সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রকৃতির রূপে দর্শনার্থী ছুটছে ক্রসবাঁধে

তোফায়েল হোসেন জাকির: লিজা, হাসান, সাহিদা ও শাহীন। সবাই তরুণ-তরুণী। বাসা-বাড়ির একঘেয়ে জীবন ছেড়ে ছুটে এসেছে ব্রহ্মপুত্র নদের ক্রসবাঁধে। শুধু তারাই নয়, কর্মব্যস্ত জীবনে একটু প্রশান্তির ছোঁয়া পেতে সব বয়সী মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে এই বাঁধে। এখানে উপভোগ করছে প্রকৃতির রূপ-সৌন্দর্য ও নির্মল বাতাস। এমন দৃশ্য মুহূর্তে মুগ্ধ হয়ে উঠছেন ভ্রমণ পিপাসুরা।

সম্প্রতি দেখা গেছে, গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্র নদে বধ্যভূমি রক্ষা প্রকল্পের ওই ক্রসবাঁধে উপচেপড়া দর্শনার্থীর ভিড়। বিকেল থেকে সন্ধ্যার আগে পর্যন্ত নারী-পুরুষ, তরুণ-তরুণী ও শিশু-কিশোরসহ সব বয়সী দর্শণার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে এই এলাকা।

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, গজারিয়া ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্র নদে বধ্যভূমি রক্ষা প্রকল্পের ক্রসবাঁধটি দীর্ঘ ৫০০ মিটার দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ১০০ ফুট এবং মাটির তলদেশ থেকে বাঁধটির উচ্চতা প্রায় ৩৫ ফুট। যা কি না দুইতলা ভবনের মত উঁচু। সম্ভাবনাময় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে ভ্রমণ পিপাসুরা বেছে নিয়েছেন নতুন এ বাঁধকে। নদের পাড়ে দাঁড়িয়ে আছে ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদের দ্বিতল প্রশাসনিক ভবন ও ইউএনও’র বাসভবন। পাশেই তিস্তামুখঘাট ও বধ্যভূমি এলাকা। নদীভাঙন থেকে রক্ষায় নীলকুঠি এলাকা থেকে ৭১-এর বধ্যভূমি এলাকার শেষ প্রান্ত পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র নদের পাড় বাঁধা হয়েছে সিসি ব্লক দিয়ে। সেখানে দর্শনার্থীদের বসার জন্য মাঝে মধ্যে তৈরি করা হয়েছে বেঞ্চ।

ভ্রমণ পিপাসু হাসান মিয়া বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে আর চরে ঘুরে বেড়ানোর মজাটাই আলাদা। এখানে রয়েছে প্রকৃতির বিশালতা। নদীর বুক চিরে নির্মিত ক্রসবাঁধ যা আমাদের নজর কেড়েছে।

সাহিদা আক্তার নামের এক তরুণী বলে, ছুটিতে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে আসার পর বেড়াতে এসেছি ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে। এখানে নির্মল বাতাসে বুক ভরে শ্বাস নেওয়ার জন্য। অনেকটাই মুগ্ধ।

স্থানীয় বাসিন্দা আনজারুল ইসলাম বলেন, এ এলাকায় তেমন দর্শনীয় স্থান নেই। সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষার পর সেখানে নদীর পার যেমন পর্যটন এলাকায় পরিণত হয়েছে। ঠিক তেমনিভাবে এ ক্রসবাঁধটি ফুলছড়িকে একধাপ এগিয়ে নিতে সাহায্য করেছে। এখানে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষজন আসছেন বাঁধটি দেখতে। এক সময় এখানে সব ছিল। নদীর করাল গ্রাসে ফুলছড়িবাসী সব হারিয়ে ফেলেছে। দর্শনীয় স্থান হিসেবে পরিচিত লাভ করলে অনেকেই এটাকে ঘিরে ব্যবসা-বাণিজ্য করে সংসার চালাতে পারবে।

ফুলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আজহারুল হান্নান মন্ডল বলেন, এটি একটি নদী ভাঙন কবলিত এলাকা। এখানে যে বাঁধটি করা হয়েছে, এ কারণে এখানকার গণকবর, পুরাতন ফুলছড়িহাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা রক্ষা পাবে।

ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আনিসুর রহমান জানান, এখানকার বধ্যভূমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা রক্ষায় এই ক্রসবাঁধটি নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে দর্শনার্থীদের বসার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

