তোফায়েল হোসেন জাকির: ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে গাইবান্ধার বিভিন্ন কোরবানির পশুর হাটগুলো জমে উঠেছে। প্রতিটি হাট বাজারে প্রচুর পরিমাণে গরু-ছাগল আমদানি দেখা গেছে। তবে এসব হাটগুলোতে বেড়েছে দালালের দৌরাত্ন্য। এদের খপ্পড়ে পড়ে ঠকছেন বলে জানিয়েছে ক্রেতা-বিক্রেতারা।
গাইবান্ধা জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সুত্রে জানা যায়, কোরবানি উপলক্ষ্যে জেলায় ২৫ টি স্থায়ী ও ১৬ টি অস্থায়ী পশুর হাটসহ অনলাইনের মাধ্যমে আরও ৮টি প্ল্যাটফর্মে পশু কেনাবেচা হচ্ছে। বিশেষ করে লক্ষীপুর, দাড়িয়াপুর, ভরতখালি সাদুল্লাপুর, ধাপেরহাট ও মাঠেরহাটসহ আরও বিভিন্ন হাটে বসানো হয়েছে বিশাল পশুর হাট। এসব হাটে কোরবানিযোগ্য পশুর মধ্যে বলদ, ষাঁড়, মহিষ, গাভী, ছাগল ও ভেড়া কেনা-বেচা শুরু হয়েছে।
এছাড়া সাঘাটা উপজেলায় নিয়মিত এবং মৌসুমীসহ প্রায় ৬টি হাটে প্রচুর পরিমাণে দেশি-বিদেশি, ছোট-বড় গরু-ছাগল আমদানী ও বেচা-কেনা হচ্ছে। বছরব্যাপী গরু পালনকারী খামারীরা এসব হাটে প্রচুর পরিমাণে কোরবানির পশু বিক্রি করছে। ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী ও আর্থিকভাবে সচ্ছল ব্যক্তিরা কোরবানির জন্য শেষ মূহুর্তে পচ্ছন্দের গরু-ছাগল ক্রয় করতে হাট-বাজারগুলোতে ভিড় করছেন। ঈদের কয়েকদিন বাকি থাকায় ঢাকা, চট্রগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলা হতে পাইকারেরা হাটে ভিড় করলেও গো-খাদ্যের দাম ও গাড়ি ভাড়া কয়েকগুণ বেশী হওয়ায় চাহিদা অনুযায়ী গরুর দাম বেশি পড়ায় লোকসানের আশঙ্কায় পাইকারদের।
এদিকে, প্রতিহাটে দালাল ও ফড়িয়া মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ে ঠকছেন। এইসব দালালের দাপটে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছেন তারা। হাটে আসা দালালরা মালিকদের সঙ্গে রফাদফা করে পশু হাতে নেন। ওই দামের চেয়ে বেশী বিক্রিত টাকা ঢুকছে দালালদের পকেটে।
দাড়িয়াপুর হাটে আসা খাদেমুল ইসলাম নামের এক ক্রেতা বলেন, দালাল ছাড়া হাটে পশু কেনা কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তাদের সঙ্গে চুক্তি করে পশু কিনতে হয়।
ভরতখালি হাটের বিক্রেতার খাজানুর রহমান বলেন, হাটে আসার সাথেই দালালদের সঙ্গে রফাদফা ছাড়া পশু বিক্রি করা সম্ভব নয়। তাই তাদের কমিশন দিয়েই গরু বিক্রি করতে হয়। এতে করে আমার ক্ষতি হয়েছে।
খামারি আনছার আলী জানান, গো-খাদ্যের দাম বেশী হওয়ায় গরু পালনে বেড়ে গেছে। একারণে ন্যায্য দামে বিক্রি করতে না পারলে এবার খামারিদেকে লোকসান গুণতে হবে।
এদিকে দুর্বৃত্তরা জাল টাকা ছড়িয়ে দিয়ে যেন সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করতে না পারে সেজন্য হাট কমিটির লোকজন ও পুলিশ তৎপর রয়েছে বলে জানান গাইবান্ধা পুলিশ সুপার কামাল হোসেন।
গাইবান্ধা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান সরকার জানান, জেলায় ১৫ হাজার ৮২১টি খামারসহ অন্যান্যভাবে ১ লাখ ৩৮ হাজার ২৭৭টি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। আর কোরবানির চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ১৬ হাজার ৭৭০টি পশু।
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে কোরবানি পশুর হাট জমে ওঠেছে। বিক্রয়যোগ্য হাটগুলোতে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য মেডিকেল দল রয়েছে। আশা করছি, স্থানীয় চাহিদা মিটিয়েও দেশের বিভিন্ন জায়গা কোরবানি পশুর চাহিদা পূরণে সহায়ক ভূমিক রাখবে।
তোফায়েল হোসেন জাকির, জাগো২৪.নেট 























