উত্তরের জনপদ গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় গত কয়েকদিন ধরে ঘন কুয়াশা ও হিমেল ঠান্ডা বাতাস বয়ে যাচ্ছে। এতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। দুর্ঘটনা এড়াতে দিনের বেলাতেও ছোট-বড় যানবাহন হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। যারা বের হচ্ছেন, তারা শীত নিবারণের জন্য পর্যাপ্ত গরম কাপড় পরিধান করছেন। ঘন কুয়াশার কারণে চারদিক অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে। ফলে দিনের আলো থাকলেও যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে বাধ্য হচ্ছে।
কুয়াশার কারণে যানবাহনের গতি কমে যাওয়ায় যাত্রীরা নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন না। তবে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে দিনমজুর, রিকশাচালক ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা, যাদের জীবন ও জীবিকা সরাসরি আবহাওয়ার ওপর নির্ভরশীল।
মালবাহী ট্রাক চালক মো. আবদুল হামিদ মিয়া বলেন, “কুয়াশার কারণে সড়ক দেখা যায় না। সে কারণে হেডলাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। গাড়ির গতি সামান্য রেখে চালাতে হয়। আর এ কারণে সময়মতো মালামাল পৌঁছে দিতে পারছি না।
রিক্সা চালক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, “সময় এখন প্রায় দুপুর ১২ টা। সূর্যের আলো এখনো দেখা যায়নি। অন্যদিনে এ সময়ের মধ্যে তিন থেকে চারশো টাকা রোজগার হতো। আর আজকে এখন পর্যন্ত একশো টাকায় কামাই করতে পারিনি। শীতের কারণে লোকজন বাহিরে বেরই হচ্ছে না। পরিবার পরিজনদের নিয়ে খুব খারাপ সময় পার করতে হচ্ছে।
মোটরসাইকেল চালক মো. মতিয়ার রহমান বলেন, ফজরের নামাজ পরে বের হইছি। এক ঘন্টার রাস্তা। দেড় ঘন্টা পার হলো। আরও পাঁচ কিলো সড়ক বাকি আছে। শীতের কারনে বাইক জোরে চালানো যাচ্ছে না।
দিনমজুর মো. আবদুল ওয়াহাব মিয়া বলেন, ‘এখন সময় ১০ টা। গত কাইলও কেউ মোক কামোত নেয়নাই। এ্যালাউ কাম পাম নাই। শীতের জন্যে কেউ আইসে নাই। আইজকা কাম না পাইলে খুব কষ্ট হইবে।
রংপুর বিভাগের আবহাওয়া অফিসের দায়িত্বে থাকা আবহাওয়াবিদ মো. মোস্তাফিজার রহমান জানান, বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯ টার দিকে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে গাইবান্ধা জেলার সর্বনিম্ন আবহাওয়া তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিন বুধবার সকাল ৯ টার দিকে আবহাওয়া তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। এতে ১২.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস ছিলো। আগামী আরও ২ থেকে ৩:দিন এ অবস্থা থাকবে বলেও জানান এ আবহাওয়াবিদ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ঈফফাত জাহান তুলি বলেন, “ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে। কম্বল বিতরণ করছি আমি নিজেও। সবমিলিয়ে এ পর্যন্ত দুই হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।
জাহিদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, জাগো২৪.নেট 


















