শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১২:২১ অপরাহ্ন

গাইবান্ধা প্রায় ২ লাখ মেট্রিকটন সবজি উৎপাদন হলেও নেই হিমাগার

তোফায়েল হোসেন জাকির
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২৩ আগস্ট, ২০২২

তোফায়েল হোসেন জাকির: কৃষি নির্ভশীল জেলা গাইবান্ধা। জেলার সাতটি উপজেলার কৃষকরা ধান-পাট-ভুট্রার পাশাপাশা চাষ করেন চাহিদা সম্পন্ন সব ধরণের সবজি। এ জেলায় বার্ষিক প্রায় ২ লাখ মেট্রিক টন সবজি উৎপাদন হয়। স্থানীয় চাহিদার তুলনায় অধিক পরিমান উৎপাদন হয়ে থাকে। সেগুলো সংরক্ষণে হিমাগার না থাকায় অনেক সময়ে নষ্ট হয়ে যায় সবজিগুলো। যার ফলের কৃষক-ভোক্তা উভয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

জানা যায়, গাইবান্ধার বিশেষ করে গোবিন্দগঞ্জ, সাদুল্লাপুর ও পলাশবাড়ী উপজেলার কৃষকরা প্রচুর পরিমান সবজি উৎপাদন করে চলছেন। প্রাচীনকাল থেকে এখানকার জীবিকার উৎস কৃষি ফসল। তাই রবি ও খরিপ মৌসুমে বিস্তৃর্ণ অঞ্চল জুড়ে নজরকাড়ে আলু, কপি, বেগুন, লাউ, করলা, পটল, মরিচ, শসা, ঢেড়স, কচু, গাজরসহ আরো নানা প্রকারের শাক-সবজি। স্থানীয়ভাবে এসব সবজি উৎপাদনের চেয়ে চাহিদা কম রয়েছে। উধ্বৃত্ত এসব সবজি যদি হিমাগারে সংরক্ষণ করা যেতো তাহলে এখানকার কৃষকরা আরো লাভবান হতে পারতেন। এ জেলায় আলু সংরক্ষণে বেশ কিছু হিমাগার থাকলেও অন্যান্য সবজি সংরক্ষণে নেই কোন হিমাগার। এতে কৃষকদের কষ্টের উৎপাদিত সবজিগুলো কম দামে বিক্রি অথবা নষ্ট হয়ে যায় ক্ষেতে। যার ফলে কৃষি উন্নয়ন দেশে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গাইবান্ধার কৃষক সমাজ। তাই এ জেলার সাদুল্লাপুর ও পলাশবাড়ী উপজেলাসহ অন্যান্য উপজেলায় সরকারি পৃষ্টপোষকতায় হিমাগার স্থাপন করা হলে অনেকটাই লাভবান হবেন কৃষক মহল।

গাইবান্ধা জেলা কৃষি বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, এ জেলায় সবজি চাষযোগ্য জমি রয়েছে ২০ হাজার হেক্টর। হিমাগার না থাকায় সবজি উৎপাদনে আগ্রহ হারাচ্ছে কৃষকরা। বর্তমানে প্রতিবছরে ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ হচ্ছে সবজির। এতে উৎপাদন হচ্ছে ২ লাখ মেট্রিক টন। এসবের মধ্যে স্থানীয় চাহিদা রয়েছে এক লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন।

অভিরামপুরের কৃষক কৃষক কলিম উদ্দিন জাগো২৪.নেট-কে জানান, রবি ও খরিপ মৌসুমে নানা জাতের সবজি আবাদ করেন। চলতি মৌসুমেও দেড় একর জমিতে কচু, শসা, মরিচ, বেগুনসহ আরো কয়েক প্রকারের শাক-সবজি আবাদ করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ওইসব ক্ষেতে অধিক পরিমান সবজি উৎপাদন করা হয়। কিন্তু স্থানীয়ভাবে এর চাহিদা রয়েছে কম। এখানে সবজি সংরক্ষণে হিমাগার না থাকায় জেলার বাহিরে কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। সেটিও ব্যর্থ হলে ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে সবজিগুলো।

ধাপেরহাট এলাকার কৃষক সোবহান আলী জাগো২৪.নেট-কে জানান, এই এলাকায় আলু সংরক্ষণে হিমাগার থাকলেও অন্যান্য সবজি সংরক্ষণে হিমাগার নেই। এতে করে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে চলছেন। তাই এই এলাকায় হিমাগার স্থাপনের জন্য সরকারের নিকট দাবি জানাচ্ছি।

গাইবান্ধা কৃষি বিভাগের উপ পরিচালক বেলাল উদ্দিন জাগো২৪.নেট-কে জানান, কৃষি উন্নয়নে জেলার বিশেষ বিশেষ পয়েন্টে হিমাগার স্থাপনের দরকার। এ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সভায় আলোচনা করা হয়েছে।

বাংলাদেশ কৃষকলীগ সাধারণ সম্পাদক ও গাইবান্ধা-৩ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি জাগো২৪.নেট-কে বলেন, এখানকার কৃষকরা প্রচুর পরিমান সবজি উৎপাদন করে চলছেন। যাতে করে কৃষকরা আরো লাভ হতে পারেন, সেবিষয়ে হিমাগার স্থাপনের জন্য জাতীয় সংসদ অধিবেশনে দাবি জানানো হয়েছে।

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | জাগো২৪.নেট

কারিগরি সহায়তায় : শাহরিয়ার হোসাইন