শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৪৪ অপরাহ্ন

সোঁতিজাল বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার, কৃষকের আবাদ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা

মনসুর আলম খোকন, করেসপন্ডেন্ট, জাগো২৪.নেট, সাঁথিয়া (পাবনা)
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২২

পাবনার সাঁথিয়ায় পাউবো’র পানি নিষ্কাশন খালে অবৈধভাবে বাঁশের বেড়া ও সোঁতিজাল দিয়ে মাছ শিকার করায় বিলের পানিপ্রবাহের গতিকে বাধা সৃষ্টি করছে। যার ফলে বিলের পানি বের হচ্ছে মন্থর গতিতে। এতে কৃষকের বীজতলা তৈরিসহ রবি মৌসুমে হাজার হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ, মরিচ, রসুন, শরিষার আবাদ ব্যাহত হওয়ার আশংকা করছেন এলাকাবাসী। এ সব ক্যানালে সুতিজালের বাধের জন্য পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় কমছে না প্রায় ১৬টি বিলের পানি।

অভিযোগে জানা যায়,বেড়ার কৈটোলা পাম্প হাউজ হতে মুক্তোর ধর পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাগেশ্বরী নদীর-ডি-২ সেচখালের প্রায় ৩০ কিলোমিটার পানি নিস্কাশন ক্যানাল রয়েছে। এ ক্যানাল দিয়ে বর্ষা শেষে সাঁথিয়াÑবেড়ার প্রায় ২০টি বিলের পানি নিস্কাশন হয়। কাকেশ্বরী নদীর-ডি-২ পানি নিষ্কাশন সেচ খালটির উপর উপজেলার করমজা ইউনিয়নের শামুকজানি বাজারের দক্ষিণে ও দত্তপাড়া গ্রামের পশ্চিমে বড়গ্রাম মাঠের ভিটা নামক স্থানে পর পর কয়েক জায়গায় বাঁশের বেড়া ও সোঁতি জাল দিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে। কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,কাকেশ^রী নদীর এই খাল দিয়ে উপজেলার বড়গ্রাম ,গোপিনাথপুর ও ঘুঘুদহ মৌজার আইরেদহের বিল, টেঙরাগাড়ির বিল,ঘুঘুদহ বড় ও ছোট বিল, মুক্তোর ধর, সোনাই বিল, জামাই দহ, খোলসাখালি বিল, কাটিয়াদহ বিল ও গাঙভাঙ্গার বিলসহ অন্তÍত ১৬টি বিলের পানি নিস্কাশন হয়। কিন্ত পানি নিষ্কাশন সেচ খালটির ওপড় সোঁতিজালের বাঁধ দেওয়ায় পানিপ্রবাহ বিঘিœত হচ্ছে। ইতোমধ্যে চলতি আমন মৌসুমে জমিতে কিছুটা ধান পাকা শুরু হয়েছে। এছাড়া জমি জলাবদ্ধ থাকলে রবি মৌসুমে পেঁয়াজ, রসুন,গম, জব,খেসারি,কালাই ও শরিষার আবাদ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকার কৃষকেরা। তারা বলেন, এসব ফসল যথাসময়ে বপণ করতে না পারলে তারা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। ইতোমধ্যে চলতি আমন মৌসুমে জমিতে ধান পাকতে শুরু হয়েছে। আবার অনেকের ধান পেকে যাওয়ায় কাটতে শুরু করেছে। জমিতে অতিরিক্ত পানি থাকায় যথা সময়ে ধান কাটতে না পারলে জমিতে থাকা পাকা ধান পানিতে নষ্ট হয়ে যাবে বলে আশংকা তাদের।

আফড়া চরপাড়া মহল্লার কৃষক জানে আলম সরদার ও রইজ উদ্দিন খাঁ বলেন, বিলে আমাদের ১৫/১৬ বিগে জমিতে আমন দান আছে, দান কাইট্যে পিঁজ,গম,শরিষার আবাদ করবো। যদি সোঁতির কারণে বিলির পানি আটক্যে থাকে তাহলি আমাগরে পিঁজির দানা চারা,মূলকাটা পিঁজ লাগানো ক্ষতি অয়া যাবি।

সাঁথিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সঞ্জীব কুমার গোস্বামী বলেন,আমি এ ব্যাপারে মৌখিকভাবে কৃষকদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। লিখিতভাবে উপজেলা প্রশাসন,মৎস্য অফিস এবং আমার অফিস বরাবর অভিযোগ দিতে বলেছি। সোঁতিজালের কারণে পানি প্রবাহ বাঁধাগ্রস্ত হলে আমন ধান কাটতে বিলম্বিত হবে।

সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন বলেন,এ বিষয়ে আমি অবগত নই বা কেউ আমাদেরকে জানায়নি। কেউ যদি এ ব্যাপারে আমাদেরকে জানায় যে সোঁতিজাল দিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে, তাহলে আমি অপসারণের জন্য আইনানুগ ব্যবস্থা নিব।

এ দিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড এর নির্বাহী প্রকৌশলী শুধাংশ কুমার সরকার বলেন, আমি খবর পাওয়ার পর পরই বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর চিঠি দিয়েছি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার। তাঁর অনুলিপি, উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশকে দিয়েছি।

তিনি বলেন, কৃষকের ক্ষতি হবে আমরা এমনটা মেনে নিব না। প্রয়োজনে সরেজমিন পরিদর্শন করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | জাগো২৪.নেট

কারিগরি সহায়তায় : শাহরিয়ার হোসাইন