জনপ্রিয়

প্রকৃতির রূপে দর্শনার্থী ছুটছে ক্রসবাঁধে

প্রকাশের সময়: ০৯:০৪:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ জুলাই ২০২৩

তোফায়েল হোসেন জাকির: লিজা, হাসান, সাহিদা ও শাহীন। সবাই তরুণ-তরুণী। বাসা-বাড়ির একঘেয়ে জীবন ছেড়ে ছুটে এসেছে ব্রহ্মপুত্র নদের ক্রসবাঁধে। শুধু তারাই নয়, কর্মব্যস্ত জীবনে একটু প্রশান্তির ছোঁয়া পেতে সব বয়সী মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে এই বাঁধে। এখানে উপভোগ করছে প্রকৃতির রূপ-সৌন্দর্য ও নির্মল বাতাস। এমন দৃশ্য মুহূর্তে মুগ্ধ হয়ে উঠছেন ভ্রমণ পিপাসুরা।

সম্প্রতি দেখা গেছে, গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্র নদে বধ্যভূমি রক্ষা প্রকল্পের ওই ক্রসবাঁধে উপচেপড়া দর্শনার্থীর ভিড়। বিকেল থেকে সন্ধ্যার আগে পর্যন্ত নারী-পুরুষ, তরুণ-তরুণী ও শিশু-কিশোরসহ সব বয়সী দর্শণার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে এই এলাকা।

স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, গজারিয়া ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্র নদে বধ্যভূমি রক্ষা প্রকল্পের ক্রসবাঁধটি দীর্ঘ ৫০০ মিটার দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ১০০ ফুট এবং মাটির তলদেশ থেকে বাঁধটির উচ্চতা প্রায় ৩৫ ফুট। যা কি না দুইতলা ভবনের মত উঁচু। সম্ভাবনাময় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে ভ্রমণ পিপাসুরা বেছে নিয়েছেন নতুন এ বাঁধকে। নদের পাড়ে দাঁড়িয়ে আছে ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদের দ্বিতল প্রশাসনিক ভবন ও ইউএনও’র বাসভবন। পাশেই তিস্তামুখঘাট ও বধ্যভূমি এলাকা। নদীভাঙন থেকে রক্ষায় নীলকুঠি এলাকা থেকে ৭১-এর বধ্যভূমি এলাকার শেষ প্রান্ত পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র নদের পাড় বাঁধা হয়েছে সিসি ব্লক দিয়ে। সেখানে দর্শনার্থীদের বসার জন্য মাঝে মধ্যে তৈরি করা হয়েছে বেঞ্চ।

ভ্রমণ পিপাসু হাসান মিয়া বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে আর চরে ঘুরে বেড়ানোর মজাটাই আলাদা। এখানে রয়েছে প্রকৃতির বিশালতা। নদীর বুক চিরে নির্মিত ক্রসবাঁধ যা আমাদের নজর কেড়েছে।

সাহিদা আক্তার নামের এক তরুণী বলে, ছুটিতে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে আসার পর বেড়াতে এসেছি ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে। এখানে নির্মল বাতাসে বুক ভরে শ্বাস নেওয়ার জন্য। অনেকটাই মুগ্ধ।

স্থানীয় বাসিন্দা আনজারুল ইসলাম বলেন, এ এলাকায় তেমন দর্শনীয় স্থান নেই। সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষার পর সেখানে নদীর পার যেমন পর্যটন এলাকায় পরিণত হয়েছে। ঠিক তেমনিভাবে এ ক্রসবাঁধটি ফুলছড়িকে একধাপ এগিয়ে নিতে সাহায্য করেছে। এখানে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষজন আসছেন বাঁধটি দেখতে। এক সময় এখানে সব ছিল। নদীর করাল গ্রাসে ফুলছড়িবাসী সব হারিয়ে ফেলেছে। দর্শনীয় স্থান হিসেবে পরিচিত লাভ করলে অনেকেই এটাকে ঘিরে ব্যবসা-বাণিজ্য করে সংসার চালাতে পারবে।

ফুলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আজহারুল হান্নান মন্ডল বলেন, এটি একটি নদী ভাঙন কবলিত এলাকা। এখানে যে বাঁধটি করা হয়েছে, এ কারণে এখানকার গণকবর, পুরাতন ফুলছড়িহাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা রক্ষা পাবে।

ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আনিসুর রহমান জানান, এখানকার বধ্যভূমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা রক্ষায় এই ক্রসবাঁধটি নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে দর্শনার্থীদের বসার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।