে গাইবান্ধা ছাদেক চত্বর থেকে ফুলছড়ি থানা চত্বর পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার পথ হেঁটে যাত্রা শুরু করে তারা। ধারাবাহিকতায় গাইবান্ধার জেলা বিভিন্ন ইতিহাস-ঐতিহ্য ও দর্শণীয় স্থান সমূহ হেঁটে পদার্পন করেছে। এ ধারা অব্যাহত রেখে গাইবান্ধা থেকে বগুড়া, রংপুর ও দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট,হিলি ও আরও বিভিন্ন স্থানসহ আজ বুধবার লালমনিরহাটের হাতিবান্ধায় ভ্রমণ করলেন তারা। এ নিয়ে ছাদেক আলী সরদার ও তার ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান মোট ৩৬টি স্থানে ১ হাজার ১২৪ দীর্ঘ পথ হেঁটে পাড়ি দিলেন।
ইতোমধ্যে বিশেষ স্থানে অবস্থিত হযরত শাহ সুলতানের মাজার, হযরত শাহ জামাল (র:) এর মাজার, রাজবাড়ি, জমিদার বাড়ি, গায়েবী মসজিদ, শাহী আমলের সুরা মসজিদ, যাদুঘর, নৌঘাট, সেতু, স্থলবন্দর, হাট-বাজারসহ আরও বেশ কিছু আলোচিত ও দর্শণীয় জায়গাগুলোতে হেঁটে চলেছে তারা। এভাবে আরও বেশ কিছু স্থানে দীর্ঘ পথ হেঁটে যাত্রা করবেন বলে জানিয়েছে ওই ভ্রমণ পিপাসুরা।
ভ্রমণ সঙ্গী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাবা-ছেলের মধ্যে যদি সু-সম্পর্ক বজায় থাকে এবং তা যদি বন্ধুসুলভ হয়, তাহলে হাজার হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়া যায় অবলিলায়। কিন্তু যদি সেই সম্পর্কের অবনতী ঘটে তাহলে এক কিলোমিটার তো দুরের কথা, একই ছাদের নিচে থাকাটাই দুষ্কর হয়ে দাঁড়ায়। তাই বাবা-ছেলের মধ্যে সু-সম্পর্ক থাকার পাশাপাশি তা বন্ধুসুলভ হওয়াটাও একান্ত প্রয়োজন। এজন্য আমার বাবার হেঁটে চলার ভ্রমণে সঙ্গী হয়েছি।
সেনা বাহিনীর অনারারী ক্যাপ্টেন (অবসরপ্রাপ্ত) ভ্রমণকারী ছাদেক আলী সরদার জানান, হেঁটে যাত্রা করবেন, এটি দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা ছিল তার। সেটি বাস্তবায়নে দীর্ঘ পথ পাড়ি দেয়া শুরু করেছেন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের বাপ-বেটার পা গুলোকেই বাহন হিসাবে কাজে লাগিয়ে আমাদের মিশন কে আরও দীর্ঘায়িত করবে বলে দৃঢ় বিশ্বাস।
তোফায়েল হোসেন জাকির, জাগো২৪.নেট: 


















