দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধার ৫টি আসনে ৩৫ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আসন্ন এই নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে গাইবান্ধা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা পদক্ষেপ ও প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
সম্প্রতি গাইবান্ধা জেলা তথ্য অফিসার হৃদয় মাহমুদ চয়নের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্বাচনে আচরণবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে জেলায় মোট ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। তারা এ পর্যন্ত ১৯৫টি মামলায় ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছেন। নির্বাচনকালীন দায়িত্ব পালনের জন্য ইতোমধ্যে আরও ১৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচনে গাইবান্ধা জেলায় আরও ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পদায়নের দাবি জানানো হয়েছে। এরই মধ্যে সাঘাটায় গাইবান্ধা-৫ আসনের এক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পক্ষ থেকে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে বৈঠকের আয়োজন করা হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাঘাটা তা বন্ধ করে দেন। একইভাবে নৈশভোজের জন্য গাইবান্ধা-৪ আসনের নৌকা প্রতীকের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়েছে।
এছাড়া নির্বাচনকালীন সময়ে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করতে ইতিমধ্যেই জেলায় বিজিবির ২৩ প্লাটুন মোতায়েন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তারা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে ইতোমধ্যে তৎপরতা শুরু করেছে। আরএআর-এর ১০টি দল মাঠে রয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব জেলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও ব্যাটালিয়ন আনসার অভিযান শুরু করবে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসারদের সাথে তাদের গুরুত্বের উপর নির্ভর করে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ জন জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হবে। এই বাহিনীর বাইরের পুলিশ সদস্যরা ভোটের দিন মোবাইল ফোর্স-স্ট্রাইকিং হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
ইতোমধ্যে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে। সকল উপজেলার প্রতিটি প্রশিক্ষণে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন এবং নিরপেক্ষ, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতি তাদের বিশ্বাস পুনর্ব্যক্ত করেন এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা গাইবান্ধার প্রিজাইডিং অফিসারদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন এবং প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় করে সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতি আস্থা প্রকাশ করেন এবং সংশ্লিষ্ট আইনের নির্দেশনা দেন।
এদিকে, নির্বাচন-পূর্ব অনিয়ম প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে সরকারী গেজেটে নির্বাচনী ফলাফল প্রকাশ পর্যন্ত গাইবান্ধা জেলার ৫টি আসনে ৫টি নির্বাচনী তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গঠিত সার্চ কমিটি ইতিমধ্যেই আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে বিভিন্ন প্রার্থীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে সার্বক্ষণিক সজাগ দৃষ্টিতে নির্বাচনী পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে নির্বাচন-পূর্ব অনিয়ম প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে নির্বাচন তদন্ত কমিটি।
গাইবান্ধা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল মোত্তালিব বলেন, জেলার ৫ টি আসনে ৬৪৬ টি ভোট কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এতে ভোটকক্ষ রয়েছে ৪ হাজার ৪২৩টি। এই ৫টি আসনে ২০ লাখ ৫২ হাজার ৬৯৮টি ভোটার রয়েছে। এর মধ্যে গাইবান্ধা-১ আসনে ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৪৪, গাইবান্ধা-২ আসনে ৩ লাখ ৯১ হাজার ৯৬৯, গাইবান্ধা-৩ আসনে ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৮৭৬, গাইবান্ধা-৪ আসনে ৪ লাখ ৩৯ হাজার ৯২৪ ও গাইবান্ধা-৫ আসনে ৩ লাখ ৬২ হাজার ৮৮৫ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
এ বিষয়ে গাইবান্ধা জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ পর্যবেক্ষণ ও ব্যবস্থা নিতে ইতোমধ্যে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও সম্মানিত নাগরিকদের সমন্বয়ে একটি ভিজিল্যান্স টিম গঠন করা হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সময়ে সময়ে ব্যবস্থা নিচ্ছে গঠিত দলটি।
তোফায়েল হোসেন জাকির, জাগো২৪.নেট 





















