তোফায়েল হোসেন জাকিরঃ কলা মোচায় রয়েছে অধিক পুষ্টিগুণ। গ্রামাঞ্চলের অনেকে এ সম্পর্কে অজ্ঞাত। তবে এটি তরকারি হিসেবে অধিকাংশ মানুষের প্রিয় খাবার। হাট-বাজারে কিনতে না পাওয়ায় তারা এখনও কলার মোচা’র খোঁজে ছুটেন গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে।
বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে গাইবান্ধার সাঘাটা এলাকার একটি গ্রামীণ মেঠো পথের ধারে কলাগাছে ঝুলতে দেখা যায় এই মোচা-টি। এসময় লাঠির মাথায় কাস্তে লাগিয়ে কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছেলেন রহিমা বেওয়া নামের এক গৃহবধূ।
জানা যায়, একসময় গাইবান্ধার প্রত্যান্ত অঞ্চলের বাড়ি উঠানে বা রাস্তার ধারে সারিবদ্ধভাবে রোপন করা হতো কলাগাছের চারা। এ চারাগুলো বড়ো হয়ে বেড় হতো কলার মোচা। এ মোচা থেকে পাওয়া যেতো কলা। আর কলার ছড়ির নিচে ঝুলে থাকতো মোচা। এ মোচাটি খাওয়া হতো তরকারি হিসেবে। অনন্য স্বাদের এ তরকারি ছিল সবার প্রিয়। কিন্তু কালের বিবর্তনে এখন আর অহরহ চোখে পড়ে না কলাগাছ। ফলের কলা মোচা’র স্বাদের টানে অনেকে খুঁজে বেড়ান এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তরে।
এই মোচা সম্পর্কে একাধিক চিকিৎসক জানিয়েছেন, কলার মোচা অতিরিক্ত রক্তস্রাব নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখে। দই দিয়ে কলার মোচা রান্না করে খেলে শরীরের প্রোজেস্টেরন হরমোনের নিঃসরণ ঘটিয়ে রক্তক্ষরণ কমাতে পারে। এ কারণেই নারীর খাদ্য তালিকায় কলার মোচা রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
কলার মোচাতে রয়েছে ফাইবার, যাতে উচ্চ মাত্রার লৌহ উপাদান থাকে এবং লোহিত কণিকার উৎপাদন বাড়ায়। এতে করে হিমোগ্লোবিন এর মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে নিয়মিত কলার মোচা খেলে রক্তে চিনির মাত্রা কমে ও ইনসুলিন এর মাত্রা ঠিক থাকে। অর্থাৎ ডায়াবেটিস ও রক্তশূন্যতা দূর করতে কলার মোচা বেশ উপকারী।
উচ্চ মাত্রার ম্যাগনেসিয়াম কলার মোচায় থাকে। যা বিষন্নতা দূর করে মেজাজ ভালো রাখতে সাহায্য করে। অর্থাৎ মনের বিষন্নতা কে দূর করে মনের উৎফুল্লতা ফিরিয়ে আনতে কলার মোচা উপকারী।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. শাহীনুল ইসলাম মণ্ডল জাগো২৪.নেট-কে বলেন, কলার মোচার ইথানল-যুক্ত উপকরণ প্যাথজেনিক ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে কাজ করে। এ কারণে কলার মোচা সংক্রমণ প্রতিরোধেও কার্যকর। নতুন জন্ম দেওয়া মায়েদের জন্য কলার মোচা বেশ উপকারী। কারণ কলার মোচা মাতৃদুগ্ধ তৈরিতে ভূমিকা রাখে।
তোফায়েল হোসেন জাকির, জাগো২৪.নেট 
























