তোফায়েল হোসেন জাকির: গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপেরহাট ইউনিয়নটি হলুদের রাজ্য হিসেবে পরিচিত। এখানকার উৎপাদিত শুকনো হলুদগুলো গুড়া করার আগেই মেশিনে পরিস্কার করতে হয়। এমনি একটি শ্যালো চালিত মেশিন স্থাপন করা হয়েছে বড় ছত্রগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে। আর এই মেশিনের বিকট শব্দ ও ধুলায় চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে ব্যহত হচ্ছে পাঠদান।
সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে এমনি এক চিত্র দেখা গেছে- ধাপেরহাট ইউনিয়নের ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। এ স্কুলটির পাশেই হলুদ ঝাড়া মেশিন স্থাপন করেছেন বড় ছত্রগাছা গ্রামের মৃত সদিয়াজ্জামানের ছেলে শফিকুল ইসলাম। তার এই বানিজ্যিক মেশিনের বিকট শব্দ আর ধুলাতে এলাকার চারপাশের পরিবেশ হুমকির মুখে পড়েছে। সেই সঙ্গে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
স্থানীয়রা জানায়, প্রায় ৩ বছর আগে শফিকুল ইসলাম নামের এক অসাধু ব্যক্তি বানিজ্যিকভাবে ওই স্থানে হলুদ পরিস্কার করা জন্য একটি শ্যালো চালিত মেশিন বসান। এলাকার কৃষকদের উৎপাদন করা শুকনো হলুদগুলো এ মেশিনে পরিস্কার করে নিয়ে থাকেন। তারপর তারা অন্যত্র নিয়ে গুড়া করেন। কিন্তু জনবসতিপূর্ণ এলাকায় ও বিদ্যালয়ের পাশে অবৈধভাবে মেশিন বসিয়ে হলুদ ঝাড়া কাজ চলছে। এসময় বিকট শব্দ ও ধুলোয় অন্ধকার হয় রাস্তঘাট এবং আশপাশ ঘরবাড়ি। বিশেষ করে চরম বেকায়দায় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিন ধরে এই মেশিন চলায় পরিবেশ দূষিতসহ শিশু ও বয়স্করা নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।

হলুদ ঝাড়া মেশিনের কারণে আমাদের বিদ্যালয়ে খুব ধুলা ও শব্দ। পাঠগ্রহণে মন বসেনা। মাঠে খেলতে পারি না। আর মেশিনের অধিক ধুলায় ক্লাসের বেঞ্চে বসা দুস্কর বলে জানায় ওই স্কুলের চুতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্র।
এক অভিভাবক বলেন, বড় ছত্রগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের পদচারণ মুখরিত ছিলো। এরই মধ্যে কথিত শফিকুল ইসলাম কর্তৃক হলুদ পরিস্কারের শ্যালো মেশিনের বিকট শব্দ ও হলুদের ধুলায় বর্তমানে অনেক শিক্ষার্থীই অনুপস্থিত থাকছে।
বড় ছত্রগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ এম সাজু মিয়া জাগো২৪.নেট-কে জানান, তাদের স্কুলে ১২০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। স্কুল চলাকালীন সময় ওই মেশিনটি যখন চালু করে তখন বিকট শব্দে পাঠদান করা যায় না। তারপরও করানোর চেষ্টা করা হলে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ থাকে না। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি দরকার।
ক্লাস্টারের সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা ননী গোপাল বলেন, বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
সাদুল্লাপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) খায়রুল ইসলাম জাগো২৪.নেট-কে বলেন, ওই বিদ্যালয়ের পাশে হলুদ ঝাড়া মেশিনের বিকট শব্দের ব্যাপারটি জানা নেই। প্রধান শিক্ষকের লিখিত অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তোফায়েল হোসেন জাকির, জাগো২৪.নেট 























