তোফায়েল হোসেন জাকির: গাইবান্ধা জেলার অধিকাংশ মানুষ দিনমজুর কিংবা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক। দৈনন্দিন যেটুকু পারিশ্রমিক পান, তায় দিয়ে সংসার চলে তাদের। এরই মধ্যে বৈশ্বিক পরিস্থিতির প্রভাবে সারাদেশের মতো গাইবান্ধা জেলাও বাড়ছে চাল-ডাল, সবজি-মসলা, মাছ-মাংশসহ অন্যান্য জিনিসিপত্রের দাম। অগ্নিমূল্যে এসব ভোগ্যপণ্য কিনতে অস্থির হয়ে পড়ছে খেটে খাওয়া শ্রমিকরা। খাদ্যপণ্যের অস্বাভাবিক দাম নিয়ে আজ শ্রমজীবি মানুষের সংগ্রাম আর সংহতির দিনে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেছে শ্রমিকরা।
সোমবার (মহান মে দিবস) গাইবান্ধার বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে খাদ্যপণ্যের অস্বাভাবিক দামের চিত্র। এরপ্রভাবে হাঁসফাঁস করছে শ্রমজীবি মানুষগুলো। লাগামহীন দাম বৃদ্ধিতে বেকায়দায় পড়েছে ক্ষেতমজুর, রিকশা-ভ্যান শ্রমিকসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা। তাদের বিভিন্ন জিনিসপত্র ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে । যেন সংসার চালানোর দায় হয়ে পড়েছে। এরই কষাঘাতে শ্রমিকদের মধ্যে শুরু হয়েছে বোবা কান্না।
বর্তমান বাজারে প্রতিকেজি গরুর মাংস ৭০০ টাকা, ছাগলের (খাসি) মাংস ৯৫০, ব্রয়লার মুরগী ২৩০ টাকা, চাল ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা, সোয়াবিন তেল ২০০ টাকা, বিভিন্ন ডাল ১২০ থেকে ১৬০ টাকা, চিনি ১১৫ টাকা, শাক-সবজি (প্রকার ভেদে) ২০ টাকা, করলা, পটল, বটবটি, তরই, শসা ৪০ টাকা, আলু-বেগুন ২৫ থেকে ৩০ টাকা, সজিনা ১০০ টাকা, ঢেঁড়স-টমেটো ৩০ টাকা, ডিম ১১ থেকে ১৪ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া অন্যান্য মসলাসহ নিত্যপণ্যের দামও বেড়েছে আকাশচুম্বি। এসব দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি পরিস্থিতিতে নাভিশ্বাস শ্রমিকরা। বৈশ্বিক পরিস্থিতে দফায় দফায় ভোগ্যপণ্যের অস্বাভাবিক দামে তাদের জীবনযাপনে প্রচণ্ড আঘাত হানতে শুরু করেছে বলে দাবি নানা ধরণের শ্রমিকদের।
ইটভাটা শ্রমিক মিলন মিয়া জানান, পহেলা মে দিবসের পথ ধরেই শ্রমিকদের নানা অধিকার অর্জিত হয়েছে। তাদের শ্রমের মর্যাদায় গুরুত্ব পেয়েছে। কিন্তু যেভাবে ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েছে, সেতুলনায় আয় বাড়েনি তাদের। এতে করে পরিবারের চাহিদা পূরণে দিনদিন বাড়ছে ঋণের বোঝা।
কাঁচা বাজারের খুচরা বিক্রেতা মজনু শেখ বলেন, স্থানীয়ভাবে শাক-সবজি উৎপাদন কম ও ভোক্তা চাহিদা বেশী হওয়ায় দাম বেড়েছে অনেকটা। একারণে একদিকে লাভ হচ্ছে কম অন্যদিকে বাকবিতন্ডা বাঁধছে ক্রেতাদের সঙ্গে।
গাইবান্ধার জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুস সালাম জানান, বাজার নিয়ন্ত্রণে তদারকি অব্যাহত রয়েছে। যারা কৃত্রিম সংকট বা অতিরিক্ত দামে পণ্যসামগ্রী বিক্রি করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | জাগো২৪.নেট