আসাদুল ইসলাম (৪০)। পেশা ঘটকালি। এলাকার মানুষ তাকে ডিজিটাল ঘটক হিসেবে চেনেন ও জানেন। এ পর্যন্ত ১০৪ টি বিয়ে সম্পন্ন করেছেন তিনি।
এই আসাদুলের বাড়ি গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপেরহাট ইউনিয়নের নিজপাড়া গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের রাজা মিয়ার ছেলে।
জানা যায়, সংসার জীবনে আসাদুল ২ সন্তানের জনক। অবিবাহিত জীবনে তিনি পেশায় ছিলেন ফেরিওয়ালা। গ্রামাঞ্চলে ফেরি করে চুরি-ফিতা ও কসমেটিকস বিক্রি করতেন। এ সুবাদে বিভিন্ন এলাকার লোক জনের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে ওঠে তার।
স্থানীয়রা জানায়, সারাক্ষণ হাসি মুখে লেগেই থাকে ডিজিটাল ঘটক আসাদুল। অতি অল্প সময়েই যেকোন মানুষের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলতে সক্ষম। এই কৌশল কাজে লাগিয়ে ফেরিওয়ালা থেকে স্বল্প সময়েই এলাকায় ঘটক হিসাবে পরিচিতি লাভ করে। ২০০৩ সালে সে ফেরিওয়ালা পেশা ছেড়ে দিয়ে প্রতিবেশী এক শ্যালিকাকে ঘটকালি করে বিয়ে দেওয়ার মধ্য দিয়ে তার ঘটকালী জীবন শুরু হয়।
এ্যানালগ জীবন থেকে ঘটকালি শুরু করে এরপর আস্তে আস্তে সময়ের সাথে পাল্টে গেছে ঘটকালির ধরণও। আগে বিয়ে-সাদি হতো সরাসরি ঘটক, মেয়ে বা ছেলের বাড়িতে গিয়ে সর্ম্পক ঠিক করতো। এখন সময় পাল্টে গেছে। সময় সল্পতার কারণে মোবাইল ফোনে কথার্বাতা, ভিডিও কলে ছেলে -মেয়ে দেখা-দেখির মাধ্যমে অভিভাবকদের সঙ্গে কথার্বাতা বলে একাধিক বিয়ে সম্পন্ন করে দিয়েছেন ঘটক আসাদুল। সেই থেকেই তার নাম হয়েছে ডিজিটাল ঘটক। শখ করে অনেকেই তাকে ডিজিটাল ঘটক বলেই ডাকে।
ঘটক আসাদুল বলেন, আগে ফেরিওয়ালা ছিলাম। এ পেশা বাদ দিয়ে ২০০৩ সাল থেকে আজ ১৮ বছর ধরে ঘটকালি পেশা সম্মানের সহিত করে যাচ্ছি। এই পেশায় এসে যেমন পেয়েছি সম্মান, তেমনি ইনকামও ভালো হচ্ছে। গরীব মানুষের বিয়ে হলে ২ পক্ষ থেকে পাই ৫ হাজার টাকা। আর বিত্তশালী পরিবারে বিয়ে হলে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত বকশিস পাই। ১৮ বছর ঘটকালি জীবনে এই পেশা দিয়ে বাড়ি করেছি। একটি মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি।আল্লাহর রহমতে বউ বাচ্চা নিয়ে সুখে শান্তিতে রয়েছি।
তবে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, বিয়ে-সাদি হয়ে গেলে আমার মতো ঘটকের খবর আর কোন পক্ষই রাখেনা। নব দম্পত্তি সুখে থাকলে খবর নেয় না। আর উভয়ের মধ্যে সমস্যা হলে যত দোস ঘটকের।
ঘটক আসাদুল অরো বলেন, ২০০৩ সাল থেকে ২০২১ সালের জুন মাস পর্যন্ত ১০৪ টি বিয়ের ঘটকালি সম্পন্ন করেছেন। নিজ উপজেলা সাদুল্লাপুর থেকে শুরু করে গাইবান্ধা জেলাসহ রংপুর, দিনাজপুর,বগুড়াসহ অন্য জেলাতেও তিনি ঘটকালির মাধ্যমে বিয়ে-সাদি সম্পন্ন করে দিয়েছেন। আল্লাহ চাইলে জীবদ্দশায় ৫০০ টি বিয়ে সম্পন্ন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আমিনুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, জাগো২৪.নেট 
























