শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্কুল মাঠে হাঁটু পানি, জাল দিয়ে মাছ শিকার

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভরতখালী উচ্চ বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়ের বেশ কিছু শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষাগ্রহণে হয়েছেন ডেপুটি স্পিকারসহ বিসিএস প্রশাসন। আর সামান্য বৃষ্টি হলেই সেই বিদ্যালয়ে মাঠে জমে থাকে হাঁটু পানি। এতে শিক্ষার্থীদের পাঠগ্রহণ ব্যাহত হলেও এই মাঠে জাল দিয়ে মাছ ধরতে মেতে ওঠেছে মাছপ্রেমি মানুষেরা।

সোমবার (১ আগস্ট) দুপুরে ভরতখালি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দেখা যায় থৈ-থৈ পানির ঢেউ । শ্রেণি কক্ষে পাঠদান অব্যাহত থাকলেও স্থানীয় মানুষেরা স্কুলমাঠে জাল দিয়ে মাছ শিকারে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।

জানা গেছে, মকবুলার রহমানের নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি ১৯৪০ সালে ভরতখালি উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর থেকে পাঠদান পরিচালিত হয়ে আসছে। বর্তমানে প্রায় ৬০০ শিক্ষার্থী অধ্যায়ন রয়েছে। এরই মধ্যে বিদ্যালয়ের মাঠটি বৃষ্টি হলেই প্লাবিত হয়ে জলাশয়ে পরিণত হয়। মাঠটি হাঁটু পানির নিচে থাকায় স্কুল খুললেও খেলাধুলা ও যাতায়াতে শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। শ্রেণি কক্ষে যাওয়া-আসার সময় শিক্ষার্থীদের কাপড় ভিজে যাচ্ছে। ভেজা কাপড়ে তাদের অস্বস্তিতে ক্লাসে বসে থাকতে হচ্ছে। বিদ্যালয়টির পুরো মাঠ পানিতে থৈথৈ করছে। অনেক শিক্ষার্থী তাদের প্যান্ট হাঁটু পর্যন্ত গুটিয়ে শ্রেণি কক্ষে যাওয়া-আসা করছে। তাই বৃষ্টির পানি জমে থাকলেও নেই নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা।

মেহেদী হাসান, লিমন মিয়া ও সুজন সরকারসহ আরও অনেক শিক্ষার্থী জানায়, মাঠে পানি জমে থাকায় একদিকে ক্লাসের পড়া-লেখায় মনোযোগি হতে পারছে না। অন্যদিকে দিনের পর দিন এভাবে ভেজার কারণে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ছে।

বিদ্যালয়টির সাবেক ছাত্র বিজয় কুমার জাগো২৪.নেট-কে বলেন, এ প্রতিষ্ঠানে প্রতি বছরে যা আয় হয়, কোথায় যেন তা হাওয়া হয়ে যায়। পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা না নেওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতে মাঠে হাঁটু পানি জমে শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। বর্তমানে শিক্ষার পরিবেশ ও মান এতটাই নিম্নমুখি যাতে করে অভিভাবকসহ সুধীজনরা হতাশ !

ভরতখালি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম মন্ডল জানান, প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে স্কুল মাঠে পানি জমে যায়। পানি বের হওয়ার কোনো পথ না থাকায় মাঠে পানি জমে থাকে। এ বিষয়ে একটি প্রকল্প গ্রহণের জন্য এলজিডিতে চেষ্টায় ব্যর্থ হয়েছেন বলে জানান এই প্রধান শিক্ষক।

বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা মরহুম মকবুলার রহমানের নাতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান  শামছুল আজাদ শীতল জাগো২৪.নেট-কে  জানান , প্রতিষ্ঠানের চারপাশে বসতবাড়ি ও বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করায় স্কুল মাঠটি নিচু হয়েছে। কোন পাশে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই। এ কারণে সামান্য বৃষ্টিতে পানি জমে থাকে।

তিনি আরও বলেন, বিদ্যালয়টির পানি বের করে দেওয়ার জন্য কয়েক বছর আগে একটি অপরিকল্পিত ড্রেন নির্মাণ করা হয়। কিন্তু সেটি কাজে আসছে না। এই প্রতিষ্ঠান মাঠের পানি সরাতে পরিকিল্পত ড্রেনেজ ব্যবস্থা দরকার।

সাঘাটা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আজিজুল ইসলাম জাগো২৪.নেট-কে বলেন, ওই প্রতিষ্ঠান মাঠে পানি জমে থাকার বিষয়টি জানা নেই। প্রধান শিক্ষক সাহেব আবেদন করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।

জনপ্রিয়

স্কুল মাঠে হাঁটু পানি, জাল দিয়ে মাছ শিকার

প্রকাশের সময়: ০৩:৪৯:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ অগাস্ট ২০২২

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভরতখালী উচ্চ বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়ের বেশ কিছু শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষাগ্রহণে হয়েছেন ডেপুটি স্পিকারসহ বিসিএস প্রশাসন। আর সামান্য বৃষ্টি হলেই সেই বিদ্যালয়ে মাঠে জমে থাকে হাঁটু পানি। এতে শিক্ষার্থীদের পাঠগ্রহণ ব্যাহত হলেও এই মাঠে জাল দিয়ে মাছ ধরতে মেতে ওঠেছে মাছপ্রেমি মানুষেরা।

সোমবার (১ আগস্ট) দুপুরে ভরতখালি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দেখা যায় থৈ-থৈ পানির ঢেউ । শ্রেণি কক্ষে পাঠদান অব্যাহত থাকলেও স্থানীয় মানুষেরা স্কুলমাঠে জাল দিয়ে মাছ শিকারে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।

জানা গেছে, মকবুলার রহমানের নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি ১৯৪০ সালে ভরতখালি উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর থেকে পাঠদান পরিচালিত হয়ে আসছে। বর্তমানে প্রায় ৬০০ শিক্ষার্থী অধ্যায়ন রয়েছে। এরই মধ্যে বিদ্যালয়ের মাঠটি বৃষ্টি হলেই প্লাবিত হয়ে জলাশয়ে পরিণত হয়। মাঠটি হাঁটু পানির নিচে থাকায় স্কুল খুললেও খেলাধুলা ও যাতায়াতে শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। শ্রেণি কক্ষে যাওয়া-আসার সময় শিক্ষার্থীদের কাপড় ভিজে যাচ্ছে। ভেজা কাপড়ে তাদের অস্বস্তিতে ক্লাসে বসে থাকতে হচ্ছে। বিদ্যালয়টির পুরো মাঠ পানিতে থৈথৈ করছে। অনেক শিক্ষার্থী তাদের প্যান্ট হাঁটু পর্যন্ত গুটিয়ে শ্রেণি কক্ষে যাওয়া-আসা করছে। তাই বৃষ্টির পানি জমে থাকলেও নেই নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা।

মেহেদী হাসান, লিমন মিয়া ও সুজন সরকারসহ আরও অনেক শিক্ষার্থী জানায়, মাঠে পানি জমে থাকায় একদিকে ক্লাসের পড়া-লেখায় মনোযোগি হতে পারছে না। অন্যদিকে দিনের পর দিন এভাবে ভেজার কারণে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ছে।

বিদ্যালয়টির সাবেক ছাত্র বিজয় কুমার জাগো২৪.নেট-কে বলেন, এ প্রতিষ্ঠানে প্রতি বছরে যা আয় হয়, কোথায় যেন তা হাওয়া হয়ে যায়। পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা না নেওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতে মাঠে হাঁটু পানি জমে শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। বর্তমানে শিক্ষার পরিবেশ ও মান এতটাই নিম্নমুখি যাতে করে অভিভাবকসহ সুধীজনরা হতাশ !

ভরতখালি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম মন্ডল জানান, প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে স্কুল মাঠে পানি জমে যায়। পানি বের হওয়ার কোনো পথ না থাকায় মাঠে পানি জমে থাকে। এ বিষয়ে একটি প্রকল্প গ্রহণের জন্য এলজিডিতে চেষ্টায় ব্যর্থ হয়েছেন বলে জানান এই প্রধান শিক্ষক।

বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা মরহুম মকবুলার রহমানের নাতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান  শামছুল আজাদ শীতল জাগো২৪.নেট-কে  জানান , প্রতিষ্ঠানের চারপাশে বসতবাড়ি ও বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করায় স্কুল মাঠটি নিচু হয়েছে। কোন পাশে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই। এ কারণে সামান্য বৃষ্টিতে পানি জমে থাকে।

তিনি আরও বলেন, বিদ্যালয়টির পানি বের করে দেওয়ার জন্য কয়েক বছর আগে একটি অপরিকল্পিত ড্রেন নির্মাণ করা হয়। কিন্তু সেটি কাজে আসছে না। এই প্রতিষ্ঠান মাঠের পানি সরাতে পরিকিল্পত ড্রেনেজ ব্যবস্থা দরকার।

সাঘাটা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আজিজুল ইসলাম জাগো২৪.নেট-কে বলেন, ওই প্রতিষ্ঠান মাঠে পানি জমে থাকার বিষয়টি জানা নেই। প্রধান শিক্ষক সাহেব আবেদন করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।