বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাড়ছে আলু চাষের আগ্রহ, বীজ সংকটে কৃষক  

তোফায়েল হোসেন জাকির: অস্থির পণ্য বাজারে গাইবান্ধা জেলায় অন্যান্য নিত্যপণ্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েই চলছে আলুর দামও। বর্তমানে প্রতিকেজি খাবার আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা দরে। তাই এ বছরে অধিক লাভের স্বপ্নে কৃষকরা ঝুঁকছেন এই চাষাবাদে। ইতোমধ্যে কেউ করছেন জমি প্রস্তুত, আবার কেউ কেউ আলু রোপণও শুরু করেছেন। তবে বীজের সংকটের কারণে কৃষক অতিরিক্ত দামে কিনছেন আলু বীজ। এর ফলে চাষাবাদে চরম হিমসিমে পড়ছেন তারা।

সম্প্রতি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ ও সাদুল্লাপুরসহ জেলার প্রত্যান্ত অঞ্চলে ঘুরে দেখা গেছে কৃষকদের আলু চাষাবাদের দৃশ্য। তারা জমি প্রস্তুতসহ বীজ রোপণে চরম ব্যস্ত সময় পার করছেন।

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানিয়েছে, চলতি রবি মৌসুমে জেলার ৭ উপজেলায় ১০ হাজার ৩১৮ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এরই মধ্যে প্রায় ৭৫০ হেক্টর অর্জিত হয়েছে। আর গত বছরে আলু আবাদ হয়েছিল ৯ হাজার ৫৯০ হেক্টর। তবে চলতি মৌসুমের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে এতে প্রায় ২ লাখ ৪৯ হাজার ৩৪০ মেট্রিকটন আলু উৎপাদন হতে পারে। এ থেকে জেলায় বার্ষিক চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ১৫১ মেট্রিকটন।

ওই বিভাগটি আরও জানায়, চলতি মৌসুমের জন্য ১৫ হাজার ৯০০ মেট্রিকটন আলু বীজ মজুদ রাখা হয়। এর মধ্যে সোমবার (৩০ অক্টোবর) পর্যন্ত ৫ হাজার ৬৪২ মেট্রিকটন বীজ রোপণ করা হয়েছে। তবে কৃষকের মোট চাহিদা রয়েছে ১৭ হাজার ২৪ মেট্রিকটন।

জানা যায়, গেল খরিপ মৌসুম থেকে আলুসহ শাক-সবজির দামবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তাই চলতি রবি মৌসুমে আলু চাষাবাদে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে অনেকটাই। তবে এ বছরে স্থানীয়ভাবে বীজের সংকট থাকায় মুন্সীগঞ্জ জেলা থেকে বেশি দামে বীজ সংগ্রহ করছে প্রান্তিক কৃষক। সেই সঙ্গে সার-কিটনাশক ও অন্যান্য কৃষি উপকরণের দাম বেশি থাকায় আলু চাষে হিমসিম খাচ্ছেন বলে তাদের অভিযোগ। তবুও লাভের আশায় মাঠে ঘাম ঝড়াচ্ছেন তারা। বিশেষ করে জেলার সাদুল্লাপুর ও গোবিন্দগঞ্জ এলাকায় ব্যাপক চাষাবাদের দৃশ্য দেখা গেছে।

ধাপেরহাট এলাকার কৃষক আব্দুল লতিফ উদ্দিন জাগো২৪.নেট-কে বলেন, আলু চাষের জন্য ইতোমধ্যে সাড়ে ৩ বিঘা জমি প্রস্তুত করেছি। এতে প্রায় ৯৫০ কেজি বীজের দরকার। স্থানীয়ভাবে বীজের সংকট থাকায় মুন্সীগঞ্জ জেলা থেকে অধিক দামে বীজ সংগ্রহ করছি।

গোবিন্দগঞ্জের কৃষক মাসুদ রানা বলেন, গত বছর এক একর জমিতে আলু চাষ করে লাভবান হয়েছি। এ বছরের খাবার আলুর দাম ভালো থাকায় চলতি মৌসুমে দেড় একর জমিতে বীজ রোপণ শুরু করেছি। এতে প্রতিবিঘা খরচ হবে প্রায় ২২ থেকে ২৫ হাজার টাকা। ফলন ভালো হলে বিঘায় ৮০ থেকে ৮৫ মণ উৎপাদন সম্ভব।

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক খোরশেদ আলম জাগো২৪.নেট-কে বলেন, চলতি রবি মৌসুমে আলু বীজের কোন সংকট নেই। কৃষকদের আগ্রহ অনুযায়ী আমরা যেসব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি তা ছেড়ে যেতে পারে। ফলন ভালো পেতে তাদের সর্বাত্নকভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে।

