রেনু বালা (৪৭)। পেশায় ঝিয়ের কাজ। নেই জায়গা জমি। জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস। মাথার গোজার জন্য খুঁজছেন স্থায়ী ঠিকানা। সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বরাদ্দ চেয়েও ভাগ্যে জোটেনি এই ভূমিহীনের।
শুক্রবার (৮ জুলাই) সকালে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের নিজাম খাঁ গ্রামে দেখা মেলে অসহায় রেনু বালার। এসময় ভাঙা ঘরের দরজায় থালা-বাটি হাতে নিয়ে অবাক চোখে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
স্থানীয়রা জানায়, ওই গ্রামের মৃত নিশি কান্তর মেয়ে রেনু বালা। প্রায় ২০ বছর আগে বিয়ে হয়। যখন কোলজুড়ে দুই কন্য সন্তান আসে, তখন তার স্বামী ডিভোর্স দেয়। এরপর শিশু সন্তানদের নিয়ে জিতেন্দ্র নাথ মোদক নামের এক ভাইয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। এখানে একটি টিনশেড ঘরে কোনমতে বসবাস। জীবিকার তাগিদে পেশা হিসেবে বেছে নেয় ঝিয়ের কাজ। এ কাজটি অব্যাহত রেখে এরই মধ্যে দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। এসব বিয়েতে একদম নিঃস্ব তিনি। সারাদিন হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে একটু ভালোভাবে ঘুমাবেন, সেটিও পাচ্ছেন না। ঘরের চালার শতাধিক ফুটোয় সামান্য বৃষ্টির আর কুয়াশায় ভিজে যায় বিছানাপত্র। সেই সঙ্গে কালবৈশাখীর আতঙ্কও রয়েছে তার। ঝুকিপুর্ণ এই ঘরে নির্ঘূম রাত কাটাতে হচ্ছে তাকে। সরকারের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পে শতশত ঘর নির্মাণ করা হলেও তার ভাগ্যে জোটেনি একটি সরকারি ঘর। বিদ্যমান পরিস্থিতে একেবারই থমকে গেছে জীবনযাত্রা। অসুখ-বিসুখে সেবাদানে রেনু বালার পাশে নেই কেউ।
স্থানীয় বাসিন্দা রতন মিয়া ও বকুল রানীসহ আরও অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে জাগো২৪.নেট-কে বলেন, রেনু বালা অত্যন্ত গরীব। অনেক সচ্ছল মানুষ সরকারি ঘর পেলেও তার ভাগ্যে জোটে সেই ঘর।
সুবিধাবঞ্চিত এই ভূমিহীন রেনু বালা কান্নাজড়িত কণ্ঠে জাগো২৪.নেট-কে বলেন, অনেক দুঃখ-কষ্টে দিনপার করছি। একটি সরকারি ঘরের জন্য জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কাজ হয়নি। আমাকে একটি ঘর দিলে শেষ বয়সে হয়তো শান্তিতে ঘুমাতে পারতাম।
এ বিষয়ে তারাপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লেবু জাগো২৪.নেট-কে বলেন, রেনু বালা একেবারেই অসহায় একজন নারী। সুযোগ-সুবিধা আসলে তাকে ঘর দেয়া হবে।
বিপুল ইসলাম আকাশ, করেসপন্ডেন্ট জাগো২৪.নেট, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) 























