শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সবজি বাজারে ভোক্তাদের স্বস্তি

তোফায়েল হোসেন জাকির: চলতি রবিতে গাইবান্ধার সাত উপজেলার মাঠপর্যায়ে আলুসহ ব্যাপক পরিমাণ জমিতে শাক-সবজি আবাদ হয়েছে। শীতকালীন এইসব সবজি ইতোমধ্যে বাজার উঠতে শুরু করেছে। সম্প্রতি আমদানি বেশি থাকায় গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে দাম কমেছে অর্ধেকে। এ কারণে ভোক্তাদের মাঝে দেখা দিয়েছে স্বস্তির শ্বাস। 

সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে গাইবান্ধার পুরাতন বাজারসহ জেলার একাধিক হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে- শীতকালীন শাক-সবজির পসরা সাজিয়ে বসেছে খুচরা ব্যবসায়ীরা। এসব বাজারে ব্যাপক পরিমাণ সবজি আমদানি থাকায় ক্রেতা-বিক্রেতার মুখে ফুটেছে হাসি ।

সরেজমিনে দেখা যায়- বাজারে মানভেদে প্রতিকেজি ফুলকপি ১০ টাকা, বাধা কপি ১৫ টাকা, বেগুন ১৫ টাকা, মূলা ১০ টাকা, সিম ২০ টাকা, আলু ৪৫ টাকা, শসা ৪০ টাকা, গাজর ৬০ টাকা, টমেটো ৮০ টাকা, পেপেঁ ৩০ টাকা, মুড়িকাটা পেঁয়াজ ৫০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যা গত একসপ্তাহে আগে এসব সবজির দাম ছিলো প্রায় দ্বিগুণ। বর্তমান বাজারে সবজির কমে আসায় ভোক্তাদের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে।

জেলা কৃষি বিভাগ সুত্রে জানা গেছে- চলতি রবি মৌসুমে গাইবান্ধার সাত উপজেলায় প্রায় ৬ হাজার ৯৪৭ হেক্টর জমিতে শাক-সবজি ও ১২ হাজার ৩৬ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে আলুর লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে এতে প্রায় ২ লাখ ৫৪ হাজার মেট্রিকটন আলু উৎপাদন হতে পারে। এ থেকে জেলায় বার্ষিক চাহিদা রয়েছে প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিকটন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গেল খরিপ মৌসুমে বিরূপ আবহাওয়ায় শাক-সবজিসহ অন্যান্য ফসলের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। এসব ক্ষতি পূষিয়ে নিতে সম্প্রতি কৃষকরা ঝুঁকে পড়ছে শীতকালীন সবজি চাষে। সেইসঙ্গে গত বছরের তুলনা এ বছরে কাঁচা তরকারির দাম বেশী থাকায় শাক-সবজি চাষে প্রান্তিক কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে অনেকটাই। তারা ইতোমধ্যে মূলা, লাউ, সিম, কপি, বেগুন, গাজর, পালং শাক, লাল শাকসহ আরও বিভিন্ন ধরণের শাক-সবজি চাষাবাদ উৎপাদন শুরু হয়েছে।

সবজি কিনতে আসা নজরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বলেন, হত একসপ্তাহ আগে ফুলকপি কেজি ছিলো ৪০ টাকা। বর্তমানের বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকায়। আর আলু ছিলো ৭৫ টাকা। এখন সেটি কেনাবেচা হচ্ছে ৪৫ টাকা দরে। সম্প্রতি সবজির দাম কমায় অনেকটা ক্রয় ক্ষমতা রয়েছে।

খুচরা ব্যবসায়ী লাল মিয়া জানান, এখন বাজারে প্রচুর পরিমাণ শাক-সবজি আমদানি রয়েছে। যার কারণে দাম কমেছে অর্ধেকে। এতে বিক্রি বেড়েছে বেশি। লাভও ভালো থাকছে।

কৃষক আব্দুল কাফি সরকার বলেন, এবার শীতে সীম, বেগুন ও আলু আবাদ করেছি। ইতোমধ্যে ফসল সংগ্রহ করা হচ্ছে। গত সপ্তাহের তুলনায় উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন বাজারে দাম কম থাকলেও তবুও লাভ থাকছে।

গাইবান্ধা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক খোরশেদ আলম বলেন, চলতি রবি মৌসুমে কৃষকদের মাঝে প্রণোদনা হিসেবে বীজ-সার বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। শীতকালীন শাক-সবজির অধিক ফলন পেতে তাদের সর্বাত্নক সহযোগিতা করা হচ্ছে।