জনপ্রিয়

বাড়ছে আলু চাষের আগ্রহ, বীজ সংকটে কৃষক  

প্রকাশের সময়: ০৭:৪২:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৩

তোফায়েল হোসেন জাকির: অস্থির পণ্য বাজারে গাইবান্ধা জেলায় অন্যান্য নিত্যপণ্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েই চলছে আলুর দামও। বর্তমানে প্রতিকেজি খাবার আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা দরে। তাই এ বছরে অধিক লাভের স্বপ্নে কৃষকরা ঝুঁকছেন এই চাষাবাদে। ইতোমধ্যে কেউ করছেন জমি প্রস্তুত, আবার কেউ কেউ আলু রোপণও শুরু করেছেন। তবে বীজের সংকটের কারণে কৃষক অতিরিক্ত দামে কিনছেন আলু বীজ। এর ফলে চাষাবাদে চরম হিমসিমে পড়ছেন তারা।

সম্প্রতি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ ও সাদুল্লাপুরসহ জেলার প্রত্যান্ত অঞ্চলে ঘুরে দেখা গেছে কৃষকদের আলু চাষাবাদের দৃশ্য। তারা জমি প্রস্তুতসহ বীজ রোপণে চরম ব্যস্ত সময় পার করছেন।

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানিয়েছে, চলতি রবি মৌসুমে জেলার ৭ উপজেলায় ১০ হাজার ৩১৮ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এরই মধ্যে প্রায় ৭৫০ হেক্টর অর্জিত হয়েছে। আর গত বছরে আলু আবাদ হয়েছিল ৯ হাজার ৫৯০ হেক্টর। তবে চলতি মৌসুমের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে এতে প্রায় ২ লাখ ৪৯ হাজার ৩৪০ মেট্রিকটন আলু উৎপাদন হতে পারে। এ থেকে জেলায় বার্ষিক চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ১৫১ মেট্রিকটন।

ওই বিভাগটি আরও জানায়, চলতি মৌসুমের জন্য ১৫ হাজার ৯০০ মেট্রিকটন আলু বীজ মজুদ রাখা হয়। এর মধ্যে সোমবার (৩০ অক্টোবর) পর্যন্ত ৫ হাজার ৬৪২ মেট্রিকটন বীজ রোপণ করা হয়েছে। তবে কৃষকের মোট চাহিদা রয়েছে ১৭ হাজার ২৪ মেট্রিকটন।

জানা যায়, গেল খরিপ মৌসুম থেকে আলুসহ শাক-সবজির দামবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তাই চলতি রবি মৌসুমে আলু চাষাবাদে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে অনেকটাই। তবে এ বছরে স্থানীয়ভাবে বীজের সংকট থাকায় মুন্সীগঞ্জ জেলা থেকে বেশি দামে বীজ সংগ্রহ করছে প্রান্তিক কৃষক। সেই সঙ্গে সার-কিটনাশক ও অন্যান্য কৃষি উপকরণের দাম বেশি থাকায় আলু চাষে হিমসিম খাচ্ছেন বলে তাদের অভিযোগ। তবুও লাভের আশায় মাঠে ঘাম ঝড়াচ্ছেন তারা। বিশেষ করে জেলার সাদুল্লাপুর ও গোবিন্দগঞ্জ এলাকায় ব্যাপক চাষাবাদের দৃশ্য দেখা গেছে।

ধাপেরহাট এলাকার কৃষক আব্দুল লতিফ উদ্দিন জাগো২৪.নেট-কে বলেন, আলু চাষের জন্য ইতোমধ্যে সাড়ে ৩ বিঘা জমি প্রস্তুত করেছি। এতে প্রায় ৯৫০ কেজি বীজের দরকার। স্থানীয়ভাবে বীজের সংকট থাকায় মুন্সীগঞ্জ জেলা থেকে অধিক দামে বীজ সংগ্রহ করছি।

গোবিন্দগঞ্জের কৃষক মাসুদ রানা বলেন, গত বছর এক একর জমিতে আলু চাষ করে লাভবান হয়েছি। এ বছরের খাবার আলুর দাম ভালো থাকায় চলতি মৌসুমে দেড় একর জমিতে বীজ রোপণ শুরু করেছি। এতে প্রতিবিঘা খরচ হবে প্রায় ২২ থেকে ২৫ হাজার টাকা। ফলন ভালো হলে বিঘায় ৮০ থেকে ৮৫ মণ উৎপাদন সম্ভব।

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক খোরশেদ আলম জাগো২৪.নেট-কে বলেন, চলতি রবি মৌসুমে আলু বীজের কোন সংকট নেই। কৃষকদের আগ্রহ অনুযায়ী আমরা যেসব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি তা ছেড়ে যেতে পারে। ফলন ভালো পেতে তাদের সর্বাত্নকভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে।