তোফায়েল হোসেন জাকির: গাইবান্ধাসহ উত্তরের জেলা রংপুর, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলায় ধীরে ধীরে কমছে আবাদি জমির পরিমান। নদী ভাঙন, ইটভাটা ও বসতবাড়ি গড়ে ওঠায় আবাদি জমি হ্রাস পাচ্ছে। এতে করে আগামীতে খাদ্য ঘাটতির আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ওইসব জেলা কৃষি বিভাগ সুত্রে জানা যায়, গাইবান্ধা, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলায় মোট জমির পরিমান ৮ লাখ ৯০ হাজার হেক্টর। এর মধ্যে আবাদযোগ্য জমির পরিমান ৬ লাখ ৪৫ হাজার হেক্টর। আবাদযোগ্য জমিতে চাষিরা নানা ধরনের ফসল উৎপান করে থাকেন। কিন্তু, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, ধরলা, করতোয়া ও তিস্তা নদীর ভাঙন এবং বন্যায় আবাদি জমিতে বালু পড়ায় কোন ধরণের শস্য ফলন হয়না এমন জমির পরিমান ২ লাখ ৭৮ হাজার ৫০০ হেক্টর। আবার প্রতিবছর নতুন নতুন বসতবাড়ি-অবকাঠামো গড়ে ওঠায় আবাদি জমি কমছে। আবার ইটভাটায় মাটির জন্য আবাদি জমিও কমছে বলে জানা গেছে।
সাঘাটা উপজেলার কৃষক বাচ্চু প্রামানিক জাগো২৪.নেট-কে জানান, তার চল্লিশ বিঘা জমি ছিল। আজ থেকে প্রায় ২০ বছর আগেই ব্রহ্মপুত্রের নদে প্রায় ১৫ বিঘা জমি বিলীন হয়ে বালুচর হয়েছে। এতে করে দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি।
স্থানীয় সংবাদকর্মী আবু তাহের জাগো২৪.নেট-কে জানান, আবাদি জমিতে হাট-বাজার, বসতবাড়ি-অবকাঠামো নির্মাণ হওয়ায় ক্রমানয়ে কমে যাচ্ছে আবাদি জমির পরিমান। আবার যত্রতত্র ইটভাটা গড়ে ওঠায় আবাদি জমির পরিমানও কমে যাচ্ছে।
গাইবান্ধার ফজলুপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু হানিফ জাগো২৪.নেট-কে জানান, এই ইউনিয়নের ৮০ ভাগ আবাদি জমি গত ১০ বছরে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। যা এখন অনাবাদি হিসেবে পড়ে আছে।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা গণউন্নয়ন কেন্দ্র (জিইউকে) নির্বাহী প্রধান ও নদী ও চর গবেষক এম. আবদুস সালাম জাগো২৪.নেট-কে জানান, নদী ভাঙন, বন্যা, খরা ও অপরিকল্পিতভাবে ঘরবাড়ি গড়ে তোলায় কৃষিনির্ভর এই দেশের আবাদি জমির পরিমান কমে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে উত্তরাঞ্চলে ফের খাদ্য সংকট বা মঙ্গার সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে। এজন্য বালুচর বা পতিত জমিতে বিকল্প পদ্ধতিতে চাষাবাদ বাড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি।
গাইবান্ধা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক বেলাল উদ্দীন জাগো২৪.নেট-কে বলেন, নদী ভাঙন ও বন্যা ও আবাদি জমিতে বসতবাড়ি স্থাপন হওয়ায় আবাদি জমির পরিমাণ কমছে। কৃষকরা বালুচর ও পতিত জমিতে চাষাবাদ করছে এবং এ বিষয়ে মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা চাষিদের পরামর্শ দিচ্ছেন।
তোফায়েল হোসেন জাকির, জাগো২৪.নেট 





















