গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে গাইবান্ধায় সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হতে শুরু করছে।
শুক্রবার (২১ জুন) বিকেলে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়- ইতোমধ্যে গাইবান্ধার চারটি উপজেলার প্রতিটি উপজেলায় ৫০ ব্যাগ শুকনা খাবার, নগদ অর্থ ১৫ লাখ টাকা, শিশু খাদ্য ক্রয় বাবদ ২ লাখ টাকা এবং গো-খাদ্য ক্রয় বাবদ ৫ লাখ টাকা করে উপ-বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে।
এছাড়া বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য চারটি রেসকিউ বোট ও ৩৮৪ মেট্রিক টন চাল মজুদ রয়েছে এবং স্থায়ী-অস্থায়ী বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সেইসঙ্গে ৫০০ মেট্রিক টন চাল, ১০ লাখ টাকা(নগদ), পাঁচ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার, এক হাজার বান্ডিল ঢেউটিন, গৃহনির্মাণ মঞ্জুরী বাবদ ৩০ লাখ টাকা, শিশু খাদ্য ও গো-খাদ্য ক্রয় বাবদ ১০ লাখ টাকার বরাদ্দের চাহিদা প্রেরণ করা হয়েছে।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় জেলার ব্রহ্মপুত্রের পানি ফুলছড়ি পয়েন্টে ১৯ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৭৬ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে, ঘাঘট নদীর পানি নিউ ব্রীজ পয়েন্টে ১৪ সেন্টিমিটার বেড়ে ১২৯ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে, করতোয়ার পানি গোবিন্দগঞ্জের চকরহিমপুর পয়েন্টে ৬১ সেন্টিমিটার বেড়ে ১৭৬ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে এবং তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে, পানি বৃদ্ধির কারণে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর, কাপাশিয়া, চন্ডিপুর ও তারাপুর ইউনিয়ন, সদর উপজেলার মোল্লারচর, গিদারি, ঘাগোয়া, কামারজানি ও ফুলছড়ি উপজেলার এরেন্ডাবাড়ি, ফুলছড়ি ও ফজলুপুর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল রাস্তাঘাট ডুবে প্লাবিত হচ্ছে।
অপরদিকে, নদ-নদীতে পানি বাড়ার সাথে সাথে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর, কাপাশিয়া, চন্ডিপুর ও তারাপুর ইউনিয়ন, ফুলছড়ির ফজলুপুর ইউনিয়ন ও সদর উপজেলার মোল্লারচর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন ও সাদুল্লাপুর উপজেলার ঘাঘট নদে পানি বৃদ্ধির ফলে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
গাইবান্ধা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক বলেন, পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে স্বল্পমেয়াদি বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। তবে সার্বিক পরিস্থিতির উপর সার্বক্ষনিক নজর রাখা হচ্ছে।
গাইবান্ধা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ আল হাসান জানান, নদী বেষ্টিত যে যেসব ইউনিয়ন রয়েছে, সেই সব ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ ইউপি সদস্যদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। নদীর পাড় সংলগ্ন যেসব ওয়ার্ড রয়েছে সেখানে গ্রুপ ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবীদের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল জানান, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রাথমিক সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | জাগো২৪.নেট