কবিতা: কতো গুলো স্বপ্নের অপমৃত্যু
সাবরিনা জাহান
আমার হাড়ভাঙা খাটুনী-বিন্দু বিন্দু ঘামে শরীরের গাঁট ছাড়া নিঃশেষিত জলের কণাগুলো ক্রমাগত শোষণ করে ভিখারির দল।
রক্ত শুষে গড়ে তোলে আগামীর পুঁজিবাদ,
গড়ে অর্থনীতি,গড়ে স্বচ্ছল শতাব্দী।
আমি ভাঙা কুলার উচ্ছিষ্ট পদার্থ মাত্র,
বিতর্কের আবহাওয়ায় বসবাস করা নিয়ম বর্হিভূত পথের অনিয়মিত পথচারী,
হাতে-ঘাতে নিয়ন্ত্রিত।
লুডুর ছক্কা,দাবাড় গুটি আমি,
আমি প্রজন্মের প্রজন্মান্তরে বিলিন হওয়া মানবতা,
আমি জীর্ণ-সহায়হীন জনতা,আমি অদূর গাঁয়ের খেটে খাওয়া প্রজাতন্ত্র, যার দুশ্চিন্তায় আকাশ ফুঁসে-
সেবার ব্রতে প্রতিযোগিতা করে কণ্ঠযোদ্ধারা।
আজীবন রক্তে ভেজা হৃদপিণ্ড আমার,
নির্বিকারে প্রশংসিত ক্ষতের দিকে তাকিয়ে কষ্ট মুছি আহত মানসিকতার।
আলোকস্তম্ভের মতো ভেঙে গুড়িয়ে যেতে মূর্খতায় পরিপূর্ণ গণতন্ত্র নিয়ে মসনদ সাজাই ধুয়ে মুছে।
স্বপ্ন দেখি ছাপ্পান্ন হাজার বর্গ মাইল আঁকড়ে বট,শিমুল,পাইকড়ের মতো প্রজাতি ভেদে বাঁচবার।
স্বপ্ন দেখি শোষকের পেষণশালা ভাঙ্গার,
সবুজের সীমানা মাড়িয়ে ভূলুণ্ঠিত শোষিতের দুর্গ গড়ার।
প্রলয় প্রহরে পদচিহ্নগুলো আমার আমৃত্যু তৃষ্ণার্ত থাকে কপোতাক্ষের জ্বলের জন্য।
যুগে যুগে অকৃতজ্ঞতার খেয়ালে জন্ম নেয়া মীরজাফরের বলির পাঁঠা আমি,
আমি সবখানে পিষ্ট, আমি দোষী এক ধরাধামবাসী।
স্বপ্ন দেখি ন্যায়ের রাজ্যে অন্যায় জাহির করতে কেউ বসবেনা এজলাসে ধোয়া তুলসীর মতন বারংবার।
স্বপ্নে বিভোর হই ভাগ্য বদলের আওড়ানো বুলিতে,
অস্তিত্বের সংকটে আশাহত আমি অভিশপ্ত হই প্রতিনিয়ত।
দ্বিধা সন্ত্রোসে ঘটে অপ্রচলিত কতগুলো স্বপ্নের অপমৃত্যু,
দাঁড়কাক ঠোকরানো কতগুলো আকাঙ্ক্ষার।
আমি তিক্ত সমকালীন বেদনা লুকিয়ে মুখভর্তি হাসি দিয়ে।
বিশ্বাসঘাতকতার দুষ্টচক্রে আবদ্ধ হয়ে থাকি
ব্যর্থতা নিয়ে নিঃশর্তে দমবন্ধ হওয়া নীরব দাবানলে।
সাবরিনা জাহান 

























