হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের মুক্তির সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। তিনি স্বপ্ন দেখিয়েছেন, বাংলাদেশ একদিন ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্তি সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। রূপকল্প ২০৪১ – জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের ‘স্বপ্নের সোনার বাংলা’ গড়ার প্রত্যয়ে ২০৪১ সালকে বিশেষ বিবেচনায় নিয়েছে সরকার। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে গ্রহণ করা হয়েছে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনা ‘রূপকল্প ২০৪১’। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) সভায় অনুমোদিত হয়েছে ‘রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবে রূপায়ণ । সরল বাক্যে বোঝার চেষ্টা করি, কী আছে রূপকল্প ২০৪১ এর ভিত্তিমূলে রয়েছে দুটি প্রধান অভিলাষ:- (১) ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে একটি উন্নত দেশ, যেখানে মাথাপিছু আয় হবে ১২,৫০০ ডলারের বেশি। (২) বাংলাদেশ হবে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা, যেখানে দারিদ্র্য হবে সুদূর অতীতের ঘটনা। অভীষ্ট অর্জনের পথে আগামী দু’দশকে পরিবর্তন আসবে কৃষি, শিল্প ও বাণিজ্য, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য, পরিবহন ও যোগাযোগ, ব্যবসার ধরন এবং কর্মসম্পাদন পদ্ধতিতে। ধারাবাহিক এ পরিবর্তনের সুফল সমাজের সব স্তরে সুষম বণ্টনের ওপর গুরুর্ত¡ারোপ করা হয়েছে এ রূপকল্প ২০৪১। ‘উদ্দীপনাময় সূচনা’ হিসেবে ধারণ করা হয়েছে জাতির পিতার আজন্ম লালিত স্বপ্ন ‘দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত, দুর্নীতি ও শোষণহীন সমৃদ্ধ এক বাংলাদেশ গড়ে তোলা’কে। অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, ’একজন মানুষ হিসাবে সমগ্র মানবজাতি নিয়েই আমি ভাবি। একজন বাঙালি হিসাবে যা কিছু বাঙালিদের সঙ্গে সম্পর্কিত তাই আমাকে গভীরভাবে ভাবায়। এই নিরন্তর সম্পৃক্তির উৎস ভালোবাসা, অক্ষয় ভালোবাসা, যে ভালোবাসা আমার রাজনীতি এবং অস্তিত্বকে অর্থবহ করে তোলে।” রূপকল্প ২০৪১ প্রয়োজন কেন? হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের মুক্তির সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে।আজ আমরা স্বপ্ন দেখিীছন, বাংলাদেশ একদিন ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে স্বসম্মানে দাঁড়াবে। জননেত্রী ২০১৯ সালে চতুর্থবারের মত সরকার গঠনের সময় দেশবাসীকে প্রতিশ্রæতি দিয়েছেলেন , ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশে রূপান্তর দৃয় মনোভাব প্রকাশ করেন।। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব-এর স্বপ্নের সোনার বাংলা আজ আর মিথ্যা নয়। এ স্বপ্ন পূরণের ‘রূপকল্প ২০৪১’ বাস্তবায়নে মাবতার মা ২০ বছর মেয়াদী একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব-এর জন্মশত বর্ষে দেশবাসীর উপহার হলো রূপকল্প ২০৪১।
মানবতার মা ও জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, দেশ যখন অনুন্নয়ন আর অপরাজনীতির অধ:পতনে, তখন ২০০৯ সালেকে দিনবদলের সনদ গ্রহণ করেছিলাম। তিনি প্রতিশ্রæতি দিয়েছিলেন ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে উচ্চ প্রবৃদ্ধির উন্নয়নের ধারায় ফিরিয়ে আনা, দারিদ্র্য মোকাবেলা, জনগণের জীবনমান উন্নয়নসহ বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে আসীন করা। ‘রূপকল্প ২০৪১’ কে নীতিমালা ২০৪১ সালের মধ্যে এক সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ অর্জনে সরকারের উন্নয়ন রূপকল্প, উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যসমূহের একটি কৌশলগত বিবৃতি এবং তা বাস্তবায়নের পথ-নকশা। চারটি প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি, যেমন- ১) সুশাসন, ২) গণতন্ত্র, ৩) বিকেন্দ্রীকরণ ও ৪) সক্ষমতা বৃদ্ধির উপর প্রতিষ্ঠিত এ পরিকল্পনার সুফলভোগী হবে জনগণ এবং এরাই হবে প্রবৃদ্ধি ও রূপান্ত ও প্রক্রিয়ার প্রধান চালিকাশক্তি। স্মার্ট বাংলাদেশ হলো বাংলাদেশ সরকারের একটি প্রতিশ্রæতি ও শ্লোগান যা ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপাšন্তর পরিকল্পনা। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বপ্রথম এই প্রতিশ্রæতি ও শ্লোগান। স্মার্ট শব্দের ইতিকথাঃ- প্রানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১২ই ডিসেম্বর ২০২২ সালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের (বিআইসিসি) অনুষ্ঠানে ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস ২০২২উদ্যাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে সর্বপ্রথম ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার কথা বলেন। সবার প্রিয় ও মানবতার মা শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা আগামী ২০৪১ সালে জাতির জনাক বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলব এবং বাংলাদেশ হবে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ। মানবতার দিশারি শেখ হাসিনা এ স্মার্ট শব্দটি দেশ ও শহরের ক্ষেত্রে প্রথম ব্যবহার শুরু হয়। শুরু হলো এক নতুন ইতিহাস। ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার ভিত্তি চারটি। এগুলো হচ্ছে ১.স্মার্ট নাগরিক (স্মার্ট সিটিজেন) ২.স্মার্ট অর্থনীতি (স্মার্ট ইকোনমি ) ৩.স্মার্ট সরকার (স্মার্ট গভর্ন্যান্স) ৪.স্মার্ট সমাজ (স্মার্ট সোসাইটি ) স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে এ চারটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রকে চিহ্নিত করে অগ্রসর হলে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরের কোনো অবশিষ্ট থাকবে না। স্মার্ট নাগরিক ও স্মার্ট সরকার এর মাধ্যমে সব সেবা এবং মাধ্যম ডিজিটালে রূপান্তরিত হবে। স্মার্ট সমাজ ও স্মার্ট অর্থনীতি প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করলে অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠন এবং ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। ‘স্মার্ট বাংলাদেশ হবে সাশ্রয়ী গ্রাম বাস্তবায়নের জন্য স্মার্ট স্বাস্থ্যসেবা, স্মার্ট পরিবহন, স্মার্ট ইউটিলিটিজ, স্মার্ট নগর প্রশাসন, স্মার্ট জননিরাপত্তা, স্মার্ট কৃষি, ইন্টারনেট সংযোগ ও দুর্যোগ ব্যবস্তাপনা নিশ্চিত করা। শিক্ষা ক্ষেত্রে আসবে এক নবযুগের নবচেতনা। মুক্তি যুদ্ধের চেতনাকে লালান করে স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে। অনলাইনে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে এক শিক্ষার্থী, এক ল্যাপটপ, এক স্বপ্নের উদ্যোগ নেয়ার কথা বলা হয়েছে। ২০২২ থেকে ২০৪৪ সাল, এই বাইশ বছরের কৌশলগত পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার অংশ হিসাবে, বাংলাদেশের লক্ষ্য শিল্পায়ানের মাধ্যমে উচ্চ আযের দেশের মর্যাদা অর্জন। বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি বৃদ্ধি, মানব সম্পদ উনয়নের মাধ্যমে উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বিনিয়োগের প্রসারকে উৎসাহ দেয়া রূপকল্প ২০৪১ -এর উদ্দেশ্য। ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়ন হলে যা যা বাস্তবে দেখতে পারবোঃ- ১) মাথাপিছু আয়, ১২,৫০০ ডলার (২০৪১ সালের মূল্যমানে ১৬,০০০ ডলারের বেশি)। ২) দারিদ্র্য দূরীকরণ। ৩) ২০৪১ অবধি ৯% জিডিপি প্রবৃদ্ধি বজায় রাখা। ৪) জিডিপি অনুপাত ৪৬.৯ শতাংশে বৃদ্ধি করা। ৫) রাজস্ব কর জিডিপির ১৫% পর্যন্ত বাড়ানো। ৬) রপ্তানি বৈচিত্য অর্জন। ৭) রপ্তানি আয় ৩০০ বিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি করা। ৮) গড় আয়ু বাড়িযে ৮০ বছর করা। ৯) মোট জনসংখ্যার ৭৫% কে সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা। ১০) ২০৪১ সালের মধ্যে প্রাপ্তবয় স্কদের সাক্ষরতার হার ১০০% এ বৃদ্ধি করা। ১১) জনসংখ্যা বৃদ্ধি ১% এরও নিচে নামিয়ে আনা। ১২) কার্যকর কর এবং ব্যয়ের নীতিমালা কার্যকর করা। ১৩) অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক শক্তির বিকেন্দ্রীকরণ। মানীয় শেখ হাসিনার হাত ধরে রূপকল্প-২১ হয়েছিল । এবার আশা করছি তিনি ও তার ভবিষ্যত প্রজন্মের হাত ধরে এবার রূপকল্প-৪১ প্রণয়ন হবে। সে দিন আর দেরি নয়, এই পরিকল্পনার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গেই দেশকে উন্নত রাষ্ট্রের কাতারে দাঁড়াবে সোনার বাংলাদেশ। এজন্য অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ইতোমধ্যে কিছু কাজ করা হয়েছে। সরকারের চলতি মেয়াদে প্রণয়ন করা হবে পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা ‘রূপকল্প ২০৪১’। এ পরিকল্পনার লক্ষ্য হচ্ছে , আগামী ২৪ বছরের মধ্যে উন্নত ও সমৃদ্ধিশালী দেশ হিসেবে গড়ে তোলা। সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করেছে সরকার। এ পরিকল্পনায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব হচ্ছে – কারিগরি ও প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন মানবসম্পদ গঠন এবং সরকারী-বেসরকারী বিনিয়োগে গতিশীলতা বৃদ্ধিকরণ। এজন্য বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও যোগাযোগ খাতের অবকাঠামোগত সমস্যা দূরীকরণে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও সমৃদ্ধিশালী দেশের কাতারে শামিল হওয়া সরকারের চূড়ান্ত লক্ষ্য। এ লক্ষ্য অর্জনে চারটি বিষয় বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে – ১) জিডিপিসহ মাথাপিছু জাতীয় আয়ের প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা, ২) উচ্চতর আয়ের সুফল সাবর্জনীন করা, ৩) টেকসই ও পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন নিশ্চিত করা এবং ৪) সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে মাইন্ডসেট পরিবর্তনের আহŸান জানিয়ে জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, আমাদের কার কোন জায়গায় কাজ করার সুযোগ আছে, তার একটি সুনির্দিষ্ট ক্যানভাস তৈরি করতে হবে এবং প্রত্যেকের কাজগুলোর মধ্যে সমন্বয় রাখতে হবে। আমরা বিজ্ঞানমনস্ক, প্রযুক্তিবান্ধব, প্রযুক্তি ব্যবহারে অভ্যস্ত এবং প্রযুক্তি উদ্ভাবনে দক্ষ মানুষ তৈরি করতে চাই। যাদেরকে মানবিক ও সৃজনশীল হতে হবে। হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার ও হিউম্যানওয়ারকে একসাথে কাজে লাগানোর উপর গুরুত্বারোপ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী বলেন, হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার ও হিউম্যানওয়ার তিনটির একসাথে মিললেই বিজয়ী হওয়া সম্ভব। এর মধ্যে হিউম্যানওয়ার তথা মানুষকেই আসল ভূমিকা পালন করতে হবে অন্যথায় সব প্রযুক্তি থাকা সত্তে¡ও তার যথাপোযুক্ত ব্যবহার সম্ভব হবে না। আর একজন সত্যিকারের মানুষ তৈরির জন্য তাদেরকে কেবল প্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তুললেই হবে না তাদেরকে মানবিক মানুষ হিসেবেও তৈরি করতে হবে। জাতির জনকের সোনার বাংলা গড়ে তোলার জন্যে এখন প্রয়োজন বর্তমান সরকারকে সকল ক্ষেত্রে সহযোগিতা করা। আর সরকারের প্রয়োজন সকল স্তরের মানুষের সহযোগিতা । সমৃদ্ধশালী এক বাংলাদেশের সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার পথে আমাদের সহযাত্রী হতে হবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা তারই পদ্মাকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে উন্নয়নের রোলমডেল এগিয়ে যাচ্ছে। আজ এই শুভক্ষণে মহান নেতার রুহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং সেই সাথে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুখশান্তি ও উজ্জ¦ল ভাবিষ্যতের প্রত্যাশা করছি। মুজিব মানে শক্তি , মুজিব মানবতার মুক্তি, শেখ মুজিবের সাহস ও দেশপ্রেম বুকে লালন করে সকলেই সমস্বরে বলি- জয় হোক মানবতার- জয় বাংলা- জয় বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।
লেখক: মোঃ মাইনুল ইসলাম, বেসিক ফাউন্ডেশন ইংলিশ গ্রামারের লেখক, গবেষক ও সিনিয়র শিক্ষক , ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ, রংপুর।
© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | জাগো২৪.নেট