জনপ্রিয়

সবজি বাজারে ভোক্তাদের স্বস্তি

প্রকাশের সময়: ০৭:১৭:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

তোফায়েল হোসেন জাকির: চলতি রবিতে গাইবান্ধার সাত উপজেলার মাঠপর্যায়ে আলুসহ ব্যাপক পরিমাণ জমিতে শাক-সবজি আবাদ হয়েছে। শীতকালীন এইসব সবজি ইতোমধ্যে বাজার উঠতে শুরু করেছে। সম্প্রতি আমদানি বেশি থাকায় গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে দাম কমেছে অর্ধেকে। এ কারণে ভোক্তাদের মাঝে দেখা দিয়েছে স্বস্তির শ্বাস। 

সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে গাইবান্ধার পুরাতন বাজারসহ জেলার একাধিক হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে- শীতকালীন শাক-সবজির পসরা সাজিয়ে বসেছে খুচরা ব্যবসায়ীরা। এসব বাজারে ব্যাপক পরিমাণ সবজি আমদানি থাকায় ক্রেতা-বিক্রেতার মুখে ফুটেছে হাসি ।

সরেজমিনে দেখা যায়- বাজারে মানভেদে প্রতিকেজি ফুলকপি ১০ টাকা, বাধা কপি ১৫ টাকা, বেগুন ১৫ টাকা, মূলা ১০ টাকা, সিম ২০ টাকা, আলু ৪৫ টাকা, শসা ৪০ টাকা, গাজর ৬০ টাকা, টমেটো ৮০ টাকা, পেপেঁ ৩০ টাকা, মুড়িকাটা পেঁয়াজ ৫০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যা গত একসপ্তাহে আগে এসব সবজির দাম ছিলো প্রায় দ্বিগুণ। বর্তমান বাজারে সবজির কমে আসায় ভোক্তাদের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে।

জেলা কৃষি বিভাগ সুত্রে জানা গেছে- চলতি রবি মৌসুমে গাইবান্ধার সাত উপজেলায় প্রায় ৬ হাজার ৯৪৭ হেক্টর জমিতে শাক-সবজি ও ১২ হাজার ৩৬ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে আলুর লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে এতে প্রায় ২ লাখ ৫৪ হাজার মেট্রিকটন আলু উৎপাদন হতে পারে। এ থেকে জেলায় বার্ষিক চাহিদা রয়েছে প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিকটন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গেল খরিপ মৌসুমে বিরূপ আবহাওয়ায় শাক-সবজিসহ অন্যান্য ফসলের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। এসব ক্ষতি পূষিয়ে নিতে সম্প্রতি কৃষকরা ঝুঁকে পড়ছে শীতকালীন সবজি চাষে। সেইসঙ্গে গত বছরের তুলনা এ বছরে কাঁচা তরকারির দাম বেশী থাকায় শাক-সবজি চাষে প্রান্তিক কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে অনেকটাই। তারা ইতোমধ্যে মূলা, লাউ, সিম, কপি, বেগুন, গাজর, পালং শাক, লাল শাকসহ আরও বিভিন্ন ধরণের শাক-সবজি চাষাবাদ উৎপাদন শুরু হয়েছে।

সবজি কিনতে আসা নজরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বলেন, হত একসপ্তাহ আগে ফুলকপি কেজি ছিলো ৪০ টাকা। বর্তমানের বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকায়। আর আলু ছিলো ৭৫ টাকা। এখন সেটি কেনাবেচা হচ্ছে ৪৫ টাকা দরে। সম্প্রতি সবজির দাম কমায় অনেকটা ক্রয় ক্ষমতা রয়েছে।

খুচরা ব্যবসায়ী লাল মিয়া জানান, এখন বাজারে প্রচুর পরিমাণ শাক-সবজি আমদানি রয়েছে। যার কারণে দাম কমেছে অর্ধেকে। এতে বিক্রি বেড়েছে বেশি। লাভও ভালো থাকছে।

কৃষক আব্দুল কাফি সরকার বলেন, এবার শীতে সীম, বেগুন ও আলু আবাদ করেছি। ইতোমধ্যে ফসল সংগ্রহ করা হচ্ছে। গত সপ্তাহের তুলনায় উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন বাজারে দাম কম থাকলেও তবুও লাভ থাকছে।

গাইবান্ধা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক খোরশেদ আলম বলেন, চলতি রবি মৌসুমে কৃষকদের মাঝে প্রণোদনা হিসেবে বীজ-সার বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। শীতকালীন শাক-সবজির অধিক ফলন পেতে তাদের সর্বাত্নক সহযোগিতা করা হচ্ছে।