পলাশ শিমুল জানান দিচ্ছে বসন্ত আসছে। জেলা শহর মেহেরপুরের রাস্তার পাশে আর ছায়াবিথিগুলোতে পলাশের শরীরজুড়ে কাকাতুয়ার ঠোঁটের মতো অভিমানি বক্রমুখা সবফুল যেনো সদর্পে প্রকাশ করছে নিজেকে। একইভাবে নওগাঁর ধামইরহাটে শিমুল জানাচ্ছে বসন্তের আগমনী বার্তা। পলাশের বৈজ্ঞানিক নাম (Butea monosperma)। তবে পলাশ নামেই পরিচিতি বেশি। রয়েছে আরো কত বাহারী রকমের নাম যেমন কিংশুক, পলাশক, বিপর্ণক। আর শিমুলের বৈজ্ঞানিক নাম বোম্বাক্স সেইবা। মালভেসি পরিবারের এই উদ্ভিদ আমাদের দেশে শিমুল নামেই সমধিক পরিচিত।
শীতের বিদায় ছুঁই ছুঁই। বসন্ত আসছে আর মাত্র কিছু দিন পরেই। গাছের পাতা ঝরতে শুরু করেছে। আবার ফল গাছে মুকুল ধরেছে। গাছে গাছে ফুলের সমারহ। এক অভিন্ন অনুভূতি। যা ইতিমধ্যে আমরা অনুভব করতে শুরু করেছি। তবে বসন্তের আগমনের বার্তা আগে থেকেই জানিয়ে দেয় গাছের কোলজুড়ে দুলতে থাকা রক্তিম পলাশ ফুল। মনে হয়, বনে আগুন লেগেছে। নবীন পাতার সমারোহ আর বনজুড়ে দেখেতে পাই পলাশের বর্ণমিছিল। তাই পলাশকে নির্দ্বিধায় বলতে পারি অরণ্যের অগ্নিশিখা পলাশ।
বাংলা সাহিত্যে পলাশের প্রভাব অতিশয়। গানে, কবিতায় কোথায় নেই পলাশ? তবে শুধু এ কালের সাহিত্য নয়, পলাশ সুপ্রাচীনকালেও ছিল সমান আদরণীয়। মহাভারতের সভাপর্বে ইন্দ্রপ্রস্থ নগরের যে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে, সেখানে উদ্যান আর কৃত্রিম জলাধারের পাশেও ছিল পলাশ বৃক্ষের মাতামাতি। আজ সেই পলাশ বৃক্ষের মাতামাতি খুঁজে পাওয়া দায়। আমাদের মধ্যে থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে পলাশ। পলাশ ফুল রক্ষায় চোখে পরার মত নেই কোন উদ্যেগ। বছরের ফেব্রুয়ারির দিকেই আমরা পলাশের জন্য অপেক্ষা করি, কখন ফুটবে পলাশ।
© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | জাগো২৪.নেট