শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:১৬ পূর্বাহ্ন

ফেসবুকে লাল কাঁঠাল উৎপাদনের গুজব

করেসপন্ডেন্ট, জাগো২৪.নেট, শৈয়লকুপা (ঝিনাইদহ)
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২১
কলা ও কাঁঠাল। ফল দুটির নাম মনে আসলেই আমাদের চোখে ভাসে সবুজ-হলুদ রঙের দুটি ফলের চিত্র। পৃথিবীব্যাপী কলার পরিচয় থাকলেও কাঁঠালের দেখা মেলে এ উপমহাদেশেই বেশি। বাংলাদেশের জাতীয় ফলের গৌরব অর্জন করে রেখেছে এই কাঁঠাল। যার বৈজ্ঞানিক নাম আর্টোকার্পাস হেটারোফাইলাস।
সবুজ ও হলুদ রঙের মিশ্রণ বা হলুদাভাব কাঁঠাল দেখে আমরা অভ্যস্ত থাকলেও সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে লাল রঙের কাঁঠাল পরিচিতি পেয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, কাঁঠালের বাহ্যিক রঙ লাল; এমনকি ভেতরের অংশের কোষগুলোর রঙও একই। যা এরইমধ্যে ভাইরাল হয়েছে।
ফেসবুকে শেয়ার হওয়া হাজারো পোস্টে দেখানো হয়েছে- ঝিনাইদহের একটি খামারে লাল রঙের কাঁঠাল ও কলার চাষ হয়েছে। টকটকে লাল রঙের কোষগুলো একেবারেই খাবার উপযোগী। যদিও বাস্তবতা ভিন্ন। ফেসবুক পোস্টগুলোতে কাঁঠালের যে ছবিগুলো দেখানো হয়েছে সেগুলো মূলত ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করা। ওই খামারে এ রকম কোনো কাঁঠালের উৎপাদন হয় নি।
ড. নজরুল ইসলাম। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণীবিদ্যা বিভাগে অনার্স-মাস্টার শেষ করে জাপান থেকে অর্জন করেছেন ডক্টরেট ডিগ্রি। কিছুদিন কাজ করেছেন বাংলাদেশ মৎস্য ও কৃষি উন্নয়ন গবেষণা কেন্দ্রে। সম্প্রতি জাইকার অর্থায়নে পরিচালিত রাজধানী ঢাকার একটি প্রজেক্টে যোগ দেন। কিন্তু করোনাকালে সেটাও বন্ধ। তাই তিনি গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহে ফেরত আসেন।
বাড়িতে ফিরে কী করবেন এমন চিন্তা থেকে শুরু করেন কৃষিকাজ। যশোরের একটি নার্সারি থেকে নিয়ে আসেন ভিয়েতনামের তিনটি লাল কাঁঠাল ও ১৫টি অগ্নিশ্বর জাতের লাল কলার চারা। রোপণ করেন নিজ গ্রাম ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরের লক্ষ্মীপুর গ্রামে।
ড. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘কাঁঠালের চারা রোপণের পর এবারই প্রথম ফুল এসেছিল। কিছুদিন পর তা নষ্ট হয়ে যায়, তাই ফল আর আসেনি। তবে কলা গাছ রোপণের ৯ মাসের মাথায় একটি গাছের এক কাধীতে লাল কলা ধরেছে।
তিনি বলেন, ‘আমার গাছের কাঁঠাল না ধরলেও কিছু লোক ইন্টারনেট থেকে লাল কাঁঠালের ছবি ডাউনলোড করে ফল এসেছে এবং পাকলে কাঁঠালের কোয়া (কোষ) লাল হবে বলে প্রচার করেছে। এ গুজব প্রচারের পর থেকেই বিভিন্ন জায়গা থেকে ফোন আসছে, অনেকেই আবার দেখতে আসছেন। এটি খুবই বিরক্তিকর।
কোটচাঁদপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মহাসিন আলী বলেন, ‘তার এই ভিয়েতনামী কাঁঠাল ও কলার খামারটি পরিদর্শন করেছি। গাছ ভালো হয়েছে। ফলনও আশা করছি ভালোই হবে।
লাল কাঁঠাল: ভিয়েতনামী রঙ্গিন কাঁঠাল মূলত আঠাবিহীন। এই ফলটির আকার বাংলাদেশি কাঁঠালের চেয়ে কিছুটা ছোট হয়। এর ইংরেজি নাম ‘গ্যাক ব্যারি জ্যাকফ্রুট’। গাছে ফুল আসার পর মুচি থেকে কাঁঠাল বড় হয়ে পাকতে ১২০-১৫০ দিন সময় লাগে।
ভিয়েতনামী লাল কাঁঠালে চর্বির পরিমাণ কম হওয়ায় এ কাঁঠাল খেলে ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কা নেই। ১০০ গ্রাম লাল কাঁঠালে ৩০৩ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম রয়েছে। এ কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’ ও ‘সি’ রয়েছে; রয়েছে ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস। যা আলসার, ক্যান্সার, উচ্চ রক্তচাপ এবং বার্ধক্য প্রতিরোধ সক্ষম।

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | জাগো২৪.নেট

কারিগরি সহায়তায় : শাহরিয়ার হোসাইন