শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৬:৩৬ অপরাহ্ন

দুধের স্বাদ ‘ঘাঘট ব্রিজে’

তোফায়েল হোসেন জাকির, জাগো২৪.নেট:
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ৩ মে, ২০২২

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরের বুক চিরে বয়ে গেছে ঘাঘট নদী। এই নদীটির উপর নির্মিত হয়েছে ঘাঘট ব্রিজ। এরই পাশে রয়েছে উপজেলা শহর। এ শহর কিংবা আশপাশে নেই কোন বিনোদন কেন্দ্র। তাই ঈদুল ফিতরে বিনোদন প্রেমিদের ঢল নেমেছে এই ব্রিজে। যেনো দুধের স্বাদ ঘোলে মিটাচ্ছে তারা।

মঙ্গলবার (৩ মে) বিকেলে সাদুল্লাপুর উপজেলা শহর ঘেষা ওই ব্রিজে দেখা যায় হাজারো দর্শনার্থীদের ভিড়। যেন প্রকৃতির সঙ্গে মিশে হই-হুল্লোয় মেতেছিলেন বিনোদন পিয়াসীরা।

জানা যায়, সাদুল্লাপুর উপজেলার প্রায় পৌনে ৩০০ গ্রামে ৩ লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। ২২৭.৯৭ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের উপজেলাটির জনঘনত্ব প্রায় ১৩০০ বর্গ কিলোমিটার। জনবহুল এই উপজেলায় স্বাধীনতার ৫০ বছরেও গড়ে উঠেনি চিত্তবিনোদন কেন্দ্র। শহরটির প্রাণকেন্দ্রে সরোবরো নামকস্থানে বিনোদন কেন্দ্র স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসছিলেন স্থানীয়রা। এ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসন বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু আজও কথা রাখেনি কেউ। তাই ওই উপজেলাবাসীর শালীন বিনোদনে যেতে হচ্ছে গাইবান্ধার বালাশীঘাট, পৌর পার্ক, এসকেএস ইন ও ড্রিমল্যন্ডসহ আরও অন্যান্য স্থানে। এতে করে সময়ের অপচয়সহ অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হচ্ছে তাদের। এছাড়া ওইসব কেন্দ্রগুলো দূরে হওয়ায় অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে যেতে নানা ভোগান্তিতে পড়ে থাকেন। যার কারণে চিত্ত বিনোদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে লাখো পরিবার। শুধু উপজেলাবাসী নয়, এখানকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মরত ব্যক্তিরাও সহজে বিনোদন উপভোগ করতে পারছেন না।স্থানীয়রা জানায়, গাইবান্ধা জেলা সদর থেকে ১১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সাদুল্লাপুর-লক্ষীপুর সড়কের সাদুল্লাপুর সরকারি কলেজ কোল ঘেষে নির্মাণ করা হয়েছে ৯৯.১০ মিটার ঘাঘট ব্রিজ। এই উপজেলায় কোন বিনোদন কেন্দ্র না থাকায় স্থানীয়দের অবসর কিংবা বিনোদনের মুহূর্তগুলোকে উপভোগ করার একমাত্র ভরসা ঘাঘট ব্রিজ। এখানে বিনোদন প্রেমি মানুষের উপচেপড়া ঢল নেমেছে।  এখন বিনোদন পিয়াসুদের কাছে অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে রুপ নিয়েছে এই ব্রিজটি। ঈদের ছুটিতে সাদুল্লাপুরের বিভিন্ন এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং অন্যান্য পেশা-শ্রেণির  হাজারো মানুষ এখানে ভিড় জমাচ্ছেন।

একদিকে ব্রিজ, অন্যদিকে নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধের দু’পাশে সারি সারি গাছের নয়নাভিরম ও নৈসর্গিক দৃশ্য যে কোনো বিনোদন প্রেমি মানুষকে কাছে টানবে। যে কারণে প্রকৃতির নির্মল বাতাস ও বাধের নয়নাভিরম নৈসর্গিক দৃশ্য উপভোগ করতে ঈদে হাজারো মানুষের ঢল নেমেছে। এখানকার অস্থায়ী দোকানগুলোতে আচার, ফুঁচকা, হালিম খাওয়াসহ বিভিন্ন পানীয় পান করছেন দর্শনার্থীরা। এই স্থানের ব্রিজে দু’পার্শ্বের সংযোগ সড়কে বসার স্থান ও স্ট্রিষ্ট লাইট দেয়া হলে এটি অনেকটা পূর্ণতা পাবে বলে অনেক মনে করছেন।ব্রিজে আসা দর্শনার্থী উম্মে হাবিবা সুমি নামের এক শিক্ষিকা জাগো২৪.নেট-কে জানান, ঈদের অবসর সময় কাটানোর জন্য বিনোদন করতে এসেছেন তিনি। স্বজন ও সন্তানদের নিয়ে কিছু সময় অবস্থান করে বেশ ভালো লেগেছে তার।

স্থানীয় হাসান আলী নামের এক যুবক ঈদ উপলক্ষে একটি অস্থায়ী খাদ্যপণ্যের দোকান দিয়েছেন। তিনি জাগো২৪.নেট-কে বলেন, বিভিন্ন উৎসবে ঘাঘট ব্রিজে মানুষের ভির জমে। তাই ব্যবসা স্বার্থে পানীয়সহ নানা প্রকার মুখরোচক খাদ্যপণ্য বিক্রি করে অনেকটাই লাভবান হচ্ছি।

সাদুল্লাপুরের রবিউল ইসলাম নামের আরেক বিনোদন পিয়াসু জাগো২৪.নেট-কে   বলেন, কেউ  কেউ জেলার আশপাশের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে যেতে পারলেও  অনেকে তা  পারছেন না। কারণ সাধ থাকলেও তাদের সাধ্য নেই। তাই সাদুল্লাপুর প্রাণকেন্দ্রে একটি বিনোদন স্পট নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | জাগো২৪.নেট

কারিগরি সহায়তায় : শাহরিয়ার হোসাইন