রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিক্ষার্থীদের ধারণা দিতে এবার প্রাতিষ্ঠানিক পুষ্টিবাগান

তোফায়েল হোসেন জাকির: খাবারের পাতে শাক-সবজিতে প্রচুর পরিমাণ খনিজ লবণ, আঁশ ও ভিটামিন রয়েছে। তাই শরীরের পুষ্টি চাহিদাপূরণে শাক-সবজি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আর এসব পুষ্টি উৎপাদনের লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে ধারণা দিতে এবার ব্যতিক্রম উদ্যোগ নিয়েছে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি বিভাগ। ইতোমধ্যে শুরু করা হয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক সবজি পুষ্টিবাগান স্থাপন কার্যক্রম।

সম্প্রতি উপজেলার নাকাই বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও গোবিন্দগঞ্জ সরকারি কলেজ প্রাঙ্গনসহ আরও বেশ কিছু স্থানে দেখা গেছে- নানা ধরণের সবজি বীজ বপণের চিত্র। এসময় উদ্বুদ্ধকরণে কৃষি বিভাগের জিয়াউল হক রিন্টুসহ একাধিক কর্মকর্তা শাক-সবজি উৎপাদন ও পুষ্টিগুণ সর্ম্পকে শিক্ষার্থীদের পাঠদান দিয়ে সবজি বাগান স্থাপন করেন।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, বর্তমান সরকার সারা দেশে অনাবাদী পতিত জমি ও বসতবাড়ির আঙ্গিনাসহ প্রতি ইঞ্চি জমিতে আবাদ করতে এবং খাদ্য নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। গ্রামের মানুষ বসতবাড়ির আঙিনা, পুকুর ও খালের পাড়, স্যাঁতসেঁতে ছায়াযুক্ত প্রতি ইঞ্চি অব্যবহৃত ও অনাবাদি জমিতে শাক-সবজি ও ফলমূল উৎপাদন করবেন। এতে মানুষের পুষ্টিহীনতা দূর হওয়ার পাশাপাশি খাদ্যনিরাপত্তাও নিশ্চিত হবে। এ লক্ষ্যে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন কার্যক্রম অব্যাহত রেখে এবার নতুন করে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক পুষ্টিবাগান তৈরী। এরই মধ্যে সেই পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন শুরু করেছে কৃষি বিভাগ। বর্তমানে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জমি প্রস্তুত করে সেখানে বপণ করা হচ্ছে- লাল শাক, পালং শাক, ঢেঁড়স ও লাউসহ নানা প্রকারের শাক-সবজি। গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতায় প্রাতিষ্ঠানিক পুষ্টিবাগান স্থাপন কর্মসূচিটি ইতোমধ্যে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এছাড়া কাটাবাড়ি ইউনিয়নের মালেকাবাদ আশ্রয়ণসহ অন্যান্য আশ্রয়ণে বসতি মানুষের জন্য এই বাগান করা হচ্ছে।

মেহেদী হাসান নামের এক শিক্ষার্থী বলে, আগে শাক-সবজি উৎপাদন ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে ধারণা ছিলো কম। আজ আমাদের বিদ্যালয়ে এসে কৃষি কর্মকর্তাগণ যেভাবে শেখালেন এতে অনেকটাই জ্ঞানের সঞ্চয় হয়েছে।

প্রধান শিক্ষক শেখ আশরাফুল ইসলাম আজাদ বলেন, কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতায় আমাদের বিদ্যালয় প্রাঙ্গন পাশে সবজি পুষ্টিবাগান স্থাপন করা হয়েছে। এটি নিঃসন্দেহে ভালো উদ্যোগ। এজন্যে কৃষি বিভাগ তথা সরকারকে সাধুবাদ জানাই।

গোবিন্দগঞ্জের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জিয়াউল হক রিন্টু বলেন, শিক্ষার্থীদের শাক-সবজি উৎপাদন বা পুষ্টিগুণ বিষয়ক উদ্বুদ্ধকরণের লক্ষ্যে বিভিন্ন শিক্ষপ্রতিষ্ঠানে সবজি পুষ্টিবাগান স্থাপন করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে বীজ-সার ও উপকরণ সমূহ বিনামূল্যে প্রদান করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সৈয়দ রেজা-ই মাহমুদ বলেন, পরিবারে পুষ্টি চাহিদাপূরণের লক্ষ্যে পারিবারিক পুষ্টিবাগান স্থাপন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সরকারের এই উদ্যোগে মানুষের খাদ্য ঘাটতি পূরণ হয়েছে। পাশাপাশি স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধকরণে ও তাদের হাতে-কলমে শেখানোর জন্য প্রাতিষ্ঠানিক পুষ্টিবাগান করা হচ্ছে। উপজেলার প্রত্যেক ইউনিয়নের একটি করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পুষ্টিবাগান তৈরী করা হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

