গাইবান্ধার হাট-বাজারগুলোতে শীতকালীন শাক-সবজির আমদানি বাড়তে শুরু করেছে। তবে আমদানি বাড়লেও কমেনি দাম। এসব সবজির স্বাদগ্রহণে হিমশিম খাচ্ছে ভোক্তারা। উর্ধ্বমূখী দাম নিয়ে বিপাকে স্বল্প আয়ের মানুষ।
শনিবার (১৯ নভেম্বর)সরেজমিনে গাইবান্ধার বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা যায় শীতের সবজিগুলোর আকাশ চুম্বি দাম। এসময় বেশ কিছু ক্রেতা সাধারণের চোখ-মুখে দেখা গেছে অস্থিরতার দৃশ্য। এছাড়া চড়া দামের কারণে ক্ষুব্ধ হয়েছে উঠছিলেন অনেকে।
গাইবান্ধার কাঁচা বাজারগুলোতে বর্তমানে প্রতি কেজি ফুলকপি ৩০ টাকা, বাঁধাকপি ২৫ টাকা, মূলা ১০ টাকা, সিম ৪০-৬০ টাকা, বটবটি ৪০ টাকা, বেগুন ১৫-২০ টাকা, পটল ২০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, শসা ৩০ টাকা, ঢেঁড়স ৩০ টাকা, আলু ২৫ টাকা, পেঁপে ২০ টাকা, তরই ৩৫ টাকা,টমেটো ১২০ টাকা, লাউ ৩০-৫০ টাকা(প্রতি পিস) ধনিয়া শাক ৩০ টাকা, মূলা শাক ৩০ টাকা, পালং শাক ৪০ টাকা, লাল শাক ২৫ টাকা, লাউ শাক ৩০ টাকা, সরিষা শাক ২৫ টাকা, ও লাপা শাক ৩০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে গত বছরের এইদিনে তুলনায় দাম কিছুটা কম রয়েছে।

শুধু শাক-সবজি নয়,চিনিসহ ভোজ্য তেল ও জ্বালানি তেলসহ নিত্যপণ্য সব ধরণের জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। লাগামহীন উর্ধ্বমূখী দাম নিয়ে বিপাকে পড়েছে দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত্ব পরিবারের মানুষেররা। প্রতিনিয়ত সবজি ও অন্যান্য পণ্যের দাম অতিরিক্ত বেড়ে চলায় সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে স্বল্প আয়ের মানুষগুলো।
জানা যায়, গাইবান্ধা জেলার ৭টি উপজেলার মানুষেরা দুর্যোগ না সামলিয়ে উঠতেই বয়ে গেছে বন্যা-ঝড় ও খরা। এর প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এখানকার অধিকাংশ পরিবার। এসব দুর্যোগ থেকে এখনও ঘুরে দাঁড়াতে পারিনি কেউই। যার কারণে চরম অর্থ সংকটে ভুগতে হচ্ছে। এমতাবস্থায় পরিবারের মৌলিক চাহিদা পুরণে তাদের দিনদিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে ঋণের বোঝা। তারা এখন কীভাবে তারা ঘুরে দাঁড়াবে এমন চিন্তায় নির্ঘুম রাত কাটছে। সবমিলে যেন মরার ওপর খাড়া ঘা হয়েছে তাদের।
গাইবান্ধার পুরাতন বাজারে সবজি কিনতে আসা খালেক মিয়া জানান, ইতিপুর্বে করোনাসহ বিভিন্ন দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তিনি। এরই মধ্যে বেড়েছে শীতের শাক-সবজি ও অন্যান্য পণ্য সামগ্রীর দাম। এতে করে সংসার চালানো দায় হয়ে পড়ছে তার।
সাদুল্লাপুরের খুচরা বাজারে সবজি বিক্রেতা লাল মিয়া জানান, ইতোমধ্যে শীতকালীন সবজি আড়তে আসতে শুরু করেছে। কিন্তু পাইকারি দাম অনেক বেশী। তাই খুচরা বাজারেও বেশী দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে গত বছরের চেয়ে এ বছর দাম কিছুটা কম রয়েছে।
ধাপেরহাট এলাকার সবজি চাষি মজিবুর রহমান জানান, শীতের জন্য আগাম সবজির আবাদ করছিলেন। কিছুদিন আগে ঝড়-বৃষ্টির কারণে সেই ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে। তাই উৎপাদন কম হওয়ায় শাক-সবজির দাম বেড়েছে।
গাইবান্ধা জেলা কৃষি বিভাগের উপপরিচালক বেলাল উদ্দিন জানান, চলতি রবি মৌসুমে (শীতকালীন) ৯ হাজার হেক্টর জমিতে শাক-সজির চাষের লক্ষ্যমাত্রা নিধারণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত অর্জন হয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হলে এবং আশানুরূপ ফলন পাওয়া গেলে শাক-সবজির দাম কমতে পারে। এতে কৃষক-ভোক্তা উভয়ে স্বস্তি পাবেন।
তোফায়েল হোসেন জাকির 


















