গ্রামবাংলার চিরচেনা তুঁত ফল একসময় মানুষের জনপ্রিয় খাবার ছিলো। কিন্ত ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা হারিয়েছে সেই ফলটি। এখন রেশম পোকার খাদ্যের জন্য রোপন করা হচ্ছে এই তুঁত ফলের গাছ। আর গাছের পাতা খাচ্ছে সেইসব পোকা।
সম্প্রতি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার মীরগঞ্জ-সোনারায় মেঠো পথে দেখা গেছে তুঁত গাছের চিত্র। এ রাস্তার দুই ধারে সারি সারিবদ্ধভাবে প্রায় ৯০০ গাছ দাঁড়িয়ে রয়েছে। বাংলাদেশ রেশম উন্নয়ন বোর্ডের একটি প্রকল্প কর্তৃক রেশম পোকা খাদ্যের জন্য এই গাছগুলো রোপন করা হয় । এ থেকে মানুষের ফল খাওয়া নয়, ওইসব পোকার মাধ্যমে উৎপাদন করা হবে রেশমী সুতা।
স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তিরা জানান, এইসব গাছের ফল একসময় মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয় খাবার ছিলো। খেতে সুস্বাদু, টক ও হালকা মিষ্টি। তবে কালের বিবর্তনে গাছটি তেমন একটা চোখে পড়ে না। চিরচেনা এই তুঁত ফল দেখতে যেমন আকর্ষণীয় তেমনি মানবদেহে উপকারীও বটে। বর্তমানে তুঁত গাছ মূলত রোপণ করা হয় রেশমের জন্য। এই গাছের পাতা দিয়ে রেশম পোকা চাষ করা হয়। পরিপক্ব গাছে ফল ধরলেও সেটির বাজার বা অর্থনৈতিক কোন গুরুত্ব নেই। কৃষি বিভাগের তথ্যমতে এই ফল মানুষেরও খাদ্যে হলেও নেই খাদ্য শস্যের তালিকায়। এই তুঁত ফলের রয়েছে নানান গুণ।
রেশম পোকা পালনকারী আকবর হোসেন বলেন, সাদা তুঁত, কালো তুঁত ও লাল তুঁত- এই তিন প্রজাতির গাছের ওপর নির্ভর করে রেশম পোকার চাষ করা হয়। সাদা তুঁত গাছই রেশম পোকার সবচেয়ে পছন্দের। তিনি আরও বলেন, রেশম পোকার খাবারের জন্য তুঁত গাছের পাতা উৎপাদন করে থাকি। তবে গাছে যে তুঁত ফলগুলো হয় সেগুলো পাকলে পাখি খায়, স্থানীয় ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরাও খায়।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রাশিদুল কবির জানান, বাংলাদেশে তুঁত গাছ মূলত রেশমের গুটি উৎপাদনের কাজে ব্যবহার করা হয়। তুঁত ফল অনেকেই খেয়ে থাকেন। তবে এটি বাংলাদেশের খাদ্য শস্যের তালিকায় নেই।
© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | জাগো২৪.নেট