জনপ্রিয়

শিক্ষার্থীদের ধারণা দিতে এবার প্রাতিষ্ঠানিক পুষ্টিবাগান

প্রকাশের সময়: ০৫:৫৭:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

তোফায়েল হোসেন জাকির: খাবারের পাতে শাক-সবজিতে প্রচুর পরিমাণ খনিজ লবণ, আঁশ ও ভিটামিন রয়েছে। তাই শরীরের পুষ্টি চাহিদাপূরণে শাক-সবজি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আর এসব পুষ্টি উৎপাদনের লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে ধারণা দিতে এবার ব্যতিক্রম উদ্যোগ নিয়েছে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি বিভাগ। ইতোমধ্যে শুরু করা হয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক সবজি পুষ্টিবাগান স্থাপন কার্যক্রম।

সম্প্রতি উপজেলার নাকাই বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও গোবিন্দগঞ্জ সরকারি কলেজ প্রাঙ্গনসহ আরও বেশ কিছু স্থানে দেখা গেছে- নানা ধরণের সবজি বীজ বপণের চিত্র। এসময় উদ্বুদ্ধকরণে কৃষি বিভাগের জিয়াউল হক রিন্টুসহ একাধিক কর্মকর্তা শাক-সবজি উৎপাদন ও পুষ্টিগুণ সর্ম্পকে শিক্ষার্থীদের পাঠদান দিয়ে সবজি বাগান স্থাপন করেন।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, বর্তমান সরকার সারা দেশে অনাবাদী পতিত জমি ও বসতবাড়ির আঙ্গিনাসহ প্রতি ইঞ্চি জমিতে আবাদ করতে এবং খাদ্য নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। গ্রামের মানুষ বসতবাড়ির আঙিনা, পুকুর ও খালের পাড়, স্যাঁতসেঁতে ছায়াযুক্ত প্রতি ইঞ্চি অব্যবহৃত ও অনাবাদি জমিতে শাক-সবজি ও ফলমূল উৎপাদন করবেন। এতে মানুষের পুষ্টিহীনতা দূর হওয়ার পাশাপাশি খাদ্যনিরাপত্তাও নিশ্চিত হবে। এ লক্ষ্যে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপন কার্যক্রম অব্যাহত রেখে এবার নতুন করে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক পুষ্টিবাগান তৈরী। এরই মধ্যে সেই পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন শুরু করেছে কৃষি বিভাগ। বর্তমানে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জমি প্রস্তুত করে সেখানে বপণ করা হচ্ছে- লাল শাক, পালং শাক, ঢেঁড়স ও লাউসহ নানা প্রকারের শাক-সবজি। গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতায় প্রাতিষ্ঠানিক পুষ্টিবাগান স্থাপন কর্মসূচিটি ইতোমধ্যে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এছাড়া কাটাবাড়ি ইউনিয়নের মালেকাবাদ আশ্রয়ণসহ অন্যান্য আশ্রয়ণে বসতি মানুষের জন্য এই বাগান করা হচ্ছে।

মেহেদী হাসান নামের এক শিক্ষার্থী বলে, আগে শাক-সবজি উৎপাদন ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে ধারণা ছিলো কম। আজ আমাদের বিদ্যালয়ে এসে কৃষি কর্মকর্তাগণ যেভাবে শেখালেন এতে অনেকটাই জ্ঞানের সঞ্চয় হয়েছে।

প্রধান শিক্ষক শেখ আশরাফুল ইসলাম আজাদ বলেন, কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতায় আমাদের বিদ্যালয় প্রাঙ্গন পাশে সবজি পুষ্টিবাগান স্থাপন করা হয়েছে। এটি নিঃসন্দেহে ভালো উদ্যোগ। এজন্যে কৃষি বিভাগ তথা সরকারকে সাধুবাদ জানাই।

গোবিন্দগঞ্জের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জিয়াউল হক রিন্টু বলেন, শিক্ষার্থীদের শাক-সবজি উৎপাদন বা পুষ্টিগুণ বিষয়ক উদ্বুদ্ধকরণের লক্ষ্যে বিভিন্ন শিক্ষপ্রতিষ্ঠানে সবজি পুষ্টিবাগান স্থাপন করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে বীজ-সার ও উপকরণ সমূহ বিনামূল্যে প্রদান করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সৈয়দ রেজা-ই মাহমুদ বলেন, পরিবারে পুষ্টি চাহিদাপূরণের লক্ষ্যে পারিবারিক পুষ্টিবাগান স্থাপন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সরকারের এই উদ্যোগে মানুষের খাদ্য ঘাটতি পূরণ হয়েছে। পাশাপাশি স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধকরণে ও তাদের হাতে-কলমে শেখানোর জন্য প্রাতিষ্ঠানিক পুষ্টিবাগান করা হচ্ছে। উপজেলার প্রত্যেক ইউনিয়নের একটি করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পুষ্টিবাগান তৈরী করা হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।