দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে মোজাহিদুল ইসলাম (১৪) নামে এক শিবিরকর্মীকে হত্যার ঘটনায় দিনাজপুর-৪ (খানসামা-চিরিরবন্দর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীসহ আওয়ামী লীগের ৩৯ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। এ মামলায় আরও অজ্ঞাতনামা ৩-৪শ জনকে আসামী করা হয়েছে।
নিহত কিশোর মোজাহিদুল ইসলাম খানসামা উপজেলার গোয়ালডিহি ইউনিয়নের সাঁকোরপাড় এলাকার বেশার পণ্ডিতপাড়া এলাকার জামায়াতে ইসলামির খানসামা উপজেলা শাখার সাবেক আমীর আতাউর রহমানের ছেলে।
গত ১২ অক্টোবর শনিবার দুপুরে নিহতের বড়ভাই নাজমুজ শাহাদাত বিপ্লব বাদী হয়ে চিরিরবন্দর থানায় এ হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার আসামীরা হলেন- সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, তার ভাই শামীম হাসান, খানসামা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সফিউল আযম চৌধুরী লায়ন, চিরিরবন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান তারিকুল ইসলাম তারিক, চিরিরবন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ আহসানুল হক মুকুল, আওয়ামী লীগ নেতা রফিকুল ইসলাম, শাফিয়ার রহমান, নুর ইসলাম নুরু, গোলাম আজম পারভেজ, আবু হান্নান মো. সাদেক ছোটন, আজিমউদ্দিন সরকার গোলাপ, মোসলেমউদ্দিন, সাবেক অর্থমন্ত্রীর এপিএস শাহ সালাউদ্দিন, আব্দুল মজিদ, সুলতান আলমসহ ৩৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১২ সালের ৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি সারাদেশে হরতাল ও মিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করে। এর আগের দিন সন্ধ্যায় হরতালের সমর্থনে চিরিরবন্দর উপজেলার রানীরবন্দরে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা একটি মিছিল বের করে। মিছিলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বাঁধা দেয় ও লাঠিসোডা, ইটপাটকেল, দেশিয় আগ্নেয়াস্ত্রসহ অতর্কিত হামলা চালায়। হামলায় গুরুতর আহত হন শিবিরকর্মী মোজাহিদুল ইসলাম। পরে ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে রমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় ওইদিন দিবাগত রাত ১২টায় তার মৃত্যু ঘটে। রমেক হাসপাতাল মর্গে নিহত মোজাহিদুল ইসলামেরর ময়নাতদন্ত হয়। এ ঘটনায় রংপুর কোতয়ালী থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়।
মামলার বাদী নাজমুজ শাহাদাত বিপ্লব বলেন, তাঁদের পিতা জামায়াতে ইসলামির খানসামা উপজেলার সাবেক আমির ছিলেন। তিনি নিজেও চিরিরবন্দর উপজেলার রানীরবন্দরের ইছামতি ডিগ্রি কলেজ শাখা শিবিরের সাবেক সভাপতি। তাঁর ভাই মোজাহিদুল ইসলাম শিবিরের একজন কর্মী ছিল। এতদিন মামলা দায়ের না করা প্রসঙ্গে বলেন, আসামীরা প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে আসছিলেন। ভাই হত্যার ন্যায় বিচার না পেয়ে উল্টো তাঁর নামে বিভিন্ন সময় ৩২টি এবং তাঁর বাবার নামেও ২৮টি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনি তাঁর ভাইয়ের মৃত্যুর ঘটনায় ন্যায় বিচার আশা করছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চিরিরবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত খান বলেন, ২০১২ সালে এক কিশোর নিহত হওয়ার ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে
তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।