মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঘাঘট ব্রিজে বিনোদন প্রেমিদের ঢল

তোফায়েল হোসেন জাকির: গাইবান্ধার সবচেয়ে পিছেপড়া উপজেলার নাম- সাদুল্লাপুর। জনবহুল ও ঘনবসতি এই এলাকায় আজও গড়ে ওঠেনি চিত্তবিনোদন কেন্দ্র। তাই ঈদুল ফিতরে সাদুল্লাপুর শহরে ঘেসা একটি ঘাঘট ব্রিজে দর্শনার্থীদের ঢল লক্ষ্য করা গেছে। এ যেনো দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে এখানে ছুটছে বিনোদন প্রেমি মানুষরা।

বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে গড়িয়ে যাওযার সাথে সাথে সাদুল্লাপুর সরকারি কলেজ রোডের ওই ঘাঘট ব্রিজে দেখা যায়- হাজারো দর্শনার্থীদের ভিড়। যেন প্রকৃতির সঙ্গে মিশে হই-হুল্লোয় মেতে উঠেছে তরুণ-তরুণীসহ সকল বয়সের মানুষ। এখানে বাধের দু’পাশে সারি সারি গাছের নয়নাভিরাম ও নৈসর্গিক দৃশ্য যে কোনো বিনোদন প্রেমি মানুষকে কাছে টানে। যে কারণে প্রকৃতির নির্মল বাতাস ও বাধের নয়নাভিরম নৈসর্গিক দৃশ্য উপভোগ করতে ঈদে হাজারো মানুষের ঢল নেমেছে। আর অস্থায়ী দোকানগুলোতে ফুঁচকা, আচার, হালিম খাওয়াসহ বিভিন্ন পানীয় পান করছেন দর্শনার্থীরা।

জানা যায়, সাদুল্লাপুর উপজেলার প্রায় পৌনে ৩০০ গ্রামে ৩ লাখের বেশী মানুষের বসবাস। এখানকার ২২৭ দশমিক ৯৭ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের উপজেলাটির জনঘনত্ব প্রায় ১ হাজার ৩০০ বর্গ কিলোমিটার। জনবহুল এই উপজেলায় স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও গড়ে উঠেনি চিত্তবিনোদন কেন্দ্র। শহরটির প্রাণকেন্দ্রে সরোবরো নামকস্থানে বিনোদন কেন্দ্র স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসছিলেন স্থানীয়রা। এ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনেরা বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু আজও কথা রাখেনি কেউ। আর এই উপজেলার বাহিরে একাধিক বিনোদন কেন্দ্র থাকলেও তা দূরে হওয়ায় অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে যেতে নানা ভোগান্তিতে পড়ে থাকেন। যার কারণে চিত্ত বিনোদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাদুল্লাপুরের লাখো পরিবার। শুধু উপজেলাবাসী নয়, এখানকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মরত ব্যক্তিরাও সহজে বিনোদন উপভোগ করতে পারছেন না।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গাইবান্ধা জেলা সদর থেকে ১১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সাদুল্লাপুর-কামারপাড়া সড়কের সাদুল্লাপুর সরকারি কলেজের পূর্ব পাশে নির্মাণ করা হয়েছে ৯৯ দশমিক ১০ মিটার দৈর্ঘ্যের ঘাঘট ব্রিজ। এই উপজেলায় কোন বিনোদন কেন্দ্র না থাকায় স্থানীয়দের অবসর কিংবা বিনোদনের মুহূর্তগুলোকে উপভোগ করার একমাত্র ভরসা এই ব্রিজ। এখানে বিশেষ করে ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবে বিনোদন প্রেমি মানুষের উপচেপড়া ঢল নামে। এখন বিনোদন পিয়াসুদের কাছে অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে রুপ নিয়েছে এই ব্রিজটি। ঈদের ছুটিতে সাদুল্লাপুরের বিভিন্ন এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং অন্যান্য পেশা-শ্রেণির হাজারো মানুষ এখানে ভিড় জমাচ্ছেন।

ঘাঘট ব্রিজে ঘুরতে আসা ইসরাফিল হোসেন তৌফিক জাগো২৪.নেট-কে বলেন, আমাদের আশপাশ এলাকায় কোনো বিনোদন কেন্দ্র নেই। তাই ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে এখানে আসা। কিছু সময় অবস্থান করে বেশ ভালো লেগেছে। সেই সাথে ব্রিজে দু’পার্শ্বের সংযোগ সড়কে বসার স্থান ও স্ট্রিষ্ট লাইট দেওয়া হলে এটি অনেকটা পূর্ণতা পাবে বলে অনেক মনে করেন এই যুবক।

স্থানীয় নজরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি জানান, বিভিন্ন উৎসবে ঘাঘট ব্রিজে মানুষের ভির জমে। তাই ঈদ উপলক্ষে একটি অস্থায়ী খাদ্যপণ্যের দোকান দিয়েছেন। নানা প্রকার মুখরোচক খাদ্যপণ্য বিক্রি করে অনেকটাই লাভবান হচ্ছেন।

সুমন মিয়া নামের এক শিক্ষক জাগো২৪.নেট-কে বলেন, অনেকে জেলার আশপাশের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে যেতে পারে না। কারণ সাধ থাকলেও তাদের সাধ্য নেই। তাই সাদুল্লাপুর প্রাণকেন্দ্রে একটি বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।

