সততা ও নিষ্ঠায় অধ্যাপক আবদুল কাদির ছিলেন গাইবান্ধার সর্বজন শ্রদ্ধেয় মানুষ। একেবারেই প্রচারবিমুখ, নির্লোভ মানুষটি গভীর ভালোবাসায় সমাজের অন্ধকার তাড়িয়ে আলোর সন্ধান করেছেন। অমায়িক, বন্ধুবৎসল, পরোপকারী, হৃদয়বান মানুষ হিসেবে মানুষের আস্থা ও ভালোবাসা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন।
শনিবার (২৯ জুন) সকাল ১১টায় গাইবান্ধা নাট্য ও সাংস্কৃতিক সংস্থা (গানাসাস) মিলনায়তনে মুক্তবুদ্ধি-মুক্তচর্চা ও বিজ্ঞানমনস্ক লেখক, গাইবান্ধার প্রিয় মুখ সদ্য প্রয়াত অধ্যাপক আবদুল কাদির’র প্রয়াণে নাগরিক শোকসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘ গাইবান্ধা জেলা শাখার সভাপতি দেবাশীষ দাশ দেবুর সভাপতিত্বে এবং অধ্যাপক জহুরুল কাইয়ুমের সঞ্চালনায় শোকসভায় কালো ব্যাজ ধারণ, অধ্যাপক আবদুল কাদির’র প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পন, শোক বইতে শোকানুভূতি লেখা, নীরবতা পালন, ভাঁজপত্রের মোড়ক উন্মোচন, নিবেদিত কবিতা পাঠ করা হয়। এছাড়া আলোচনা আয়োজনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সামাজিক-সাংস্কৃতিক-ক্রীড়া ও বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় বেপরোয়া মোটরসাইকেলের ধাক্কায় নিহত অধ্যাপক কাদিরের মৃত্যুতে ঘাতক চালকের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে শোকসভাটি প্রতিবাদ সভায় পরিনত হয়।
সভায় বক্তব্য রাখেন- বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদুল হক শাহজাদা, এ্যাড. শাহাদাত হোসেন লাকু, ওয়াজিউর রহমান র্যাফেল, বীর মুক্তিযোদ্ধা মাকছুদার রহমান সাহান, মমতাজুর রহমান বাবু, প্রমোদারঞ্জন পাল, রেবতী বর্মণ, প্রণব চৌধুরী খোকন, মনজুর আলম মিঠু, আফরোজা বেগম, মোস্তফা মনিরুজ্জামান, মৃনাল কান্তি বর্মন, বিপুল দেব, জাহাঙ্গীর কবীর তনু, এ্যাড. সিরাজুল ইসলাম বাবু, রিকতু প্রসাদ, শিরিন আকতার, আব্দুর রউফ মিয়া, পরমানন্দ দাস, হেদায়েতুল ইসলাম বাবু, মোহাম্মদ আমিন, পিটু রশিদ, ডা. সেলিম মিয়া, রজত কুমার সাহা, প্রয়াত অধ্যাপক আবদুল কাদিরের পরিবারের পক্ষে স্ত্রী সেলিনা আফরুজা, কন্যা অন্বেষা অঙ্কন, ভাই আব্দুল করিম মিয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী আকবর মিয়া, কাশেম ইয়াসবীর, বোন সাহারা খাতুন, জোৎস্না খাতুন, সেলিনা খাতুন প্রমুখ । সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘ গাইবান্ধা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রজতকান্তি বর্মন।
উল্লেখ্য, গত ২২ জুন গাইবান্ধা পৌর শহরের কলেজ রোডে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় অধ্যাপক আবদুল কাদিও মৃত্যুবরণ করেন। আবদুল কাদির ১৯৭৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে বি.এ অনার্সে ভর্তি হন। ১৯৮১ সালে দর্শনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। এরপর গাইবান্ধা আদর্শ কলেজে দর্শন বিভাগে প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৮৮ সালে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে চাঁদপুর সরকারি কলেজে যোগদান করেন তিনি। পরে বদলি হয়ে গাইবান্ধা সরকারি মহিলা কলেজ ও গাইবান্ধা সরকারি কলেজে দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করার পর রংপুর কারমাইকেল কলেজে দর্শন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে ২০১৪ সালে অবসরগ্রহণ করেন।
© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | জাগো২৪.নেট