শিল্পী, সাগর, তমা ও তৌহিদ। সবাই তরুণ-তরুণী। বাবা-মায়ের সঙ্গে ঢাকায় বসবাস। ঈদের ছুটিতে একঘেয়ে জীবন ছেড়ে পৌঁছাছে গ্রামের বাড়িতে। এই ছুটির সময়গুলো উপভোগ করতে এসেছে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে। এ নদের দৃশ্য আর প্রকৃতির রূপে মুগ্ধ তারা। শুধু তারাই নয়, এখানে সকল বয়সের হাজারো বিনোদনপ্রেমি যেন প্রকৃতির মাঝে হারিয়েছে।
সরেজমিনে শনিবার (ঈদের দিন) ও রোববার (ঈদের পরদিন) গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের বালাসী ঘাট এলাকায় দেখা যায় ভ্রমণপিপাসুদের উপচেপড়া ভির। চিরচেনা দর্শনীয় এই স্থানে শিশু, তরুণ-তরুণীসহ নানান বয়সী মানুষেরা নৌকা-ঘোড়া গাড়ি ভ্রমণে চরাঞ্চল ঘুরে দেখতে মেতে ওঠেছে। ঈদ-উল ফিতরের ছুটিতে নৌবন্দর বালাসী ঘাটে ঢল নেমেছে দর্শনার্থীদের।
স্থানীয়রা জানায়, উত্তরের নদীবেষ্টিত জেলা গাইবান্ধা। নদীমাতৃক এই সুন্দর বাংলাদেশের দর্শনীয় স্থানের মধ্য ফলছড়ির এই বালাসী ঘাট। এখানে বিনোদনের জন্য কয়েকটি স্থান থাকলেও সেগুলোতে কৃত্রিম কিছু দেখা ছাড়া প্রকৃতির রূপ সৌন্দর্য তেমনটি চোখে পড়ে না। তাই ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে বালাসী ঘাটে ছুটছেন বিনোদনপ্রেমিরা। এখানে প্রকৃতির নির্মল বাতাস আর দৃশ্য দেখতে মনের আনন্দে ঘুরাঘুরিতে মাতোয়ারা হয়ে ওঠেছে।
এদিকে পবিত্র ঈদ-উল ফিতরকে কেন্দ্র করে নদীদে নামানো হয়েছে বেশ কিছু নৌকা। বালু চরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ঘোড়া গাড়ি। এসব বাহন যোগে বিভিন্ন বালুচরসহ এদিক-সেদিক ঘুরছে ভ্রমণপিপাসুরা। একই সঙ্গে নদীর দুপাড়ে ও চরাঞ্চলগুলোতে দর্শনার্থীদের পদচারণে মুখরিত হয়ে ওঠেছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের টানে বালাসী ঘাটে আগত উৎসুক বিনোদনপ্রেমিরা মুগ্ধ হচ্ছেন।
তামিয়া আক্তার তমা নামের এক তরুণী জানায়, বাবা-মায়ের চাকুরির সুবাদে ঢাকায় বসবাস। তাদের গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধার সাঘাটায়। ঈদের ছুটিতে আনন্দ উপভোগ করতে বালাসী ঘাটে আসা হয়। এখানে ঘুরে খুব ভালো লেগেছে এবং অনেকটা মুগ্ধ। যেন প্রকুতির রূপে মিশে যাওয়ার মতো।
তৌফিকুল ইসলাম তৌহিদ বলে, এখানে নৌযোগে ঘুরাঘুরি করলাম। বালুচরসহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরে প্রাণজুড়ে গেল। তবে বালাসীর এই স্থানে একটু বিশ্রামের জন্য বসার তেমন ব্যবস্থা নেই। সঙ্গে বাথরুমের ব্যবস্থা করা দরকার।
সাইফুল ইসলাম নামের এক চাকরিজীবি জানান, কর্ম ব্যস্ততার কারণে পরিবার নিয়ে ঘুরাঘুরির সময় কম হয় তার। তাই ঈদের ছুটিতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে এই বালাসী ঘাটে এসেছি।
নৌমাঝি খলিলুর রহমান বলেন, ঈদ-উল ফিতরকে কেন্দ্র করে নদীতে নৌকা নামানো হয়েছে। দর্শনার্থীদের জন্য এটি কয়েকদিন চলবে। লোক বহন করে দিনে প্রায় ১ হাজার টাকার উর্দ্ধে রোজগার হচ্ছে। শুধু ঈদে নয়, দেশের বিভিন্ন উৎসবে এখানে মানুষের সমাগম ঘটে।
এ ব্যাপারে গাইবান্ধা জেলা পুলিশ সুপার মো. কামাল হোসেন বলেন, বালাসীতে আগত মানুষেরা যাতে করে নির্বিঘ্ন আনন্দ উপভোগ করতে পারে সে বিষয়ে তদারকি করা হচ্ছে।
© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | জাগো২৪.নেট