মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০২:১৭ অপরাহ্ন

১১তম স্ত্রীকে হারানোর ভয়ে দড়িতে বেঁধে ঘুরে বেড়ান নুর

নিউজ ডেস্ক, জাগো২৪.নেট
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
 দেড় দশক আগে অসুস্থ হয়ে মারা যান প্রথম স্ত্রী হাজেরা। প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর দেখা দেয় কিছুটা মানসিক সমস্যা। আবার সংসার শুরু করবেন বলে করেন বিয়ে। সেটিও টেকেনি। এভাবে এক এক করে আরও ১০ জনকে বিয়ে করেন। যাদের বেশির ভাগ নারীই হয় শারীরিক, নয়তো মানসিক প্রতিবন্ধী। তাদের ৯ জনই নুরকে ছেড়ে চলে গেছেন। সেই হারানোর ভয় থেকে ১১তম স্ত্রীকে নিজের শরীরের সঙ্গে দড়িতে বেঁধে নিয়ে ঘুরে বেড়ান নুর ইসলাম।
৭০ বছরের নুর ইসলামের বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার ভাইটকান্দি ইউনিয়নের ধারাকপুর উত্তরপাড়া গ্রামে। তার ১১তম স্ত্রীর নাম জান্নাত বেগম। ৩৫ বছর বয়সী জান্নাত মানসিক প্রতিবন্ধী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নুর ইসলামের প্রথম স্ত্রীর নাম হাজেরা খাতুন। ওই সংসারে এক ছেলে শেখ চান ও এক মেয়ে হুন্নি আক্তারকে নিয়ে সুখেই দিন কাটছিল তাদের দিন। প্রায় ১৫ বছর আগে হাজেরা খাতুন অসুস্থ হয়ে মারা যান। এরপর একমাত্র মেয়েকে বিয়ে দেন নুর ইসলাম। কিছুদিন পর স্বামী মারা যাওয়ায় মেয়েটি ফিরে আসেন নুরের কাছে। কয়েক বছর আগে একমাত্র ছেলেও মারা যান।
স্থানীয়রা জানান, প্রথম স্ত্রী হাজেরা খাতুন মারা যাওয়ার পর বিভিন্ন সময় মানসিক প্রতিবন্ধী বেশ কয়েকজন নারীকে বিয়ে করেন নুর ইসলাম। কিন্তু তারা কেউই তার সঙ্গে সংসার করেননি।
তারা জানান, বছরখানেক আগে ফুলপুর পৌরসভার আমুয়াকান্দা বাজারের জান্নাত নামের এক মানসিক প্রতিবন্ধীর সঙ্গে সংসার শুরু করেন নুর ইসলাম। এর পর থেকে জান্নাতকে ‘হারানোর ভয়ে’ সব সময় শিকল কিংবা রশি দিয়ে কোমরে বেঁধে ভিক্ষা করেন নুর।
স্থানীয় জয়নাল মিয়া নামে এক ব্যক্তি দৈনিক বাংলাকে জানান, জান্নাত বেগমের সঙ্গে নুর ইসলামের পরিচয় হয় বছরখানেক আগে। পরে জান্নাতকে নিজের বাড়িতে নিয়ে গেলে এলাকার লোকজন দুজনের মতামত নিয়ে বিয়ে করিয়ে দেন৷
তিনি বলেন, নিজের দুই শতাংশ জমির পাশে একটি ছাপড়া ঘরে স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন নুর ইসলাম। কলাপাতা, সুপারিপাতা, ছেঁড়া কাপড়, বস্তা ও কুড়িয়ে পলিথিন দিয়ে ঘরটি নির্মাণ করা হয়েছে। মানসিক কিছু সমস্যা থাকলেও জান্নাত ঠান্ডাপ্রকৃতির। তিনি রান্নাসহ স্বামীর সেবাযত্ন করেন।
নুর ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, বাঁধন ছেড়ে দিলে যেকোনো সময় আগের স্ত্রীদের মতো নিরুদ্দেশ হয়ে যেতে পারে জান্নাত, পরে খুঁজে পাবে না বলেই এভাবে স্ত্রীকে নিজের সঙ্গে বেঁধে ঘুরে বেড়ান।
তিনি বলেন, ‘আমার ঘরটা ভাঙাচোরা, অনেক কষ্ট করে থাকতে হয়৷ বৃষ্টি হলে বুকের ওপর পানি পড়ে।
বিষয়টি নিয়ে ভাইটকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর থেকেই নুর ইসলাম নিজেও কিছুটা মানসিক সমস্যায় ভুগতে শুরু করেন। এরপর নানা জায়গায় ঘুরে তার মতো নারীদের নিয়ে আসতেন বাড়িতে। এক বাড়িতে এভাবে বসবাস করা অশোভন বলে স্থানীয় মানুষ বিয়ে করিয়ে দিতেন।
তিনি বলেন, ‘ভিক্ষুক নুর ইসলাম এখন বয়সের ভারে ন্যুব্জ। ঘরের জন্য তার আবেদন করা আছে। বরাদ্দ এলে তাকে ঘর করে দেয়া হবে। তারা যেন সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হন সেদিকে নজর রয়েছে আমাদের। সুত্রঃ দৈনিক বাংলা

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | জাগো২৪.নেট

কারিগরি সহায়তায় : শাহরিয়ার হোসাইন