জাহিদুল ইসলাম জাহিদ: সাবেক এমপি আবদুল আজিজ, লিটন, গোলাম মোস্তফা, কর্নেল কাদের, ব্যারিস্টার শামীম ও সাগর আপাসহ সবাই ব্রীজ করে দিতে চেয়েছিলেন। কেউ কথা রাখেননি। শুধু আশ্বাসেই দিয়ে গেছেন। ক্ষোভ জানিয়ে কথাগুলো বলছিলেন তারাপুর ইউনিয়নের চরখোর্দ্দা গ্রামের মৃত মো. জহির উদ্দিনের ছেলে মো. আমজাদ হোসেন (৬২)।
আর এ ক্ষোভ কেবল তাঁর একার নয়। বরং প্রায় ২০ গ্রামের লাখো মানুষের। কথা হয় আরেক ভুক্তভোগী মো. নজরুল ইসলামের (৪৫) সাথে। তিনি ওই ইউনিয়নের নামাপাড়া গ্রামের মৃত ওসিম উদ্দিনের ছেলে।
নজরুল বলেন, ‘এ সাকোয় চলাফেরা বহুত গ্রামের। তারাপুর ইউনিয়নের খোর্দ্দা, ঘগোয়া, লাঠশালা, বৈরাগী পাড়া ও পাশ্ববর্তী কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার বজড়া ও গুনাইগাছ ইউনিয়নের চরবিরহীম, সাধুয়া, দামারহাট, নাগড়াকুড়া ও থেথরাসহ প্রায় ২০ গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে এ পথ ধরে। দিনে প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার লোকের চলাচল। বহু লোকে সেতু করে দেয়ার আশ্বাস দেয় কিন্তু হয় না। তারাপুর বাসীর দুঃখ দুঃখই থাকি গেলো!
ঘগোয়া গ্রামের মো. আবদুল মুত্তালেব মিয়া (৬০) বলেন, ‘ইলেকশন যখন আসে তখন জনজন সবাই বলে এটা করি দেমো, ওটা করি দেমো। যেই ভোট পার হয় তখন আর কাউকে পাওয়া যায় না।
পথচারী মো. বাবর আলী (৬০) বলেন, সাঁকো ভাঙ্গলে আর নদীতে পানি বাড়লে সাংবাদিক আসে। ছবি তোলে, ভিডিও করে। আর হামারগুলার বক্তব্য নেয়। ব্রীজ তো হয় না। এখন আমরা সাংবাদিকদের উপরও বিরক্ত।
সরেজমিনে গেলে স্থানীয়রা জানান, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ইউনিয়ন ও পাশ্ববর্তী কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার বজরা ও গুনাইগাছ ইউনিয়নের সংযোগ সড়কে এ সাঁকোটি। ৩ ইউনিয়নের ২৭ গ্রাম ছাড়াও গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম জেলার কয়েকটি উপজেলার সরকারি-বেসরকারি চাকুরীজীবি, স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থী, হাঁটুরে, বিভিন্ন ব্যাবসায়ীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষজন এ পথ ধরে যাতায়াত করেন। দৈনন্দিন সবমিলিয়ে কমপক্ষে ১৫-২০ হাজার লোক চলাচল করেন এ পথ ধরে।

তাঁরা আরও জানান, শুরুর দিকে এ জায়গাটা বুড়াইল নদী নামে পরিচিত ছিলো। আকারে ছোট হওয়ায় কখনো বাঁশের সাঁকো আবার কখনো কাঠের সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করতো দুই পারের গ্রামবাসী। বুড়াইলের পাশদিয়ে ছিলো তিস্তা নদী। ২০০১ সালের দিকে তিস্তা ভেঙ্গে বুড়াইলে সংযোগ হয়। সেই থেকে বেড়ে যায় পানির প্রবাহ বুড়াইলে। ভাঙ্গানে-ভাঙ্গনে বাড়তে থাকে নদীর প্রস্থও। আর তখন থেকে তিস্তার শাখা নদী হিসেবে পরিচিতি পায় এটি। সেতু নির্মাণের দাবিটা মূলত এখান থেকেই আরও জোরালো হয়ে উঠে। কিন্তু এখনো সেতু হয়নি। কেবলমাত্র আশ্বাসই মিলছে তাঁদের কপালে। নড়বড়ে কখনো বাঁশের আবার কখনো কাঠের সাঁকো দিয়েই চলাচল করতে হচ্ছে তাদের প্রতিনিয়ত। এ সাঁকো থেকে পড়ে এ পর্যন্ত ২ জন ব্যাক্তি মারাও গেছেন। মোটরসাইকেলসহ পুলিশ সদস্যও পড়ে গিয়েছিলেন এ নদীতে। আর ছোট-খাটো দূর্ঘটনা তো লেগেই আছে। সাকোঁটি ঠিক রাখতে প্রত্যেক বছর কমপক্ষে ২-৩ বার মেরামত করেন স্থানীয়রা। তবে মেরামতে ইউনিয়ন পরিষদ সার্পোট দিয়ে থাকেন বলেও জানান এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে কথা হয় তারাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আমিনুল ইসলামের সাথে। তিনি বলেন, এ ব্রীজটা ধরানো আছে। সয়েল টেস্ট হয়েছে। বরাদ্দ এলেই কাজ শুরু হবে।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বরাদ্দ এলেই কাজ শুরু করা হবে।
জাহিদ. স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, জাগো২৪.নেট 



