জনপ্রিয়

ঘাঘট ব্রিজে বিনোদন প্রেমিদের ঢল

প্রকাশের সময়: ০৬:২৩:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ এপ্রিল ২০২৪

তোফায়েল হোসেন জাকির: গাইবান্ধার সবচেয়ে পিছেপড়া উপজেলার নাম- সাদুল্লাপুর। জনবহুল ও ঘনবসতি এই এলাকায় আজও গড়ে ওঠেনি চিত্তবিনোদন কেন্দ্র। তাই ঈদুল ফিতরে সাদুল্লাপুর শহরে ঘেসা একটি ঘাঘট ব্রিজে দর্শনার্থীদের ঢল লক্ষ্য করা গেছে। এ যেনো দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে এখানে ছুটছে বিনোদন প্রেমি মানুষরা।

বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে গড়িয়ে যাওযার সাথে সাথে সাদুল্লাপুর সরকারি কলেজ রোডের ওই ঘাঘট ব্রিজে দেখা যায়- হাজারো দর্শনার্থীদের ভিড়। যেন প্রকৃতির সঙ্গে মিশে হই-হুল্লোয় মেতে উঠেছে তরুণ-তরুণীসহ সকল বয়সের মানুষ। এখানে বাধের দু’পাশে সারি সারি গাছের নয়নাভিরাম ও নৈসর্গিক দৃশ্য যে কোনো বিনোদন প্রেমি মানুষকে কাছে টানে। যে কারণে প্রকৃতির নির্মল বাতাস ও বাধের নয়নাভিরম নৈসর্গিক দৃশ্য উপভোগ করতে ঈদে হাজারো মানুষের ঢল নেমেছে। আর অস্থায়ী দোকানগুলোতে ফুঁচকা, আচার, হালিম খাওয়াসহ বিভিন্ন পানীয় পান করছেন দর্শনার্থীরা।

জানা যায়, সাদুল্লাপুর উপজেলার প্রায় পৌনে ৩০০ গ্রামে ৩ লাখের বেশী মানুষের বসবাস। এখানকার ২২৭ দশমিক ৯৭ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের উপজেলাটির জনঘনত্ব প্রায় ১ হাজার ৩০০ বর্গ কিলোমিটার। জনবহুল এই উপজেলায় স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও গড়ে উঠেনি চিত্তবিনোদন কেন্দ্র। শহরটির প্রাণকেন্দ্রে সরোবরো নামকস্থানে বিনোদন কেন্দ্র স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসছিলেন স্থানীয়রা। এ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনেরা বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু আজও কথা রাখেনি কেউ। আর এই উপজেলার বাহিরে একাধিক বিনোদন কেন্দ্র থাকলেও তা দূরে হওয়ায় অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে যেতে নানা ভোগান্তিতে পড়ে থাকেন। যার কারণে চিত্ত বিনোদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাদুল্লাপুরের লাখো পরিবার। শুধু উপজেলাবাসী নয়, এখানকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মরত ব্যক্তিরাও সহজে বিনোদন উপভোগ করতে পারছেন না।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গাইবান্ধা জেলা সদর থেকে ১১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সাদুল্লাপুর-কামারপাড়া সড়কের সাদুল্লাপুর সরকারি কলেজের পূর্ব পাশে নির্মাণ করা হয়েছে ৯৯ দশমিক ১০ মিটার দৈর্ঘ্যের ঘাঘট ব্রিজ। এই উপজেলায় কোন বিনোদন কেন্দ্র না থাকায় স্থানীয়দের অবসর কিংবা বিনোদনের মুহূর্তগুলোকে উপভোগ করার একমাত্র ভরসা এই ব্রিজ। এখানে বিশেষ করে ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবে বিনোদন প্রেমি মানুষের উপচেপড়া ঢল নামে। এখন বিনোদন পিয়াসুদের কাছে অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে রুপ নিয়েছে এই ব্রিজটি। ঈদের ছুটিতে সাদুল্লাপুরের বিভিন্ন এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং অন্যান্য পেশা-শ্রেণির হাজারো মানুষ এখানে ভিড় জমাচ্ছেন।

ঘাঘট ব্রিজে ঘুরতে আসা ইসরাফিল হোসেন তৌফিক জাগো২৪.নেট-কে বলেন, আমাদের আশপাশ এলাকায় কোনো বিনোদন কেন্দ্র নেই। তাই ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে এখানে আসা। কিছু সময় অবস্থান করে বেশ ভালো লেগেছে। সেই সাথে ব্রিজে দু’পার্শ্বের সংযোগ সড়কে বসার স্থান ও স্ট্রিষ্ট লাইট দেওয়া হলে এটি অনেকটা পূর্ণতা পাবে বলে অনেক মনে করেন এই যুবক।

স্থানীয় নজরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি জানান, বিভিন্ন উৎসবে ঘাঘট ব্রিজে মানুষের ভির জমে। তাই ঈদ উপলক্ষে একটি অস্থায়ী খাদ্যপণ্যের দোকান দিয়েছেন। নানা প্রকার মুখরোচক খাদ্যপণ্য বিক্রি করে অনেকটাই লাভবান হচ্ছেন।

সুমন মিয়া নামের এক শিক্ষক জাগো২৪.নেট-কে বলেন, অনেকে জেলার আশপাশের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে যেতে পারে না। কারণ সাধ থাকলেও তাদের সাধ্য নেই। তাই সাদুল্লাপুর প্রাণকেন্দ্রে একটি বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।