নদীবেষ্টি জেলা গাইবান্ধা। এ জেলার বুক চিড়ে বয়ে গছে তিস্তা-ব্রহ্মপুত্র ও করতোয়াসহ অসংখ্য নদ-নদী। দীর্ঘদিন ধরে খনন কাজ না করায় নাব্যতা সংকটের পড়েছে নদীগুলো। যার কারণে তিস্তামুখ ঘাটের ব্রহ্মপুত্র নদী এখন মরা নদীতে পরিণত হয়েছে।
সম্প্রতি গাইবান্ধার কামারজানি ঘাট ও বালাসীঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে দেখা গেছে নদীগুলো নাব্যতা সংকটের কারণে নানা সমস্যার দৃশ্য।
ইতিমধ্যেই সবগুলো নদ-নদীর সংযোগ খাল শুকিয়ে গেছে। পৌষের শুরুতেই অধিকাংশ নদী শুকিয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে সে সকল নৌরুটের নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থা। নদীতে পানি না থাকায় এ এলাকার হাট-বাজারে দেশী মাছের সংকট দেখা দিয়েছে। জল পথে পণ্য পরিবহনে খরচ কম হলেও বর্তমান সময়ে এ এলাকার প্রায় সব জলপথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অধিক খরচে ব্যবসায়ীদের স্থল পথে পণ্য পরিবহন করতে হচ্ছে।
গাইবান্ধা জেলায় নদ-নদীর প্রকৃত সংখ্যা সরকারিভাবে এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। দেশের অপরাপর জেলার মতোই গাইবান্ধা জেলার অবস্থা। এ জেলায় ছোট-বড় নদ-নদীর সংখ্যা প্রায় ২০ টি হবে বলে ধারণা করছে স্থানীয়রা। গাইবান্ধার নদীগুলোকে আলাদাভাবে পরিচিত করার কোনো উদ্যোগ কখনোই গ্রহণ করা হয়নি।
জানা যায়, গাইবান্ধার ওপর দিয়ে বাংলাদেশের অনেক নদীর পানি প্রবাহিত হয়। দেশের সবচেয়ে বেশি পানি বহন করে ব্রহ্মপুত্র। কুড়িগ্রাম দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করার পর গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে তিস্তা নদীর সঙ্গে মিলিত হয়। তিস্তা এবং ব্রহ্মপুত্র এ দুটি নদীর পানি একসঙ্গে মিলিত হয়ে যমুনা দিয়ে ভাটিতে প্রবাহিত হয়ছে।
গাইবান্ধা জেলা যেহেতু সীমান্তবর্তী জেলা নয় তাই এখানে আন্তঃসীমান্তীয় নদ-নদীর সংখ্যা খুবই কম। তিস্তা এবং ব্রহ্মপুত্র এ দুটি শুধু আন্তঃসীমান্ত নদী। তিস্তার তিনটি শাখা নদী এ জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। ঘাঘট নদ গাইবান্ধা জেলা শহরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত। শহরের অংশে পুরনো প্রবাহ বন্ধ করে দিয়ে কৃত্রিমভাবে আরেকটি প্রবাহ তৈরি করা হয়। যেটি শহরের পূর্বপ্রান্তে আবারও পুরনো ঘাঘটের সঙ্গেই মিলিত হয়েছে। ঘাঘট থেকে একটি শাখা প্রবাহিত হয়েছে। এই শাখা নদীটির নাম আলাই। করতোয়া নামের একটি নদী গাইবান্ধা জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। নদীটি পীরগঞ্জ উপজেলা হয়ে এ জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সন্নিকট দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। ঢাকা-রংপুর মহসড়ক এ নদীর ওপর দিয়ে চলে গেছে। গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নিকটেই খুলসী নামক একটিস্থান আছে। এই খুলসীর কাছে নদীটি তিনিটি নামে পরিচিত। কাটাখালী, বাঙ্গালী এবং করতোয়া। একটি খাল কেটে এ নদীর কোনো এক অংশে সংযোগ স্থাপন করা হয়েছিল বলে এ নদীটিকে কাটাখালী নামে ডাকা হয়।
স্থানীয় শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বর্তমানে গাইবান্ধার এসব নদ-নদীগুলো খনন না করায় পরিবেশ, কৃষি, ব্যবসা বানিজ্যসহ অর্থনীতির উপর এর প্রভাব পড়ছে।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জাগো২৪.নেট-কে জানান, ইতোমধ্যে কিছু নদ-নদী ড্রেজিং করা হয়েছে। আরও বিভিন্ন স্থানে কাজ শুরু করা হবে।
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, জাগো২৪.নেট 























