রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলায় বিজ্ঞানচর্চার তাগিদ প্রধানমন্ত্রীর

বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকালে ‘মহান শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২২’ উপলক্ষে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট আয়োজিত চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ তাগিদ দেন।
গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৭৫-পরবর্তী কোনো সরকারই ভাষার উৎকর্ষ বাড়াতে কাজ করেনি। বর্তমান সরকার ভাষার উৎকর্ষ বাড়াতে কাজ করছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের এই দিবসটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার যখন গঠন করে তখন প্রবাসী বাঙালি সালাম এবং রফিক অন্য কতগুলো ভাষাভাষীদের নিয়ে ভালোবাসি মাতৃভাষার নামে সংগঠন করেছিল এবং তার মাধ্যমে জাতিসংঘে প্রস্তাব পেশ করেছিল একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হোক। কিন্তু একটি প্রতিষ্ঠান করলে হবে না একটা সদস্য রাষ্ট্রের কাছ থেকে প্রস্তাব আসতে হবে। তখন আমরা উদ্যোগ নেই প্রস্তাব পেশ করি এবং ইউনেস্কো সাধারণ পরিষদে ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর সেটা পাস হয় এবং সেই থেকে একুশে ফেব্রুয়ারি শুধু আমাদের শহীদ দিবস না সমগ্র বিশ্বের মাতৃভাষা-ভাষীদের জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ দিবস। যার জন্য পৃথিবীর অনেক দেশ এ দিবসটি পালন করে। এটা বাঙালি জাতি হিসেবে অত্যন্ত গর্বের কারণ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বাংলা ভাষায় জাতিসংঘে ভাষণ দিয়েছিলেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেছেন আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই কারণ আমি দেখেছি অধ্যাপক ড. লাফিফা জামান অত্যান্ত চমৎকারভাবে তিনি আমাদের বিজ্ঞানের যে প্রয়োজন আছে, গবেষণার প্রয়োজন আছে এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যেসব পদক্ষেপ নিয়েছিলেন এত চমৎকারভাবে তিনি সেটি তুলে ধরেছেন, আমি সত্যি খুবই আনন্দিত।’
সরকার প্রধান বলেন, ‘দ্বিতীয় দফায় সরকার এসে আমরা একটু সুযোগ পেলাম আর মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম এখন করেছি আমরা কম্পিউটার ল্যাব তৈরি করে দিচ্ছি আমাদের ছেলেমেয়েরা জাতীয় শিক্ষা পায় তার ব্যবস্থা করে দিয়েছি আমানকে শিক্ষকদের কনটেন্ট তৈরি করার জন্য আমরা প্রশিক্ষণও দিয়েছি দিয়ে তারা নিজেরাই তৈরি করতে পারে সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘বিজ্ঞান শিক্ষা, বিজ্ঞান গবেষণা এবং গবেষণালব্ধ যেসব জ্ঞান সেটা মানুষের কাজে যেন ব্যবহার হয় এটা সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বিজ্ঞান শিক্ষায় আরেকটি বিষয় লক্ষ্য করেছিলাম যে, স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিজ্ঞান পড়ার কোনো আগ্রহই ছিল না তখন আমরা ১২টা বিশ্ববিদ্যালয় করার পরিকল্পনা নেই আর এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নাম দেয়া হয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। আমার উদ্দেশ্য ছিল যে এই নামটা দিলে আমাদের ছেলেমেয়েরা তাহলে বিজ্ঞান পড়ার দিকে আগ্রহী হবে প্রযুক্তি শিক্ষার দিকে আগ্রহী হবে। পাশাপাশি প্রতিটি ক্ষেত্রে গবেষণা একান্ত দরকার।’
এ সময় বহুল প্রচলিত ও পরিচিত শব্দের ব্যবহারে উদার হতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিজ্ঞান গবেষণা এবং গবেষণালব্ধ জ্ঞান যেন মানুষের কাজে ব্যবহার হয়, এটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বিজ্ঞানের আবিষ্কার ও বৈজ্ঞানিক শব্দগুলো দুর্বোধ্য না করে ফেলা ভালো। বহুল পরিচিত ও প্রচলিত শব্দগুলো আমাদের ভাষায় ব্যবহার করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কনটেন্টের বাংলা আধেয়। সবাই কনটেন্টই বেশি ব্যবহার করে এবং চেনে। আধেয় জানে না। আমি মনে করি, যে শব্দগুলো বহুল প্রচলিত এবং আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত, সেগুলো যে ভাষায় আসুক, সে ভাষায় আমাদের ব্যবহার করা উচিত। ওটারও পরিভাষা ব্যবহার করতে গিয়ে কোনো কিছুই বুঝবো না, এটা যেন না হয়। রক্ষণশীল না হয়ে প্রচলিত শব্দগুলো দিয়েই বিজ্ঞান শিক্ষার ব্যবস্থা করতেও পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। সুত্রঃ বার্তা২৪.কম
জনপ্রিয়

