তোফায়েল হোসেন জাকির: গৃহবধূ নাজমা সিদ্দিকা। পেশায় একজন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা। থাকেন গাইবান্ধার পলাশবাড়ী শহরে। এ শহরের পাঁচতলা বাড়ির ছাদে গড়ে তুলেছেন দৃষ্টিনন্দন বাগান। ইতোমধ্যে শাক-সবজি ও ফল-ফুলে ভরে গেছে বাগানটি। বাহারি রঙে সাজিয়ে ওঠেছে পুরো ছাদ। খানিকটা দাঁড়িয়ে থাকলে মনে, এটি যেন কোনো এক দর্শণীয় স্থান।
সম্প্রতি পলাশবাড়ীর পৌর শহরের নাজমা সিদ্দিকার বাড়ির ছাদজুড়ে দেখা গেছে, নানা রঙের বৃক্ষের সমারোহ। এখানে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির শাক-সবজি, মসলা ও ফলমূল। এসময় পরিচর্যায় ব্যস্ত ছিলেন তিনি।
জানা যায়, সাদুল্লাপুর উপজেলা খোদ্দকোমরপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট ঠিকাদার নজেল হোসেনের স্ত্রী নাজমা সিদ্দিকা। বসবাস করেন পলাশবাড়ী পৌর শহরের প্রফেসরপাড়ার পাঁচতলা বাড়িতে। পেশা হিসেবে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা তিনি। তার নিজের বাসার ছাদে করেছে বাগান। বিভিন্ন টবের মাধ্যমে এবং অন্যান্য পদ্ধততি এই বাগানে লাগানো হয়েছে ওঁলকপি, ফুলকপি, মিষ্টি কুমড়া, সিম, পেঁয়াজ, শাক, টমেটো, মরিচ প্রভৃতি। ছাদজুড়েই রয়েছে কয়েক প্রজাতির পেঁপে, মাল্টা, লিচু, লেবু, আম, বড়ই ও ড্রাগন।
স্থানীয়রা জানান, নাজমা সিদ্দিকা তার চাকরির পাশাপাশি বেশি সময় দেন ছাদ বাগানে। এ বাগানের পরিচর্যাসহ উন্নত জাতের ফসল উৎপাদনই তার নেশায় পরিণত হয়েছে। এ থেকে উৎপাদিত সবজি দিয়েই পরিবারের খাদ্য চাহিদা পূরণ করেন তিনি। ইতোমধ্যে তার ছাদবাগান দেখে আরও অনেকে উৎসাহিত হয়ে উঠছেন। স্বাস্থ্য সচেতনতা নিরাপদ ফল-সবজি প্রাপ্তি সুবিধা নিশ্চিত করণে অনেকেই ছাদে বাগান তৈরি অনুপ্রেরণা পাচ্ছে। বাগানের গাছপালার সংস্পর্শে এসে বিচিত্র আনন্দের স্বাদগ্রহণ করছে আরও অনেকে। নাজমার পরিকল্পিত একটা সুন্দর ছাদ বাগান করে পরিচ্ছন্ন পরিবেশ ও সারা বছর ধরে পরিবারের চাহিদামতো নিরাপদ ফল-সবজি আহরণ করা হচ্ছে।
পাশের বাসার বাসিন্দা মাহমুদা বেগম বলেন, নাজমা সিদ্দিকার ছাদ বাগান করেছেন এটি খুবই প্রশসংনীয়। তার এ ছাদে ওঠলেই প্রকৃতি যেন হাত ছানি দিয়ে ডাকে। বাগানের প্রতিটি গাছেই যেন ফল ও ফুলে ভরে গেছে। ছাদজুড়ে মনোরম পরিবেশ মূহুর্তেই যেন মন হারিয়ে যায় দূর অজানায়। এমন একটি বাগান করার ইচ্ছে রয়েছে।
এই ছাদ বাগান মালিক নাজমা সিদ্দিকা জানান, বাগান তৈরিতে নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে উন্নত জাতের সুস্থ-সবল চারা বা কলম সংগ্রহের গুরুত্ব অপরিসীম। সঠিক পরিকল্পনা অনুযায়ী ছাদ বাগান করলে, সেটি থেকে পরিবারের চাহিদা মিটিয়েও বাজারজাত করা সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, গত ২০০৪ সালে উপ সহকারি কৃষি কর্মকর্তা হিসাবে যোগদানের পর থেকে ইচ্ছা ছিলো নিজের ভবনে ছাদ বাগান করার । এরপর ২০১৯ সালে নিজের ভবন হওয়ায় সখের বসে ছাদ বাগানটি গড়ে তুলেছি। এখান থেকে বিষমুক্ত ফুল, ফল, ফসল নিজ পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে প্রতিবেশীদের দিয়ে থাকি।
এ বিষয়ে পলাশবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফাতেমা কাওসার মিশু জানান, মাঠে কৃষকদের পরামর্শ ও সহযোগীতা করার পাশাপাশি নাজমা সিদ্দিকা সখের বসে ছাদ বাগান করে সাফল্য পেয়েছেন। এটি খুবই ভালো উদ্যোগ। তাকে সাধুবাদ জানাই।
তোফায়েল হোসেন জাকির 


















