জন্ম তারিখ জটিলতায় ৩ বছর ধরে সাদুল্লাপুর উপজেলার কামারপাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ষাটার্দ্ধ দৃষ্টিহীন পিয়ন আহাম্মদ আলীর স্থগিত থাকা বেতন-ভাতা প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন ইউএনও মো. নবীনেওয়াজ।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে ‘আহাম্মদ আলীর বেতন-ভাতা স্থগিত’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ নজরে পড়ায় এই আশ্বাস দেন সাদুল্লাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. নবীনেওয়াজ।
বুধবার (২ ডিসেম্বর) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করে ইউএনও মো. নবীনেওয়াজ জাগো২৪.নেট-কে বলেন, গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর আহাম্মদ আলীর বেতন স্থগিতের বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হই। এ মাসেই বেতনের (বিল সিট) তার নাম অর্ন্তভুক্ত করতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া বেতন স্থগিতের ঘটনায় আহাম্মদ আলীর অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তার পাওনা সকল বেতন-ভাতা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। একই সঙ্গে শিক্ষা সনদ অনুযায়ী তার জন্ম তারিখের সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্ম নিবন্ধনে ভিন্ন ভিন্ন জন্ম তারিখ উল্লেখের ঘটনাও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান তিনি।
এরআগে, গত ৩০ নভেম্বর বিকেলে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে আহাম্মদ আলীর বেতন-ভাতা স্থগিতের ঘটনা তদন্ত করেন জেলা শিক্ষা অফিসার মো. এনায়েত হোসেন। তদন্ত কার্যক্রমে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মো. মাহাবুর রহমান প্রয়োজনীয় নথিপত্রসহ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, আহাম্মদ আলী কামারপাড়া ইউনিয়নের উত্তর হাটবামুনি গ্রামের মৃত্যু ফিকির উদ্দিনের ছেলে। তিনি ১৯৮৯ সালের ১৫ মার্চ কামারপাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পিয়ন পদে যোগদান করেন। তার ইনডেক্স নং ৫৪৫২০৯। ২০০৩ সালের মে মাসে বেতন মঞ্জুরের পর থেকে সর্বশেষ ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত তিনি বেতন উত্তোলন করেন। আহাম্মদ আলীর অভিযোগ, ২০১৭ সালের জুলাই মাসে বিদ্যালয়ের এক সভায় তৎকালীন সভাপতি সুবল চন্দ্র সরকার তার বেতন-ভাতা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেন। একই সঙ্গে ৬০ বছর চাকরি পূর্ণ দেখিয়ে বেতন-ভাতার উত্তোলিত টাকা সরকারী কোষাগারে ফেরতের নির্দেশে তাকে পত্র পাঠায় সুবল চন্দ্র। নিয়োগ বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার করে জন্ম তারিখ জটিলতায় দেখিয়ে সুবল চন্দ্র বেতন স্থগিতসহ বাধ্যতামূলক অবসর গ্রহণে চাপ দেয় বলেও অভিযোগ আহাম্মদ আলীর।
এদিকে, বকেয়া বেতন-ভাতার দাবি ও জন্ম তারিখ সংশোধনের জন্য ৩ বছর ধরে সংশ্লিষ্টদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোন প্রতিকার পায়নি বলে অভিযোগ স্বজনদের।
তারা বলছেন, বেতন বন্ধের ঘটনার পর থেকে দুশ্চিন্তায় মানুষিক অসুস্থ থাকলেও বর্তমানে তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ্য। অর্থ কষ্টে বিনা চিকিৎসায় বিভিন্ন রোগের সঙ্গে তার দৃষ্টি ও শ্রবণ শক্তি কমেছে। তবুও বকেয়া বেতনসহ স্কুল থেকে সম্মানের সাথে অবসর নেয়ার আশায় তার দিনকাটছে বলেও জানান স্বজনরা।
জিল্লুর রহমান পলাশ, জাগো২৪.নেট 



