বাংলায় বিজ্ঞানচর্চার তাগিদ প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশের সময়: ০৬:৫৮:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২২
বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকালে ‘মহান শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২২’ উপলক্ষে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট আয়োজিত চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ তাগিদ দেন।
গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৭৫-পরবর্তী কোনো সরকারই ভাষার উৎকর্ষ বাড়াতে কাজ করেনি। বর্তমান সরকার ভাষার উৎকর্ষ বাড়াতে কাজ করছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের এই দিবসটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার যখন গঠন করে তখন প্রবাসী বাঙালি সালাম এবং রফিক অন্য কতগুলো ভাষাভাষীদের নিয়ে ভালোবাসি মাতৃভাষার নামে সংগঠন করেছিল এবং তার মাধ্যমে জাতিসংঘে প্রস্তাব পেশ করেছিল একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হোক। কিন্তু একটি প্রতিষ্ঠান করলে হবে না একটা সদস্য রাষ্ট্রের কাছ থেকে প্রস্তাব আসতে হবে। তখন আমরা উদ্যোগ নেই প্রস্তাব পেশ করি এবং ইউনেস্কো সাধারণ পরিষদে ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর সেটা পাস হয় এবং সেই থেকে একুশে ফেব্রুয়ারি শুধু আমাদের শহীদ দিবস না সমগ্র বিশ্বের মাতৃভাষা-ভাষীদের জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ দিবস। যার জন্য পৃথিবীর অনেক দেশ এ দিবসটি পালন করে। এটা বাঙালি জাতি হিসেবে অত্যন্ত গর্বের কারণ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বাংলা ভাষায় জাতিসংঘে ভাষণ দিয়েছিলেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেছেন আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই কারণ আমি দেখেছি অধ্যাপক ড. লাফিফা জামান অত্যান্ত চমৎকারভাবে তিনি আমাদের বিজ্ঞানের যে প্রয়োজন আছে, গবেষণার প্রয়োজন আছে এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যেসব পদক্ষেপ নিয়েছিলেন এত চমৎকারভাবে তিনি সেটি তুলে ধরেছেন, আমি সত্যি খুবই আনন্দিত।’
সরকার প্রধান বলেন, ‘দ্বিতীয় দফায় সরকার এসে আমরা একটু সুযোগ পেলাম আর মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম এখন করেছি আমরা কম্পিউটার ল্যাব তৈরি করে দিচ্ছি আমাদের ছেলেমেয়েরা জাতীয় শিক্ষা পায় তার ব্যবস্থা করে দিয়েছি আমানকে শিক্ষকদের কনটেন্ট তৈরি করার জন্য আমরা প্রশিক্ষণও দিয়েছি দিয়ে তারা নিজেরাই তৈরি করতে পারে সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘বিজ্ঞান শিক্ষা, বিজ্ঞান গবেষণা এবং গবেষণালব্ধ যেসব জ্ঞান সেটা মানুষের কাজে যেন ব্যবহার হয় এটা সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বিজ্ঞান শিক্ষায় আরেকটি বিষয় লক্ষ্য করেছিলাম যে, স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিজ্ঞান পড়ার কোনো আগ্রহই ছিল না তখন আমরা ১২টা বিশ্ববিদ্যালয় করার পরিকল্পনা নেই আর এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নাম দেয়া হয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। আমার উদ্দেশ্য ছিল যে এই নামটা দিলে আমাদের ছেলেমেয়েরা তাহলে বিজ্ঞান পড়ার দিকে আগ্রহী হবে প্রযুক্তি শিক্ষার দিকে আগ্রহী হবে। পাশাপাশি প্রতিটি ক্ষেত্রে গবেষণা একান্ত দরকার।’
এ সময় বহুল প্রচলিত ও পরিচিত শব্দের ব্যবহারে উদার হতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিজ্ঞান গবেষণা এবং গবেষণালব্ধ জ্ঞান যেন মানুষের কাজে ব্যবহার হয়, এটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বিজ্ঞানের আবিষ্কার ও বৈজ্ঞানিক শব্দগুলো দুর্বোধ্য না করে ফেলা ভালো। বহুল পরিচিত ও প্রচলিত শব্দগুলো আমাদের ভাষায় ব্যবহার করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কনটেন্টের বাংলা আধেয়। সবাই কনটেন্টই বেশি ব্যবহার করে এবং চেনে। আধেয় জানে না। আমি মনে করি, যে শব্দগুলো বহুল প্রচলিত এবং আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত, সেগুলো যে ভাষায় আসুক, সে ভাষায় আমাদের ব্যবহার করা উচিত। ওটারও পরিভাষা ব্যবহার করতে গিয়ে কোনো কিছুই বুঝবো না, এটা যেন না হয়। রক্ষণশীল না হয়ে প্রচলিত শব্দগুলো দিয়েই বিজ্ঞান শিক্ষার ব্যবস্থা করতেও পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। সুত্রঃ বার্তা২৪.কম